মাওবাদী দমনের পদ্ধতি ভুল ছিল, স্বীকার চিদম্বরম-এর
৬ এপ্রিল ২০১০মঙ্গলবার ছত্তিশগড় রাজ্যের দান্তেওয়াড়া জেলায় মাওবাদী সহিংসতার এতবড় ঘটনা আর হয়নি৷ ঐ হামলায় মৃতের সংখ্যা ৭৫ পেরিয়ে গেছে৷ এর মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় সংরক্ষিত বাহিনী সিআরপিএফ-এর ৭৩ জন৷
দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এবং মাওবাদী হামলা দমনে আরও কী কী ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, তা নিয়ে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে আলোচনা হয়৷ উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষা বাহিনীর তিন প্রধান ছাড়াও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি. চিদম্বরম, প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ.কে অ্যান্টনি, অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেনন, স্বরাষ্ট্রসচিব জি.কে পিল্লাই এবং গোয়েন্দাপ্রধান৷ বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রসচিব বলেন, মাওবাদী দমনে বিমানবাহিনীকে কাজে লাগানো হবে না৷ তবে মাও-বিরোধী অভিযান আরও কঠোর করা হবে৷ মাওবাদী গেরিলারা পুলিশের গাড়ি ওড়াতে ব্যবহার করেছিল প্রেশার বোমা৷ এমন কী উদ্ধারকারী হেলিকপ্টার লক্ষ্য করে গুলিও চালায় তারা৷
এর আগে মাওবাদী হামলা সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চিদম্বরম বলেন, মাও-বিরোধী অভিযানে কোথাও একটা মস্ত ভুল করা হয়েছিল, যারজন্য এত বেশি হতাহত হয়েছে৷ ছত্তিশগড় রাজ্যের পুলিশের কর্তাব্যক্তিদের বিবরণ অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে দান্তেওয়াড়ার জঙ্গল এলাকা দিয়ে যখন নিরাপত্তা বাহিনীর ১২৫ জন কর্মী মাও বিরোধী অভিযান শেষে ফিরছিল, তখন পুলিশের অ্যান্টি মাইন গাড়িটি প্রথমে মাওবাদীরা বিস্ফোরণে উড়িয়ে দেয়৷ তাতে মারা যায় জনা ৫০৷ বাদ বাকিরা বেরিয়ে এলে প্রায় এক হাজারের মত মাওবাদী গেরিলা পাহাড়ি টিলা এবং চারপাশের জঙ্গল থেকে সুপরিকল্পিতভাবে একযোগে হামলা চালায়৷ নিরাপত্তা কর্মীরা এরজন্য একেবারেই প্রস্তুত ছিলনা৷
এই হামলা সম্পর্কে অ্যান্টি-ইনসারজেন্সি বিশেষজ্ঞদের অভিমত, সিআরপিএফ গেরিলা বাহিনী যুদ্ধের প্রাথমিক নিয়ম মানেনি৷ প্রত্যন্ত অঞ্চলে তারা গিয়েছিল পুলিশের গাড়িতে, নিরাপচ্চার জন্য যা নিয়ম নয়৷ দ্বিতীয়ত, যে রাস্তা দিয়ে তারা গিয়েছিল, সেই রাস্তা দিয়েই তারা ফিরে আসছিল৷ এটাও নিয়মবিরুদ্ধ৷ তৃতীয়ত, প্রত্যন্ত অঞ্চলে গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক বলতে কিছুই ছিলনা৷
প্রতিবেদক : অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা : সুপ্রিয় বন্দ্যোপধ্যায়