ভারতের ‘সোলার' মায়েদের কথা
৩০ জানুয়ারি ২০১৯কেনিয়ার নাওমি এনডুঙ্গুকে তাঁর গ্রাম থেকে এই প্রশিক্ষণে অংশ নিতে পাঠানো হয়েছে৷ তাঁর গ্রামে এখনও বিদ্যুৎ যায়নি৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি আমার সম্প্রদায়কে আলোকিত করবো৷ কারণ আমরা জানি, অন্ধকার কোনো ভালো জিনিস নয়৷ তাই পুরো গ্রামে আলো আনতে পারলে সেটা আমার বড় অর্জন হবে৷''
এনডুঙ্গু বলেন, সন্ধ্যা নামার পর তাঁদের গ্রামে কেউ সেলাই কিংবা লেখার কাজ করতে পারে না৷ এছাড়া অন্ধকারে কিংবা মোমবাতি জ্বালিয়ে কাপড় কাটার বিষয়টিও বিপজ্জনক৷
প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নারীরা সোলার প্যানেল বসানো ও মেরামতের বিষয়টি শিখতে পারছেন৷
আরেক প্রশিক্ষণার্থী ইয়ুমিনা ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম তিমুর থেকে এসেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আলো ছাড়া আমার সন্তানরা বাড়ির কাজ করতে পারে না৷ তাই সন্ধ্যা হলে তাদের ঘুমিয়ে পড়তে হয়৷ এখান থেকে যখন বাড়ি ফিরবো, তখন আমাদের সোলার বাতি থাকবে৷''
যাঁরা প্রশিক্ষণ দেন তাঁরা ‘সোলার মা' হিসেবে পরিচিত৷ তাঁদের একজন লীলা দেবী ২০০৩ সাল থেকে কাজ করছেন৷ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নারীদের তিনি প্রশিক্ষণ দেন৷ তিনি বলেন,‘‘গ্রিড থেকে পাওয়া বিদ্যুৎ যে-কোনো সময় চলে যেতে পারে৷কিন্তু সৌরশক্তি নির্ভরযোগ্য৷সূর্য দেবতা সবাইকে আলো দেন৷ এক্ষেত্রে তিনি ধনী-গরিবে ভেদাভেদ করেন না৷ কিন্তু আপনি যদি বিদ্যুৎ বিল না দেন, তাহলে লাইন কেটে দেয়া হয়৷ অথচ একবার সোলার বাতি কিনে আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন৷''
আফ্রিকাতেও এমন কর্মসূচি আছে৷ উগান্ডায় সোলার মায়ের পরিবর্তে আছেন ‘সোলার বোন'৷ তাঁরা সোলার লাইটিং সিস্টেম বিক্রি করেন আর সৌরশক্তি দিয়ে কীভাবে অর্থ করতে হয়, সে ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেন৷ বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে যন্ত্রপাতি বিক্রি করে তাঁরা জীবিকা নির্বাহ করেন৷
প্রায় সাড়ে তিন হাজার সোলার বোন প্রায় আড়াই লক্ষ সোলার বাতি বিক্রি করেছেন৷ ফলে প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ আলোর দেখা পেয়েছেন৷
প্রশিক্ষণ শেষে ইসাবেল মোরা খিমেনেস তাঁর দেশ মেক্সিকোতে ফিরে যাবেন৷ তারপর ভারত থেকে শেখা জ্ঞান তিনি কীভাবে কাজে লাগাবেন, সেটা ভেবে দেখবেন৷ খিমেনেস বলেন, ‘‘আমি কত আয় করতে পারবো, তা জানি না৷ তবে আসল কথা হচ্ছে, আমি অনেক কিছু শিখেছি৷ দেশের মানুষ দেখবে যে, আমি ভালো কাজ করতে পারি৷ নতুন কিছু শিখতে এখানে আসার জন্য আমাকে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে৷''
ইওয়াখিম এগার্স/জেডএইচ