ভাষা আন্দোলনের ৭১-এ শহিদ স্মরণ
শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভাষার প্রতি ভালোবাসায় ভাষা আন্দোলনের ৭১ বছর পালন করেছে বাংলাদেশ৷ ঢাকার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জড়ো হন নানা পেশা ও বয়সের মানুষ৷ দেখুন ছবিঘরে...
আ মরি বাংলা ভাষা
পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা করতে চাইলে বাংলাদেশের মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়ে৷ ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ১৪৪ ধারা অমান্য করলে পুলিশ গুলি ছোঁড়ে৷ নিহত হন সালাম, বরকত, জব্বার, রফিক প্রমুখ৷
একুশের প্রথম প্রহর
একুশে ফেব্রুয়ারি রাত ১২:০১ মিনিটে শহিদ মিনারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন৷ এরপরে বিভিন্ন বাহিনীর প্রধানগণ পুষ্পমাল্য দিয়ে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন৷
অপেক্ষা
ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আগের দিন সন্ধ্যা থেকেই শহিদ মিনার এলাকায় জড়ো হতে থাকেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ৷ প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষ হলে তারা শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে যেতে পারেন৷
ফুলের দোকানে ভিড়
একুশে ফেব্রুয়ারিকে কেন্দ্র করে ঢাকার অন্যতম ফুলের বাজার শাহবাগের দোকানগুলোতে প্রস্তুতি শুরু হয় এক সপ্তাহ আগে থেকেই৷ তবে এবার ফুলের দাম অস্বাভাবিক বেশি বলে জানিয়েছেন ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা৷
গন্তব্য শহিদ মিনার
একুশে ফেব্রুয়ারির আগের রাত থেকে শুরু করে ঢাকার সব রাস্তা যেন এসে মিশেছে এক পথে৷ ভোরের আলো ফোটার পর প্রভাতফেরিতে অংশ নিতে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ছুটে আসেন অনেক মানুষ৷ সাদা-কালো পোশাক আর বর্ণিল ফুলে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসেন তারা৷
উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা
বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা ব্যানার ও ফুল নিয়ে আসেন শহিদ মিনারে৷ ১৯৯৯ সালে এ দিনটিকে ইউনেস্কো ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’এর স্বীকৃতি প্রদান করে৷
গানে ও স্লোগানে
প্রয়াত আবদুল গাফফার চৌধুরীর লেখা ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/ আমি কি ভুলিতে পারি...' এই দিনটির সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য হয়ে আছে৷ শহিদ মিনারের পথে মানুষের গানে আর দেয়ালে দেয়ালে স্লোগানে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে৷
দেয়াল লিখন
একুশে ফেব্রুয়ারি ঘিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ও শহিদ মিনারের পথ সাজে বর্ণমালা আর আলপনার নানা রঙে৷ দেয়ালে শোভা পায় একুশ নিয়ে লেখা কবিতার নানা পংক্তি৷
‘এপার-ওপার ভেদাভেদ করি না’
ভারতের কোলকাতার শিয়ালদহ থেকে ‘যাত্রিক’ নামের একটি সংগঠনের ৩০ জন কর্মী এসেছেন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে৷ তাদের একজন ডঃ চঞ্চল কুমার বলেন, “আমরা এপার-ওপার ভেদাভেদ করি না, আমরা সবাই বাঙালি৷ আমরা যারা বাংলা ভাষাভাষি মানুষ আছি, এ দিনটি আমাদের সবার জন্যই আনন্দের৷’’
সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা
শহিদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে উদযাপনে শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে ছুটে আসেন শিক্ষক, চিকিৎসক, সাংবাদিক, রাজনৈতিক, ব্যবসায়ী, শ্রমিক, সুধীজনসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষ৷
‘অবিশ্বাস্য!’
যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশে ঘুরতে এসেছেন ভ্রমণপিপাসু ও ব্লগার ক্যারি প্যাটসালিস৷ শহিদ মিনারে এসে আবেগে আপ্লুত হয়ে বলেন, “সাধারণ মানুষের ভাষার জন্য এই ভালোবাসা অবিশ্বাস্য৷ আমি নিজেও এখান থেকে অনেক কিছু শিখছি, সবার সাথে দিনটির আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারছি৷ এটি সত্যিই এক অভাবনীয় অনুভূতি৷ ধন্যবাদ বাংলাদেশ৷’’
প্রথমবার শহিদ মিনারে
বর্ণমালার পতাকা হাতে বাবা-মায়ের সাথে প্রথমবারের মতো শহিদ মিনারে এসেছে আফরা আহমেদ৷ এত মানুষ দেখে প্রথমে কিছুটা সংকোচে থাকলেও পরে আয়োজন উপভোগ করছে বলে জানান আফরার বাবা সুমন আহমেদ৷
চিরপ্রেরণার অমর একুশে
হাতে হাতে ফুলের স্তবক, কণ্ঠে চির অম্লান গান, ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/আমি কি ভুলিতে পারি...’৷ ভাষা শহিদদের প্রতি নিবেদিত শ্রদ্ধার ফুলে ঢেকে যায় শহিদ মিনারের বেদি৷
বেদিতে ফুলেল আলপনা
দিন যত গড়ায় তত ফুলে ফুলে ভরে শহিদ মিনারের বেদি৷ সেসব ফুল দিয়ে পরে আলপনা ফুটিয়ে তোলেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর এবং রোভার স্কাউটের সদস্যরা৷
ট্রাফিক নির্দেশনা
ভাষা শহিদদের স্মরণ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে শহিদ মিনার এলাকায় যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়৷ সাধারণ জনগণের সুবিধার্থে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সাতদিন আগেই ট্রাফিক নির্দেশনা প্রদান করে৷