1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভেজালের অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের বিধান কি হচ্ছে?

১১ জুন ২০১৯

ভেজাল রোধে মৃত্যুদণ্ডের বিধান করে আইন প্রনয়নের দাবী করেছেন খোদ মন্ত্রীরা৷ আইনমন্ত্রী বলেছেন, প্রস্তাব পাঠালে বিবেচনা করে দেখব৷ তবে আইনে এখনো ভেজালের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড রয়েছে বলে তিনি ডয়চে ভেলেকে জানান৷

https://p.dw.com/p/3KB5f
Verunreinigung Essen in Indien
ছবি: Debarati Mukherji

বছরের ১১ মাস তেমন তৎপরতা চোখে না পরলেও রোজার মাসে বাংলাদেশে ভেজালবিরোধী অভিযান গতি পায়৷ জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ছাড়াও বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও মন্ত্রণালয় এই সময়ে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের মাধ্যমে ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচলনা করে৷

গত রমজানে ১২ মে সচিবালয়ে ভেজাল বিরোধী সচেতনতামূলক কর্মসূচি উদ্বোধনের সময় খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন,‘ ভেজাল প্রতিরোধে প্রয়োজনে নিরাপদ খাদ্য আইন সংশোধন করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হবে'৷ এরপর ২০ মে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম খাদ্যে ভেজালকারী অসাধু ব্যবসায়ীদের মৃত্যুদণ্ড দেয়ার দাবি জানান৷ তিনি বলেন,‘ ভেজালকারীদের অপরাধ একাত্তরের ঘাতকদের চেয়ে কম নয়'৷ একই সময়ে র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদও নিরাপদ খাদ্য আইন সংশোধন করে খাবারে ভেজাল মেশানোর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধানের প্রস্তাব করেন৷
২০১৩ সালে সরকার নিরাপদ খাদ্য আইন প্রনয়ন করে এই আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি ৫ বছরের কারাদণ্ড আর সর্বনিম্ন ছয়মাস আর একইসঙ্গে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান আছে৷

আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছি, আইন প্রয়োগে কিছু জটিলতা আছে:মোহাম্মদ মাহফুজুল হক

নিরাপদ খাদ্য কর্র্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহফুজুল হক ডয়চে ভেলেকে বলেন,‘ আমরা এরইমধ্যে আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছি৷ আইন প্রয়োগে কিছু জটিলতা আছে তা আমরা ঠিক করবো৷ শাস্তির মেয়াদ বাড়ানো হবে কিনা সে ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি৷ কেউ মৃত্যুদণ্ডের প্রস্তাবও করেনি'৷ তিনি বলেন,‘ এই আইনটি নাকি কড়া তাই এই আইনে তেমন মামলা হয় না৷মামলা হয় ভোক্তা অধিকার আইনে৷'
তবে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য(আইন) মাহবুব কবির জানান,‘ আমরা খসড়া প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছি৷ এক মাসের মধ্যেই তা আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে উপস্থাপন করব৷ এরপর আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর প্রশ্ন আসবে৷ আমরা ভেজালের সর্বোচ্চ শাস্তি ১৪ বছর বা যাজ্জীবনের প্রস্তাব করব৷ ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট বা মৃত্যুদণ্ডের প্রস্তাবও আসতে পারে সেখানে৷ এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়'৷
এদিকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ডয়চে ভেলেকে বলেন,‘খাদ্যে ভেজালের অপরাধে  যারা মৃত্যুদণ্ড চান তারা এখনো আমাদের কাছে কোনো প্রস্তাব দেননি৷ তারা আগে প্রস্তাব দিক তারপর আমরা দেখবো'৷ তিনি বলেন,‘ তবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান করলে কোনো আসামি যদি বিদেশে পালিয়ে যায় এবং তার মৃত্যুদণ্ড হয় তাহলে তাকে সারাজীবনে আর দেশে ফিরিয়ে আনা যাবে না৷ কারণ সারাবিশ্বে দণ্ড হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে জনমত প্রবল হচ্ছে৷ কোনো কোনো দেশ এরইমধ্যে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রহিত করেছে৷ নতুন আইন করলে এটা আমাদের বিবেচনায় রাখতে হবে'৷
তিনি আরো বলেন,‘দেশে প্রচলিত আইনেই খাদ্যে ভেজালের অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের বিধান আছে৷ বিশেষ ক্ষমতা আইন দেখেন সেখানে মৃত্যুদণ্ডের কথা বলা আছে৷ কিন্তু কেউ এই আইনে মামলা করে না৷ফলে আইনেরও প্রয়োগ হয় না'৷
১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫(গ) এর ১(ঙ) ধারায় খাদ্যে ভেজাল, ওষুধে ভেজাল মেশালে বা ভেজাল খাদ্য ও ওষুধ বিক্রি করলে বা বিক্রির জন্য প্রদর্শন করার অপরাধ প্রমাণ হলে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন বা ১৪ কারাদণ্ডের বিধান আছে৷ তবে এই এই আইনটিতে কারুর শাস্তির নজির নেই৷
ভেজালের বিরুদ্ধে দেশে ভোক্তা অধিকার আইন-২০০৯, নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩, ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৫, দণ্ডবিধি ও বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ রয়েছে৷ এসব আইনের অধীনেই আবার মোবাইল কোর্ট পরিচালনার বিধান আছে৷
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, আইনগুলোর একটা সমন্বয়ও প্রয়োজন৷ নয়তো একই অপরাধে শাস্তির মাত্রা ভিন্ন ভিন্ন হয়৷ শাস্তি নির্ভর করে কোন আইনে মামলা হয় তার ওপর৷

দেশে প্রচলিত আইনেই খাদ্যে ভেজালের অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের বিধান আছে: আনিসুল হক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য