মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি আনতে চান কোণঠাসা ট্রাম্প
২৭ জানুয়ারি ২০২০সেনেটে ইমপিচমেন্ট তদন্তের কারণে চাপের মুখে পড়েও আন্তর্জাতিক মঞ্চে মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প৷ গত সপ্তাহে ডাভোসে বিশ্বনেতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার পর তিনি ওয়াশিংটনে সোমবার ইসরায়েলি নেতাদের সামনে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনা পেশ করতে চলেছেন৷
ফিলিস্তিনি পক্ষ ট্রাম্প প্রশাসনের আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে আগেই সব সম্পর্ক ত্যাগ করায় আলোচনা দ্বিপাক্ষিক স্তরেই সীমাবদ্ধ থাকবে৷ তাদের আশঙ্কা, স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বপ্ন এবার পুরোপুরি জলাঞ্জলি দিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷ গত বছরের জুলাই মাসে ওয়াশিংটন ফিলিস্তিনি এলাকা ও সংলগ্ন আরব দেশগুলির অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য ৫,০০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের যে পরিকল্পনা পেশ করেছিল, ফিলিস্তিনিরা সেটিও প্রত্যাখ্যান করেছে৷ এমনকি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ভেঙে দেবার হুমকিও দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস৷
ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতিও বেশ নাজুক৷ একাধিক নির্বাচনের পর সরকার গঠন সম্ভব না হওয়ায় আগামী ২রা মার্চ আবার সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷ তাই বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বেনি গানৎস-ও ওয়াশিংটনে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় উপস্থিত থাকছেন৷ নির্বাচনের আগে এই পরিকল্পনা প্রকাশের বিষয়ে প্রথমে তাঁর আপত্তি ছিল৷ ট্রাম্প এই দুই নেতার সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করবেন৷ দুই নেতাই ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়ার প্রতি সমর্থন জানাবেন বলে হোয়াইট হাউস আশা করছে৷ তারপরই তিনি প্রকাশ্যে এই পরিকল্পনার রূপরেখা পেশ করবেন৷
ক্ষমতায় আশার পরই ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি আনার উদ্যোগ শুরু করেন৷ তাঁর আগে সব মার্কিন প্রেসিডেন্ট সেই প্রচেষ্টায় বিফল হওয়া সত্ত্বেও ট্রাম্প নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে আশাবাদী৷ জামাই ও উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনার এবং আরও কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা গত প্রায় তিন বছর ধরে শান্তি পরিকল্পনার প্রস্তুতি চালিয়ে গেছেন৷ এবার ইসরায়েলের সম্মতি পেলে সে দেশে নির্বাচনের পরেই সেই পরিকল্পনা কার্যকর করার প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে বলে ট্রাম্প জানিয়েছেন৷
এতকাল ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে শান্তি আনতে প্রায় সব উদ্যোগের ভিত্তি ছিল দুই পক্ষের জন্য স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি৷ কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন একতরফাভাবে ইসরায়েলের প্রতি পক্ষপাতিত্ব দেখিয়ে এসছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷ ইহুদি বসতির ভবিষ্যৎ ও জেরুসালেম শহরের উপর দাবির প্রশ্নেও ওয়াশিংটনের আচরণ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে৷
ইসরায়েলের প্রতি একতরফা সমর্থনের মাধ্যমে ট্রাম্প অ্যামেরিকার এভাঞ্জিলিকাল খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায় করতে আরও উদ্যোগী হচ্ছেন বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন৷ কোনোক্রমে ইমপিচমেন্ট তদন্তে রেহাই পেলেও নভেম্বর মাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাঁকে যথেষ্ট সমর্থন পেতে হবে৷
এসবি/কেএম (রয়টার্স, এএফপি)