ভূমধ্যসাগরে শতাধিক শরণার্থীর মৃত্যুর আশঙ্কা
২০ জানুয়ারি ২০১৯ইটালিয়ান নৌবাহিনী শুক্রবারে ডুবে যাওয়া একটি নৌকায় থাকা তিন জনকে উদ্ধার করতে পেরেছে৷ উদ্ধার হওয়াদের কাছ থেকে জানা গেছে, নৌকাটিতে ১২০ জন যাত্রী ছিলেন৷ বিশিরভাগ যাত্রীই পশ্চিম আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের অধিবাসী ছিলেন বলে জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল অরগানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম)৷
লিবিয়ার গাসর গারাবুল্লি থেকে বৃহস্পতিবার ছেড়ে আসে নৌকাটি৷ ১০-১২ ঘণ্টা চলার পর ডুবতে শুরু করে নৌকা৷ আইওএমের মুখপাত্র ফ্লাভিও ডি জিয়াচ্চিনো জানিয়েছেন, নৌকায় ১০ জন নারী ও দুই শিশুও ছিল৷
উদ্ধার হওয়া তিনজনকে ইটালির দ্বীপ লাম্পেদুসায় হাইপোথার্মিয়ার চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে৷ দেশটির নৌবাহিনী জানিয়েছে, এই তিন জনকে উদ্ধারের সময় তারা সাগরে তিনটি মরদেহ ভাসতে দেখেছে৷
ব্যর্থ অভিযান
ইটালিয়ান নৌবাহিনীর একটি টহলবিমান শুক্রবার নৌকাটিকে ডুবতে দেখে৷ দেশটির রাইনিউজ টোয়েন্টিফোরকে রিয়ার অ্যাডমিরাল ফাবিও আগোস্টিনি জানিয়েছেন, জ্বালানি একেবারে শেষের দিকে থাকায় বিমানটি উদ্ধার তৎপরতা না চালিয়ে ফেরত আসতে বাধ্য হয়৷
লিবিয়াও উদ্ধারকাজে একটি বাণিজ্যিক জাহাজ পাঠিয়েছিল৷ কিন্তু কাউকে খুঁজে না পেয়ে সেটি ফেরত যায়৷
জার্মান সহায়তা সংস্থা সি ওয়াচ শনিবার ৪৭ শরণার্থীকে উদ্ধারের কথা জানিয়েছে৷ কিন্তু তাঁরা ডুবে যাওয়া নৌকাটিতেই ছিলেন কিনা, তা না জানার কথাও জানিয়েছে সংস্থাটি৷
মরক্কোর নৌকাডুবি
মরক্কো থেকে ছেড়ে আসা আরেকটি নৌকা ডুবে আরো ৫৩ অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যুর শঙ্কা করা হচ্ছে৷ নৌকাটি থেকে উদ্ধার হওয়া এক শরণার্থী এ তথ্য জানিয়েছেন স্পেনের সহায়তা সংস্থা কামিনান্দো ফ্রন্টিয়ার্সকে৷ তিনি জানান, আলবোরান সাগরে অন্য একটি জাহাজের সাথে ধাক্কা লেগে ডুবতে শুরু করে সে নৌকা৷
ইটালির প্রেসিডেন্ট সার্জিও মাতারেল্লা ‘ভূমধ্যসাগরে ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ' করেছেন৷
প্রধানমন্ত্রী কন্টে জানিয়ছেন, এ ঘটনায় তিনি দুঃখ পেয়েছেন৷ পাশপাশি উত্তর আফ্রিকার মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে তাঁর দেশের যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন৷
তবে ইটালির শরণার্থীবিরোধী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও সালভিনি বলেছেন, শরণার্থীবাহী নৌকা প্রতিহত করার নীতি যে কাজ করছে, এই মৃত্যুর ঘটনা তার ‘প্রমাণ'৷ তিনি বলেন, ‘‘বন্দরগুলো খুলে দিলে এমন মৃত্যুর ঘটনা আরো বাড়বে৷''
আইওএমের হিসাব মতে, ২০১৯ সালের প্রথম ১৬ দিনে ইউরোপে ৪৪৪৯ জন শরণার্থী প্রবেশ করেছেন৷ গত বছর একই সময়ে এ সংখ্যা ছিল ২৯৬৪ জন৷
সংস্থাটি গত বছর জানিয়েছিল, ১১৬,৯৫৯ জন শরণার্থী সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশ করেছিল, আর ভূমধ্যসাগরে নিখোঁজ বা মৃতের সংখ্যা ছিল ২২৯৭ জন৷
এডিকে/ (রয়টার্স, এপি, এএফপি, ডিপিএ)