মহামারি পেরিয়ে আবার উঠে দাঁড়াতে চাইছে দার্জিলিং
করোনায় ধুঁকছে দার্জিলিং। পর্যটক নেই বললেই চলে। কোভিডবিধি মানতে হচ্ছে সকলকে। পুজোয় ভিড় হবে, এমনই আশা সকলের।
পুজোর ছুটি ও বাঙালির দার্জিলিং
একরাতের রেল সফরে কলকাতার মানুষ পৌঁছে যেতে পারেন তার প্রিয় শৈলশহর দার্জিলিংয়ে। সামনেই দুর্গাপুজো। ক্যালেন্ডার অনুযায়ী চাকরিজীবিরা এইবছর পেতে চলেছেন লম্বা একটা পুজোর ছুটি। আর বাঙালির ছুটি কাটানোর জায়গাগুলোর মধ্যে এক্কেবারে ওপরের দিকে রয়েছে দার্জিলিং।
পর্যটনে মহামারির থাবা
পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন মানচিত্রের সবথেকে উল্লেখযোগ্য জায়গাটার নাম দার্জিলিং। একবছরেরও বেশি সময় ধরে চলতে থাকা করোনা মহামারি পর্যটন শিল্পের শিরদাঁড়া অনেকটাই ভেঙে দিয়েছে। বাদ পড়েনি দার্জিলিংও। সাধারণত, সেপ্টেম্বর থেকে ধীরেধীরে পর্যটন মরশুম শুরু হলেও এ’বছর এখনও পর্যন্ত তেমন দেখা মিলছে না পর্যটকদের।
টাইগার হিলের নতুন দর্শন অলিন্দ
টাইগার হিল থেকে সূর্যোদয় দেখা এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। এখান থেকে এভারেস্ট আর কাঞ্চনজঙ্ঘা, দুই-ই দেখা যায়। ভোরের অকল্পনীয় দৃশ্য দেখার জন্য রাত থাকতেই টাইগার হিলে চলে আসেন দর্শকরা। তাই পুরনো দর্শন অলিন্দটি ভেঙে অপেক্ষাকৃত বেশি জায়গা সম্পন্ন একটি দর্শন অলিন্দ তৈরির কাজ ২০১৭ সাল থেকে চলছে, যা প্রায় শেষের মুখে। এখন ভিড় কম, তাই এর সঙ্গে জুড়ে থাকা কফি বা অন্যান্য ব্যবসাগুলোও ধুঁকছে।
টয়ট্রেন ও জয় রাইড
এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকার পর দার্জিলিংয়ের বিখ্যাত টয়ট্রেনের সার্ভিস খুলেছে। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে টয়ট্রেনে চেপে মনোরম দৃশ্য দেখতে দেখতে দার্জিলিং পৌঁছনো গেলেও তাতে সময় লাগে অনেক। এছাড়াও পর্যটন মরশুমের কথা মাথায় রেখে জয়-রাইডও আবার চালু করে দেওয়া হয়েছে। স্টিম ইঞ্জিনের রেলে চেপে পর্যটকরা দার্জিলিং স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করে বাতাসিয়া ল্যুপ, ঘুম ঘুরে দু-ঘণ্টায় আবার দার্জিলিং-এ ফেরত আসতে পারেন।
সাইট সিয়িং-এর গাড়ি
মরশুম এখনো তেমনভাবে শুরু হয়নি। সার দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে বায়না না পাওয়া গাড়ি। করোনার কারণে প্রশাসন থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অর্ধেক সওয়ারি নেওয়ার জন্য। শাটল গাড়িগুলোকে তাই বেশি ভাড়া চাইতে হচ্ছে যাত্রীদের থেকে। বাড়ছে বিড়ম্বনা।
অপরূপ ডালি মনেস্ট্রি
ঘুম আর দার্জিলিংয়ের মাঝে অবস্থিত বছর পঞ্চাশেকের পুরনো এই ডালি মনেস্ট্রি। সাধারণতঃ এই মনেস্ট্রিতে পর্যটকের ভিড় লেগে থাকলেও এই করোনাকালের নানান বিধিনিষেধে এখন ফাঁকা।
প্রায় জনহীন ম্যাল
কথিত আছে দার্জিলিং-এর ম্যালে বেড়াতে এলে পর্যটকেরা তাঁদের পরিচিত কারোর দেখা ঠিক পেয়ে যাবেন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে এই কথাটা খুব একটা খাটে না। ম্যালের মতো জনবহুল এলাকাও প্রায় ফাঁকা। ঘোড়ারা দাঁড়িয়ে রয়েছে সওয়ারির অপেক্ষায়।
আশায় ঘোড়ার মালিক
মরশুমে সওয়ারির চিন্তা করতে হয় না। ভিড় লেগেই থাকে। কিন্তু গত দেড়বছরে ছবিটা বদলেছে। ঘোড়া থেকে রোজগার না হ’লেও ঘোড়ার যত্নে খামতি রাখা চলবে না। তবে আশায় আছেন এই ঘোড়ার মালিক। মাঝ সেপ্টেম্বর থেকে মরশুম শুরু হবে।
শুনশান গ্লেনারি'জ
দার্জিলিং-এ এসেছেন অথচ গ্লেনারি’জ-এ নৈশভোজ সারেননি, এমন মানুষ মেলা ভার। সাহেবি কেতাদূরস্ত গ্লেনারি’জকে এই সেপ্টেম্বরের শুরুতে বেশ শুনসানই লাগল।