1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মহাকাশের আবর্জনা নিয়ে উদ্বেগ

রিশার্ড ফুক্স / এআই২৫ এপ্রিল ২০১৩

পুরনো কৃত্রিম উপগ্রহ এবং শাটলের অংশবিশেষ বিশ্বের চারদিকে ভেসে বেড়াচ্ছে৷ উপগ্রহের এসব ধ্বংসাবশেষ কি বিপজ্জনক? আমরা কী করতে পারি? বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে এই নিয়ে চলছে বিস্তর আলোচনা৷

https://p.dw.com/p/18Mqg
ছবি: AP

উদ্বেগের একটি কারণ হচ্ছে, উপগ্রহের এসব ধ্বংসাবশেষ আবার পৃথিবীতে ফিরে আসতে পারে৷ তবে তার চেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, মহাকাশে সচল বিভিন্ন কৃত্রিম উপগ্রহের সঙ্গে যদি পুরাতন, অচল উপগ্রহ বা সেসবের যন্ত্রপাতির অংশ বিশেষেরও ধাক্কা লাগে, তাহলে সচল উপগ্রহটি মুহূর্তেই মধ্যেই ধ্বংস হয়ে যাবে৷

এরকম মুখোমুখি সংঘর্ষ প্রথম ঘটেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার দু'টি উপগ্রহের মধ্যে৷ ভূপৃষ্ঠ থেকে ৭৯০ কিলোমিটার দূরত্বে সাইবেরিয়ার ঠিক উপরে এই সংঘর্ষ ঘটে৷

ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা প্রকল্প ইএসএ'র কর্মকর্তা হাইনার ক্লিনক্রার্ড বলেন, ‘আমাদের পৃথিবীর চারদিকে অসংখ্য বস্তু ঘুরে বেড়াচ্ছে৷ ছোট্ট স্ক্রু থেকে শুরু করে অকেজো উপগ্রহ – অনেককিছু৷'

মহাকাশ নজরদারি নেটওয়ার্ক (এসএসএন) এর হিসেব অনুযায়ী, পৃথিবীর চারপাশে এখন তের হাজার বড় আকারের ধ্বংসাবশেষ ভেসে বেড়াচ্ছে৷ আর ছোট মানে ১ সেন্টিমিটারের মতো আকারের আবর্জনার সংখ্যা সাত লাখের মতো৷

প্রশ্ন হচ্ছে, উপগ্রহের এসব ধ্বংসাবশেষ কিংবা আবর্জনা পৃথিবীতে ফিরে আসার আশঙ্কা কতটুকু? ইএসএ'র কর্মকর্তা ফ্রান্স-ইয়ুর্গেন ডিকমান এই বিষয়ে বলেন, ‘‘ পৃথিবীর বায়ু মণ্ডলে প্রবেশের পর কোন আবর্জনা পুড়ে না গিয়ে ভূপৃষ্ঠে আছড়ে পড়ার আশঙ্কা একেবারে শূন্যের কোঠায় না থাকলেও, খুব, খুবই কম৷''

ক্লিনক্রার্ড-এর হিসেব অনুযায়ী, প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে দুই মিটারের মতো লম্বা আবর্জনা মহাকাশ থেকে আমাদের বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করছে৷ কিন্তু সেগুলো ভূপৃষ্ঠে পৌঁছানোর আগেই পুড়ে যাচ্ছে৷ আর স্যাটেলাইটের বড়সড় কোন ভগ্নাংশ বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করলে, সেটিকে নিয়ন্ত্রিতভাবে ধ্বংসও সম্ভব৷

বিশেষজ্ঞরা তাই চিন্তিত অন্য বিষয়ে৷ তাঁদের মূল ভাবনা হচ্ছে, মহাকাশে থাকা এসব আবর্জনার সঙ্গে ধাক্কা লেগে আবার দামী এবং সচল উপগ্রহগুলো ধ্বংস হয়ে না যায়৷ ১৯৫৭ সাল থেকে এখন অবধি মহাকাশে ছয় হাজারের বেশি কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানো হয়েছে৷ এগুলোর মধ্যে থেকে মাত্র এক হাজার এখন সচল আছে এবং গবেষণা, সামরিক, টেলিযোগাযোগসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে৷

সচল এসব উপগ্রহকে নিরাপদ রাখতে তাই বিশেষ উদ্যোগ প্রয়োজন৷ ইউরোপের গবেষকরা এখন মহাকাশে ভেসে বেড়ানো বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় বস্তুর উপর নজরদারি আরো বাড়ানোর কথা ভাবছেন৷ কাজটি অত্যন্ত দুরূহ কিন্তু সমন্বিতভাবে সম্ভব৷ পাশাপাশি মহাকাশ থেকে অপ্রয়োজনীয় বস্তু যা এখন আবর্জনা হয়ে ভেসে বেড়াচ্ছে, সেসব সরিয়ে এনে ধ্বংস করার কথাও চিন্তা করা আছে৷ তবে এই চিন্তার বাস্তবায়ন এই মুহূর্তে অসম্ভব৷