মঙ্গলে পা রাখার জন্য প্রশিক্ষণ ইসরায়েলে
ইসরায়েলে মরুভূমির মধ্যে বিশাল একটি ক্রেটার। সেখানেই মঙ্গলের পরিবেশ তৈরি করার প্রশিক্ষণ দেয়া হলো ছয় মহাকাশচারীকে।
ইসরায়েলে মঙ্গল
প্রথম দর্শনে মনে হবে এই বুঝি মঙ্গলগ্রহ। লাল মাটি। চারপাশ উঁচু-নীচু পাথুরে জমি। তার মধ্যে স্পেস স্যুট পরা ছয়জন হাঁটছেন। নানারকম পরীক্ষা করছেন। এই ছয়জনকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। মঙ্গলের পরিবেশে কীভাবে মানিয়ে নিতে হবে মহাকাশচারীদের, তা শেখানো হচ্ছে।
ছয় দেশের ছয়জন
ছয়জনকে বেছে নেয়া হয়েছিল জার্মানি, অস্ট্রিয়া, ইসরায়েল, নেদারল্যান্ডস, পর্তুগাল, স্পেন থেকে। তাদের কড়া শারীরিক ও মানসিক পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। তাতে পাস করার পরেই তারা এই সুযোগ পেয়েছেন। তাদের বলা হচ্ছে, 'অ্যানালগ অ্যাস্ট্রোনট'। এই দলে একমাত্র নারী সদস্য জার্মানির অ্যানিকা মেহলিস।
কী করেছেন তারা
তারা চার অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ওখানে স্পেসস্যুট পরে থেকেছেন। স্পেসশিপের আকারে একটি কাঠামো তৈরি করা হয়েছে। ছয়জন সেখানে বাঙ্কে থেকেছেন। নানা বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা করতে হয়েছে। নিজেদের মানিয়ে নিতে হয়েছে পরিবেশের সঙ্গে। এক মহাকাশচারী বলেছেন, এখানে তো তাপমাত্রা ছিল ২৫ থেকে ৩০ ডিগ্রি। আর মঙ্গলে মাইনাস ৬০ ডিগ্রি। ফলে ফারাক এখনো আছে।
ড্রোন হাতে পরীক্ষা
এক মহাকাশচারীর হাতে রয়েছে ড্রোন। এই ড্রোন জিপিএসে চলে না। এছাড়া সৌরশক্তিতে চলা ম্যাপিং ভেহিকেলও চলবে মঙ্গলে। সে সব নিয়েও পরীক্ষা হয়েছে।
আয়োজক কারা
এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে অস্ট্রেলিয়ান স্পেস ফোরাম। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ইসরায়েলের মহাকাশ সংস্থাও। এর আগে ১২টি এরকম প্রশিক্ষণ-পর্ব চলেছে। শেষবার হয়েছে ওমানে।
করোনার কারণে
এই পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল এক বছর আগে। কিন্তু করোনার কারণে এক বছর পিছিয়ে গেল। তবে প্রায় একমাস ধরে এই প্রশিক্ষণ সফল বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন।
কেন এই প্রশিক্ষণ
নাসা জানিয়েছে, ২০৩০ সাল নাগাদ মঙ্গলে প্রথমবার মানুষ পা রাখতে পারে। পৃথিবী থেকে ৩৮০ মিলিয়ান কিলোমিটার দূরের মঙ্গলে যাওয়া সহজ বিষয় নয়। সে জন্যই এত আগে থেকে এত প্রশিক্ষণ। এখন যে ছয়জন প্রশিক্ষণ নিলেন, তারা উত্তরসূরিদের যাওয়ার পথ সুগম করবেন। প্রশিক্ষণ নেয়া গ্রোমার বলেছেন, ''মঙ্গলে প্রথম পা রাখা মানুষ জন্মগ্রহণ করে ফেলেছেন। আমরা তো তাদের জন্য পরীক্ষা করছি মাত্র।''