করোনা এখন মহামারি, আক্রান্ত টম হ্যাংকস
১২ মার্চ ২০২০কয়েক দিন আগেই তিনি টুইটে লিখেছিলেন, করোনা নিয়ে বাড়াবাড়ি হচ্ছে। গত বছর অ্যামেরিকায় সাধারণ ফ্লুয়ে ৩৭ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিলেন কিন্তু তার জন্য সব কিছু বন্ধ করে দেওয়া হয়নি। সেই ডনাল্ড ট্রাম্পই এ বার করোনা নিয়ে অভূতপূর্ব পদক্ষেপ নিলেন। যুক্তরাজ্য ছাড়া ইউরোপের সমস্ত দেশের নাগরিকদের অ্যামেরিকায় ঢোকা বন্ধ করে দিলেন। শুক্রবার মধ্যরাত থেকে কোনও ইউরোপীয় আর মার্কিন মুলুকে পা রাখতে পারবেন না। গত এক সপ্তাহে অ্যামেরিকার দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা। আক্রান্ত বহু। মৃত্যু হয়েছে অনেকের। করোনার কারণে নিউ ইয়র্কে বাতিল হয়েছে বাৎসরিক প্যারেডের অনুষ্ঠান।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত পৃথিবীর ১১৪টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস। বুধবার আনুষ্ঠানিক ভাবে করোনা ভাইরাসকে তারা মহামারি হিসেবে ঘোষণা করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বুধবার জানিয়েছেন, করোনা নিয়ে আতঙ্কের যথেষ্ট কারণ আছে। প্রতিটি দেশ যাতে করোনার সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত থাকে, সেই বার্তা আরও একবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফ থেকে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে হলিউডের অভিনেতা টম হ্যাংকস টুইট করে জানিয়েছেন, তিনি এবং তাঁর স্ত্রী রিতা উইলসনও করোনা আক্রান্ত। অস্ট্রেলিয়ায় একটি ছবির শ্যুটিং করতে গিয়েছিলেন তাঁরা। আপাতত শ্যুটিং বন্ধ। নিজেকে গৃহবন্দি করে রেখেছেন টম।
ইটালি এবং দক্ষিণ কোরিয়ার অবস্থা আরও ভয়াবহ চেহারা নিয়েছে। ইটালির সরকার গোটা দেশটিকেই আইসোলেশনে রেখেছে। জরুরি পরিষেবা ছাড়া বাকি সমস্ত কিছু বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বোলোনিয়ায় বসবাসকারী এক বাঙালি ছাত্রের অভিজ্ঞতা, ''গত এক সপ্তাহ ধরে বাড়িতে বসে আছি। আরও এক সপ্তাহের খাবার মজুত আছে। তারপর কী হবে জানি না। গোটা শহরে কার্যত বনধের চেহারা।'' করোনা যাতে না ছড়ায় তার জন্য আরও বেশ কিছু কঠিন পদক্ষেপ নিতে চলেছে ইটালি। ইইউ-র কাছে তারা অর্থ সাহায্যও চেয়েছে। একই অবস্থা দক্ষিণ কোরিয়ার। রাজধানীতে কেবলমাত্র একটি কল সেন্টারেই ১০০ জনের শরীরে সংক্রমণ মিলেছে। দক্ষিণ কোরিয়াতেও হু হু করে ছড়াচ্ছে ভাইরাস।
ভারতে এখনও পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৭০ জন। বৃহস্পতিবার সকালে বিজ্ঞপ্তি জারি করে সরকার জানিয়ে দিয়েছে, আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সমস্ত ভিসা বাতিল। অর্থাৎ, এই সময়ের মধ্যে বিদেশ থেকে কোনও নাগরিককে দেশে আসতে দেওয়া হবে না। বিদেশিরা তো বটেই, বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয়রাও এই সময়ের মধ্যে দেশে ঢুকতে পারবেন না। তবে দেশের নাগরিকরা বিদেশে যেতে পারবেন কি না সে বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করে কিছু বলা নেই। বলা নেই, যে বিদেশিরা এখন ভারতে আছেন, তাঁদের দেশে ফিরতে দেওয়া হবে কি না। অন্য দিকে, আগামী ১৪ তারিখ বিশেষ বৈঠকে বসছে আইপিএল কমিটি। এই অবস্থার মধ্যে আদৌ আইপিএল করা সম্ভব কি না, তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হওয়ার কথা। সূত্র জানাচ্ছে, আপাতত আইপিএল পিছিয়ে দেওয়ারই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বৈঠকে। কারণ, বিদেশ থেকে ক্রিকেটাররা দেশে ঢুকতে পারবেন না। পাশাপাশি স্টেডিয়ামে জমায়েতও এ সময়ে উচিত হবে না বলে মনে করছেন অনেকে। ভারতের প্রায় প্রতিটি মোবাইল নেটওয়ার্কে ফোন করলেই রিংটোনের জায়গায় প্রথমে করোনার সতর্কীকরণ শোনানো হচ্ছে। তারপর রিংটোন শোনা যাচ্ছে।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি)