ভেজাল ওষুধে মৃত্যুর কয়েকটি ঘটনা
নকল, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধের কারণে বিভিন্ন সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিশু সহ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মৃত্যু হয়েছে৷ বাংলাদেশেও এমন ঘটনা ঘটেছে৷
বাংলাদেশে ৭৬ শিশুর মৃত্যু
নব্বইয়ের দশকে ‘ফ্ল্যামোডল’ নামক এক প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে ৭৬ জন শিশুর মৃত্যু হয়৷ ঐ ঘটনায় অ্যাডফ্লেম কোম্পানির বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার রায় হয় ২০১৪ সালে৷ এতে তিনজনকে ১০ বছরের সাজা দেয়া হয়৷ পরের বছর বিসিআই ফার্মা নামে আরেক কোম্পানির পরিচালকসহ (ছবি) ছয় জনকে একই অভিযোগে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়৷ ফ্ল্যামোডল সিরাপে ডাইইথাইলিন গ্লাইকল পাওয়া গিয়েছিল, যা শিল্প কারখানায় রাসায়নিক উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়৷
২৮ শিশুর মৃত্যু, কিন্তু সবাই খালাস
রিড ফার্মা নামে এক ওষুধ প্রস্তুতকারীর তৈরি ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে সারা দেশে ২৮ শিশু মারা যাওয়ার অভিযোগ এনে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ২০০৯ সালে আদালতে মামলা করেছিল৷ কিন্তু তদন্তে গাফিলতির কথা বলে ২০১৬ সালের নভেম্বরে ঐ কোম্পানির মালিকসহ পাঁচজনকে বেকসুর খালাস দেন আদালত৷ ২০০৯ সালে তোলা উপরের ছবিতে শারমীনকে দেখা যাচ্ছে৷ সেও ভেজাল ওষুধ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল৷ পরে সুস্থ হয়৷
ম্যালেরিয়ার ওষুধ নকল
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে ২০১০ সালে বিশ্বের ৬ লাখ ৫৫ হাজার মানুষ ম্যালেরিয়ায় মারা যান৷ এ সব মৃত্যুর জন্য নকল, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ অধিকাংশ ক্ষেত্রে দায়ী বলে মনে করা হয়৷ ২০১০ সালে ‘ল্যানসেট’-এ প্রকাশিত এক প্রবন্ধে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ম্যালেরিয়ার ওষুধ নকল ছিল বলে জানানো হয়৷ ১৯৯৯ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ পরীক্ষা করে এ সব তথ্য পান গবেষকরা৷
যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যু
২০০৭-২০০৮ সালে চীন থেকে যাওয়া নকল হেপারিনের (যে ওষুধ রক্ত জমাট প্রতিহত করে) কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ১৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল৷
নাইজেরিয়ায় শিশুর মৃত্যু
২০০৯ সালে ‘মাই পিকিন’ নামে একটি ভেজাল সিরাপ সেবনের কারণে ৮৪ জন শিশুর প্রাণ গিয়েছিল৷ সিরাপের মধ্যে ডাইইথাইলিন গ্লাইকল পাওয়া গিয়েছিল৷
হৃদরোগের ওষুধে ভেজাল
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে সরকারি ‘পাঞ্জাব ইনস্টিটিউট অফ কার্ডিওলজি’ থেকে বিনামূল্যে সরবরাহ করা হৃদেরাগের ওষুধ খেয়ে ২০১২ সালে একশ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়৷ পরে পরীক্ষা করে ওষুধে ক্ষতিকর উপাদান পাওয়া গিয়েছিল৷ ছবিতে পাকিস্তানের একটি সরকারি হাসপাতালের সামনে রোগীদের দেখা যাচ্ছে৷
পানামায় কাশির সিরাপে বিষ
২০০৬ সালে দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা না জেনে কাশির ওষুধে ডাইইথাইলিন গ্লাইকল মিশিয়েছিলেন৷ সেই ওষুধ খেয়ে ৩৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে সেই সময় দাবি করা হয়েছিল৷ কয়েকটি চীনা কোম্পানি গ্লিসারিনের নামে এই বিষ পানামায় রপ্তানি করেছিল৷ ছবিতে পানামার এক শিশুকে দেখা যাচ্ছে৷