ভালোবাসার ভ্রমণ
ভালোবেসে তাজমহল বানানোর নজির অনেক পুরানো৷ দিন বদলেছে৷ তাই কোনো স্থাপনায় না গিয়ে জীবন উপভোগটাই অনেকের জন্য ভালোবাসা দিবসের মূল উপজীব্য৷ তাহলে আর দেরি কেন, ভালোবেসে কোথায় কোথায় ঘুরবেন জেনে নিন...
শিন নদীর তীরে
মাইকেল মধুসূদন দত্ত ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতাটি লিখেছেন শিন নদীর তীরে৷ তাই বাঙালির এই নদীটির সঙ্গে অনেক আগে থেকেই পরিচিত৷ ভালোবেসে এই নদীর তীর ধরে হেঁটে বেড়াতে পারেন৷ এই নদীতে ৩৭টি সেতু গড়েছেন প্যারিসের নগরকর্তারা৷ প্রতিটি ব্রিজ পাড়ি দেবার সময় একটি করে প্রতিজ্ঞা করে ফেলুন, ব্যাস ৩৭ বছর এতেই কেটে যাবে৷
রোমে কয়েন ফেলুন
রোমের জনপ্রিয় কৃত্রিম ঝর্ণায় পয়সা ফেলুন৷ বলা হয়ে থাকে, রোম এক শ্বাশ্বত শহর৷ আর এই শহরে ইচ্ছা পূরণ হয়৷ সেই শহরের ঝর্ণায় তিনটি পয়সা ফেললে আপনার প্রেমিকার সঙ্গেই জোর বাঁধতে পারবেন৷ তবে হ্যাঁ, প্রেমিকা পয়সা ফেললে কিন্তু প্রেমিককে সেটি তুলে এনে ভালোবাসার জোর প্রমাণ করতে হবে৷ শীতকালে একটু বুঝে শুনেই নামা উচিত৷ নইলে ‘লা ডলসে ভিটা’ ছবির নায়িকা আনিতার মতো ঠকঠক করে কাঁপতে হবে৷
রেকজাভিকের উষ্ণ প্রসবণে স্নান
ভালোবেসে ঠান্ডা পানিতে কয়েন তোলার পরপরই আইসল্যান্ডের রাজধানী রেকজাভিকের উষ্ণ প্রসবণে স্নান সেরে নিতে পারেন৷ একলা যাবেন না, সঙ্গের সাথী যেন থাকে এই স্নানে৷ নীল সেই প্রাকৃতিক হ্রদ দেহ-হৃদয়ে প্রশান্তি আনবে নিশ্চিত৷
লিসবনে হারিয়ে যান
পর্তুগালের রাজধানী লিসবনের শতবর্ষী তিনটি ট্রেনে চেপে দু’জনে মিলে হারিয়ে যেতে পারেন৷ হারিয়ে কোথায় যাবেন, সে বিষয়ে প্রশ্ন থাকলে লেখিকা প্যাসকেল মার্সিয়ার ‘নাইট ট্রেন টু লিসবন’ পড়ে নিতে পারেন৷
আল্পস পর্বতে হাতে হাত রাখুন
‘‘যদি হিমালয় আল্পসের সমস্ত বরফ গলেও যায়, তবুও তুমি আমার’’- জনপ্রিয় এই গানটি মনে আছে তো? তবে উষ্ণ জলবায়ুর কারণে এমনিই বরফ গলছে৷ ভালোবাসা প্রমাণে গলানো যাবে না৷ তাই পর্বত ঘিরে গড়ে ওঠা আল্পসপিক্স প্লাটফর্মে দুই হাজার মিটার উপরে উঠে হাত ধরুন সঙ্গীর৷ ভালোবাসার শীতলতা কেটে যাবে নিশ্চিত৷
তালায় আটকে দিন ভালোবাসাকে
ভালোবাসা আর নদী, একে অপরের সঙ্গে ভীষণ সম্পর্কিত৷ তাই দেরি না করে ফ্রাঙ্কফুর্টের মাইন নদীর সেতুর ওপর চলে যান৷ নিজেদের নাম করে একটি তালা লাগিয়ে অমর করুন ভালোবাসাকে৷ শত বছর পরেও তালার ওপরে নাম আর তারিখ দেখে কেউ আপনাদের ভালোবাসাকে স্মরণ করবে৷ হয়তো গল্পও লিখবে কেউ৷
ভিয়েনার ঘোড়াগাড়িতে
অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনার ঘোড়াগাড়িগুলো নাকি প্রেমিক যুগলদের জন্যই তৈরি৷ তাই ভালোবাসা দিবসের শুরুতেই সঙ্গীকে নিয়ে চলে যান ভিয়েনা শহরে৷ সেখানে ঘোড়ার গাড়ি চেপে শনব্রান প্রাসাদে৷ সেখানকার বিনোদন পার্ক ফেরিস হুইলেও ঘুরতে পারেন৷ সন্ধ্যার আগে আগে সেন্ট স্টিফেন ক্যাথেড্রালে গিয়ে নিয়ে নিন যাজকের আশীর্বাদ৷ ভালোবাসার মানুষদের জন্য সেখানে বিশেষ প্রার্থনা হয়৷
টেমস নদীর ঘূর্ণিতে
ভালোবাসা দিবসে লন্ডনে হাজারো গোলাপ আর প্রেমের চিঠি চালাচালি হয়৷ কিন্তু নদীর ঘূর্ণিতে ঘোরার সুযোগ থাকলে নিশ্চয় এটাই করবেন? টেমসের ওপরের সবচেয়ে বড় ফেরিস হুইল লন্ডন আই-তে চেপে ৪৭ ইউরো খরচ করে নদী দেখতে দেখতে শ্যাম্পেন পান করতে পারেন৷
ট্যাঙ্গো নাচুন
ভালোবাসার মানুষের গায়ে পানি ছিঁটিয়ে কাছে আসার একটি রীতি বাংলাদেশের আদিবাসীদের মধ্যে রয়েছে৷ আর আর্জেন্টিনা কিংবা ফিনল্যান্ডের রীতি হচ্ছে নেচে কাছে আসতে হবে৷ প্রাচীন এই নাচের রীতিটি ট্যাঙ্গো বলে পরিচিত৷ ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিঙ্কিতে গিয়ে ট্যাঙ্গো নেচে আরেকটু কাছে আসতে পারেন সঙ্গীর৷
ভেনিসের একটি রাত
রাতের ভেনিস নিয়ে অনেক গল্প আছে৷ ভালোবাসাকে আরো গভীর করতে ইটালির ভেনিস বন্দরনগরীতে চলে যান৷ ভালোবাসার মানুষটির সঙ্গে রাতব্যাপী কাটান জলের ওপর৷ নীল হ্রদে ঘেরা শহরের এই প্রান্ত থেকে ঐ প্রান্তে ঘুরে বেড়ান৷ মনে রাখার মতো একটি রাত হবে ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে৷