মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে বিতাড়িত রাশিয়া
৮ এপ্রিল ২০২২ইউক্রেনের বুচায় গণকবর পাওয়ার পরে গোটা বিশ্বেই আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। ওই ঘটনাকে সামনে রেখে জাতিসংঘেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিতর্ক শুরু হয়েছিল। তারই জেরে ইউক্রেন জাতিসংঘে ভোটাভুটির প্রস্তাব দেয়। জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে রাশিয়ার থাকা উচিত কি না, বৃহস্পতিবার তা নিয়ে ভোট হয়। সেখানে ৯৩-২৪ ভোটে রাশিয়া হেরে যায়। এবং মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্যপদ হারায়।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে ৪৭টি দেশের প্রতিনিধি আছে। ইউক্রেন এবং রাশিয়া দুই দেশই তার সদস্য। বস্তুত, দুই দেশেরই মেয়াদ শেষ হবে ২০২৩ সালে। কিন্তু বুচার ঘটনা সামনে আসার পরে ইউক্রেন জাতিসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে সরব হয়। ঠিক হয়, রাশিয়া মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রতিনিধিত্ব করতে পারেব কি না, তা নিয়ে ভোটাভুটি হবে। ইউক্রেন সংকট নিয়ে এই নিয়ে চতুর্থবার ভোটাভুটি হলো জাতিসংঘে। জাতিসংঘের নিয়ম হলো, মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে কাউকে বিতাড়িত করতে হলে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট প্রস্তাবের পক্ষে থাকতে হবে।
এদিনের ভোটে প্রস্তাবের পক্ষে অর্থাৎ, রাশিয়াকে মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে বিতাড়নের পক্ষে ভোট দিয়েছে ৯৩টি দেশ। রাশিয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছে ২৪টি দেশ। ভোটদানে বিরত থেকেছে ৫৮টি দেশ। লক্ষ্যণীয়, এর আগের ভোটগুলিতে রাশিয়ার পক্ষে এত ভোট পড়েনি। এদিন চীনের মতো রাষ্ট্র রাশিয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছে। এতদিন তারা ভোটদানে বিরত থাকছিল। ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ অবশ্য এদিনও ভোটদানে বিরত থেকেছে। ভারত প্রথম থেকেই ভোটাভুটি এড়িয়ে চলেছে।
ইউক্রেনের বক্তব্য
রাশিয়া মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর জাতিসংঘকে ধন্যবাদ জানিয়েছে ইউক্রেন। তাদের দাবি, নতুন করে কিয়েভ অঞ্চল থেকে অন্তত ৩০০ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৫০ জন বেসামরিক ব্যক্তি। তাদের শরীরে আঘাতের স্পষ্ট চিহ্ন আছে। অন্যান্য অঞ্চলেও রাশিয়ার সেনার অত্যাচারের নিদর্শন মিলছে বলে ইউক্রেন দাবি করেছে। ইউক্রেনের বক্তব্য, রাশিয়া মানবাতাকে হত্যা করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আরো কড়া শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত।
রাশিয়ার হুমকি
বুচার গণকবরের বিষয়টি প্রথম থেকেই অস্বীকার করছে রাশিয়া। তাদের দাবি, ওই ঘটনা তৈরি করা হয়েছে। এদিন ভোটের আগে রাশিয়া হুমকি দেয়, যে সমস্ত দেশ রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দেবে এবং অ্যামেরিকাকে সমর্থন করবে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে রাশিয়া। শুধু তা-ই নয়, যে সমস্ত দেশ ভোটদানে বিরত থাকবে, তাদের বিরুদ্ধেও কড়া পদক্ষেপের হুমকি দেওয়া হয়েছিল। রাশিয়ার বক্তব্য, ভোটদানে বিরত থাকার অর্থ অ্যামেরিকাকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া দেয়া।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি, ডিপিএ)