ভূমিকম্প এবার চৌতারায়
১৩ মে ২০১৫বুধবার সেখানে সরকারি কর্মকর্তারা মাইক হাতে মানুষজনকে সতর্ক করে দিয়েছেন, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর পরিত্যাগ করতে বলেছেন৷ চৌতারার অধিকাংশ বাসিন্দা অবশ্য মঙ্গলবার ভূমিকম্পের পর পরই বাড়ি ছেড়ে খোলা জায়গায় বেরিয়ে এসেছেন, রাত কাটিয়েছেন তাঁবুতে কিংবা প্লাস্টিকে শীটের নীচে৷
অথচ এই চৌতারাই ২৫শে এপ্রিলের বিধ্বংসী ভূমিকম্পের পর ত্রাণকর্মী এবং ত্রাণসাহায্য পাঠানোর একটি কেন্দ্র হয়ে দাঁড়িয়েছিল৷ সেই সঙ্গে আরো দুঃসংবাদ: ইউএস মেরিন কোর-এর একটি হেলিকপ্টার ছ'জন মেরিন সেনা ও দু'জন নেপালি সৈন্য সহ নিখোঁজ হয়েছে৷ কাঠমান্ডুর ৮০ কিলোমিটার উত্তরপূর্বে সুনখানি অঞ্চলে তার খোঁজ চলেছে৷
মঙ্গলবারের ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল কাঠমান্ডু থেকে ৮৩ কিলোমিটার পূর্বে মাউন্ট এভারেস্ট-এর কাছে, ১৫ কিলোমিটার গভীরতায় – যেখানে ২৫শে এপ্রিলের সাত দশমিক নয় শক্তির ভূমিকম্প ঘটেছিল মাটির মাত্র দশ কিলোমিটার নীচে৷ বুধবার সকালের মধ্যে যে ৬৫ জনের মৃত্যুর খবর যাচাই করা সম্ভব হয়েছে, তার অধিকাংশই ঘটেছে দোলাখা জেলায়৷
মঙ্গলবার প্রথম ভূকম্পনের ৩০ মিনিটের মধ্যে ছয় দশমিক তিন শক্তির একটি ‘আফ্টারশক' অনুভূত হয়৷ তার পরে অন্তত ১৭টি কম-বেশি জোরদার আফ্টারশক ঘটেছে৷ সব মিলিয়ে এই ভূমিকম্পে বাস্তবিক প্রাণহানি বা ক্ষয়ক্ষতির কোনো পূর্ণাঙ্গ খতিয়ান এখনই পাওয়া কিংবা দেওয়া সম্ভব নয়, বিশেষ করে যখন হিমালয়ের প্রত্যন্ত এলাকার বহু গ্রাম এখনও ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে রয়েছে৷
নেপালের প্রতিবেশী দেশগুলিতেও সর্বাধুনিক ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে, শুধু অনুভূত নয়, ভারতে বাড়ির ছাদ বা দেয়াল ধসে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৬ জন৷ চীনা সংবাদমাধ্যম তিব্বতে একজনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে৷ তবে মঙ্গলবারের ভূমিকম্পকে স্বভাবতই এপ্রিলের ভূমিকম্পের সঙ্গে তুলনা করা চলে না৷
প্রথমবার প্রায় আট হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা ভূমিকম্পের কবলে পড়ে৷ মঙ্গলবারের ভূমিকম্পে পীড়িত হয়েছিল মাত্র ৬৬০ বর্গকিলোমিটার এলাকা৷ অন্যভাবে বলতে গেলে: এপ্রিলের ভূমিকম্পের কোপে পড়েছিলেন প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ; মঙ্গলবার বিপন্ন মানুষদের সংখ্যা ছিল মাত্র ৬৫ হাজার, কেন না ভূমিকম্প পীড়িত এলাকাটিতে এবার কোনো বড় শহর ছিল না এবং জনবসতিও ছিল অপেক্ষাকৃত কম৷
এসি/ডিজি (এপি, রয়টার্স, পিটিআই)