মধু খেয়ে কী লাভ?

মধু শরীরের তাপ ও শক্তি জোগায়৷ বিশেষ করে শীতকালে মধু শরীরকে গরম রাখে৷ শীতকালে সকালে ও রাতে এক কাপ গরম পানিতে এক চামচ করে মধু মিশিয়ে খেলে শরীর গরম থাকবে৷ মধুতে থাকা শর্করা হজমের জন্যও বিশেষ উপকারী৷

প্রতিদিন সকালে এক চামচ করে খাটি মধু খেলে হৃদপিণ্ড শক্তিশালী হয়৷ এছাড়া মধু নাকি আয়ুও বাড়ায়৷ এই পরামর্শ দিয়েছেন জার্মানির হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ড. বেরিট কখ৷

মধুতে রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে কপার, মানে তামা, আয়রন ও ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে৷ শুধু তাই নয়৷ যাঁরা অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্টে ভোগেন, তাঁদের জন্যও মধু বেশ উপকারী৷

নিউজিল্যান্ডের ওয়াইকাটো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক পেটার মোলানের করা এক গবেষণায় জানা যায় যে, বেশ কিছু রোগের জীবাণু ধ্বংসে মধুর জুড়ি নেই৷ তাছাড়া পোড়া বা ক্ষতের জায়গায় খাটি মধু লাগালে অনেক উপকার হয়৷

কাশি বা ঠান্ডা লাগলে মধু মহাষৌধ হিসেবে কাজ করে – এ কথা মনে হয় কারো অজানা নয়৷ কুসুম কুসুম গরম পানিতে মধু মিশিয়ে পান করলে শরীর ঝরঝরে হয়৷ তবে এটা কিছু দিন নয়, বেশ নিয়মিত করতে হবে৷ মধুতে ভিটামিন ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’ ছাড়াও রয়েছে খনিজ পদার্থ, পটাশিয়াম, ক্যালশিয়ামসহ অন্যান্য নানা প্রয়োজনীয় উপাদান৷

ত্বকের অ্যালার্জিজনিত সমস্যায় অলিভ অয়েলের সাথে মধু মিশিয়ে লাগালে ত্বকের সমস্যা দূর হয়৷ এমনটা জানা গেছে এক সমীক্ষার ফলাফলে৷ তবে সেক্ষেত্রে মধু অবশ্যই খাঁটি হতে হবে৷

শুধু শরীর নয়, সৌন্দর্যচর্চাতেও রয়েছে মধুর বড় ভূমিকা৷ রাসায়নিক পদার্থের প্রসাধন সামগ্রীর পার্শপ্রতিক্রিয়া থেকে ত্বককে রক্ষা করতে নানা উপায়ে মধু ব্যবহার করা হয়৷ মধু ত্বককে উজ্জ্বল, কোমল ও মসৃণ করে৷ রূপচর্চায় মধু সাধারণত ‘ফেসমাস্ক’ হিসেবে ব্যবহার করা হয়৷ তবে মধু তৈলাক্ত ত্বকের চাইতে শুষ্ক ও স্বাভাবিক ত্বকের জন্য বেশি উপকারী৷

মধুতে কোনো ধরনের চর্বি নেই৷ তাছাড়া মধু পেট পরিষ্কার রাখে এবং শরীরের ফ্যাট কমাতেও সাহায্য করে৷ ফলে ওজন কমে৷ অনেকেই তাই গরম পানিতে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে পান করেন৷ মধুতে চর্বি নেই, কাজেই তা ওজন বাড়ায় না৷ রাতে গরম দুধে কয়েক ফোটা মধু মিশিয়ে খেলে ভালো ঘুম হয় আর ঘুমের মধ্য দিয়েও যে ওজন কমানো সম্ভব, সেকথা তো বিশেষজ্ঞরাও বলেছেন৷

মাড়ির ব্যথায় মুখ কুলকুচি করার জন্য মধু মিশ্রিত পানি বা ‘মাউথওয়াশ’ ব্যবহার করলে মাড়ির ব্যথা কমে৷ এই তথ্যটি জানা গেছে ব্রাজিলের সাও পাওলো-তে করা এক গবেষণার ফলাফল থেকে৷

যাঁর কোনো সমস্যা নেই বা যিনি অসুস্থ নন, তাঁরা সকলেই নিয়মিত চিনির বদলে মধু খেতে পারেন বা প্রতিদিন সকালে এক চামচ খাটি মধু খেতে পারেন৷ এক্ষেত্রে বলা যেতে পারে ‘প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম’৷ অর্থাৎ মধুর নানা গুণের কারণে নিয়মিত মধুর ব্যবহার অসুখ-বিসুখকে এমনিতেই দূরে রাখবে৷