মমতার ভাইপোর বাড়িতে সিবিআই, জেরা রুজিরাকে
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির ভিতর সিবিআই অফিসারদের পা পড়ল। মঙ্গলবার তাঁরা অভিষেকের স্ত্রী রুজিরাকে দেড় ঘণ্টা ধরে জেরা করেন। এই জেরার পর সিবিআই অফিসাররা সোজা চলে যান নিজাম প্যালেসে তাঁদের দফতরে। সেখানে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেন তাঁরা।
তৃণমূল সূত্র জানাচ্ছে, রুজিরা সিবিআই অফিসারদের সঙ্গে পুরোপুরি সহযোগিতা করেছেন। তিনি সব প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। কিন্তু সিবিআই সূত্র জানাচ্ছে, রুজিরা অনেক প্রশ্নই এড়িয়ে গিয়েছেন। অনেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, তিনি কিছুই জানেন না। কিছুই বলতে পারবেন না।
সিবিআই অফিসাররা প্রথমে কিছুক্ষণ সাধারণ প্রশ্ন করার পর তাঁর বিদেশের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নিয়ে প্রশ্ন করেন।
সেই সব প্রশ্নের জবাব তাঁরা পাননি বলে সিবিআই সূত্র জানিয়েছে। রুজিরাকে কয়লা কেলেঙ্কারি নিয়ে, তাঁর বোনের বিষয়েও একগুচ্ছ প্রশ্ন করেন সিবিআই অফিসাররা। রুজিরার জবাবে তাঁরা সন্তুষ্ট হতে পারেননি।
সিবিআই অফিসাররা আটপাতার প্রশ্নপত্র তৈরি করে নিয়ে গিয়েছিলেন। আটজন সিবিআই অফিসার ছিলেন। সিবিআইয়ে এসপি পদমর্যাদার অফিসার বিশ্বজিৎ দাস নেতৃত্বে ছিলেন। তবে এরপর কী করা হবে, আবার রুজিরাকে জেরা করা হবে কি না, সে ব্যাপারে কিছুই জানায়নি সিবিআই।
অভিষেকের বাড়িতে মমতা
সিবিআই অফিসাররা অভিষেকের বাড়িতে পৌঁছনোর কিছুক্ষণ আগে সেখানে পৌঁছে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নয় মিনিট সেখানে ছিলেন। তিনি বেরিয়ে যাওয়ার মিনিট তিনেক পরে সিবিআই অফিসাররা সেখানে ঢোকেন। তিনি কেন ভাইপোর বাড়িতে গিয়েছিলেন তা মুখ্যমন্ত্রী জানাননি, অভিষেকও কিছু বলেননি।
বিজেপি নেতার বাড়িতে তল্লাশি
সম্প্রতি বিজেপি নেত্রী পামেলাকে কোকেন সহ গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পামেলা পরে বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র ঘনিষ্ট নেতা রাকেশ সিংহের নাম করেন। মাদক মামলায় জেরা করার জন্য রাকেশকে লালবাজারে ডেকে পাঠিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু তিনি যাননি। তিনি উল্টে হাইকোর্টে আবেদন করেন। হাইকোর্ট তাঁর আবেদন খারিজ করে দেয়ার পর পুলিশ তাঁর বাড়িতে যায়। পুলিশ বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গেলে রাকেশের ছেলে বাধা দেয়। পরে বাড়িতে ঢুকে তল্লাশি করে পুলিশ।
সময় নিয়ে প্রশ্ন
প্রবীণ সাংবাদিক সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করেন, বালি পাচার, কয়লা কেলেঙ্কারি, এয়ারপোর্টে অতিরিক্ত সোনা নিয়ে আসার সময় ধরার বিষয়গুলি অনেকদিন ধরে বাজারে চালু আছে। ডিডাব্লিউকে তিনি বলেন, এখন ভোটের আগে কেন বিষয়টিকে নিয়ে নড়াচড়া করা হচ্ছে। কেন আগে করা হলো না? অভিযোগ থাকলে সবসময়ই জেরা করা উচিত। কিন্তু সিবিআই, সিআইডি, পুলিশ কেন রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হবে?
সৌম্যের মতে, সরকারের বিরোধিতা করলেই মামলা করা হচ্ছে। কচুরিপানা যেমন বাড়ে তেমনভাবে দেশদ্রোহ, রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার সংখ্যা বাড়ছে। ২২ জন কৃষকের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা হয়েছে। এই প্রবণতা মারাত্মক। যে যেখানে ক্ষমতায়, তাঁরা এই পথ নিতে পারেন।
এর প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে? বিজেপি নেতারা বলছেন, তাঁরা ভাইপোকে নিয়ে যে অভিযোগ করেছিলেন, সেটা সত্য বলে প্রমাণ হচ্ছে। আর তৃণমূলের দাবি, এটা বুমেরাং হবে। লোকে বীতশ্রদ্ধ হবে। তবে মানুষের রায় তো ভোটের ফলাফলের পর বোঝা যাবে।
জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এএনআই)