মার্টিন লুথার কিং-এর স্মারক ভাস্কর্য উন্মোচন করলেন ওবামা
১৭ অক্টোবর ২০১১রবিবার মার্কিন রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি'তে বিশ্বখ্যাত এই আফ্রিকান-অ্যামেরিকান নাগরিক অধিকারবাদী নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী, মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র-এর ৩০ ফুট উঁচু গ্রানাইটের মূর্তিটির দিকে তাকিয়ে ‘স্যালুট' ঠোকেন বারাক ওবামা৷ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে সমবেতদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘‘আজ আমরা এমন একজন মানুষকে, এমন একটি আন্দোলনকে উদযাপন করছি, যা আমাদের দেশকে অনেক দিয়েছে৷ লুথার কিং ছিলেন মার্কিন জাতির অন্যতম স্থপতি৷ তাই তাঁর স্বপ্ন ও ঐক্যের দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের ভুলে গেলে চলবে না৷ বরং পূর্বসূরীদের সংগ্রাম থেকে আমাদের শক্তি সঞ্চয় করতে হবে৷''
আর সে কারণেই, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট টমাস জেফারসন এবং এব্রাহাম লিংকন মেমোরিয়ালের ঠিক মাঝখানটায় কৃষ্ণাঙ্গদের নাগরিক আন্দোলনের নেতা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়ারের মূর্তি স্থাপন করা হয়৷ জানা যায়, চলতি বছরের অগাস্ট মাসে লুথার কিং-এর এই স্মৃতিস্তম্ভ উন্মোচিত হওয়ার কথা থাকলেও, ঘূর্ণিঝড় ‘আইরিন'-এর কারণে সেটি পিছিয়ে যায়৷
সে যাই হোক, চার ঘণ্টাব্যাপী স্মৃতিস্তম্ভ উন্মোচনের ঐ অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট ওবামার সঙ্গে ছিলেন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা ও তাঁদের দুই মেয়ে৷ এছাড়াও সেদিন উপস্থিত ছিলেন ভাইস-প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও স্ত্রী জিল, সোল গায়িকা অ্যারেথা ফ্যাঙ্কলিন, গায়ক স্টিভি ওয়ানডার, অভিনেত্রী সিসিলি টাইসন, চেরি হকিন্সসহ বহু গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং প্রায় পঞ্চাশ হাজার সাধারণ মানুষ৷
লুথার কিং-কে সম্মান জানাতে এদিন হাজির হন তাঁর বোন ক্রিস্টিন কিং ফারিস, মেয়ে ব্যার্নিস কিং এবং ছেলে মার্টিন লুথার কিং থ্রি৷ দাদার কথা স্মরণ করে ক্রিস্টিন বলেন, ‘‘দাদা একটি মহৎ স্বপ্ন দেখেছিলেন৷ আর তাঁর স্বপ্ন সফল হবেই৷ কারণ, একমাত্র অ্যামেরিকাতেই এটা হওয়া সম্ভব৷''
উল্লেখ্য, ১৯২৯ সালের ১৫ই জানুয়ারি জর্জিয়ার অ্যাটলান্টায় জন্মগ্রহণ করেন মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র৷ ১৯৫৫ সালে বস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লাভ করেন ডক্টর অব ফিলোসোফি ডিগ্রি৷ অ্যামেরিকায় কৃষ্ণাঙ্গদের নাগরিক ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় অহিংস আন্দোলনের জন্য ১৯৬৪ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি৷ তখন তাঁর বয়স মাত্র ৩৫৷ নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ীদের মধ্যে তিনিই ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ৷
১৯৬৮ সালের ৪ঠা এপ্রিল জেমস আর্ল রে নামক এক আততায়ীর হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন মার্টিন লুথার কিং৷ প্রয়াত এই নাগরিক অধিকারবাদীর এই মূর্তিটি পাথরে খোদাই করেছেন চীনা শিল্পী লেই ইশিন৷ কিং-এর ‘আই হ্যাভ এ ড্রিম' ভাষণের ঐ পংক্তিতে উদ্বুদ্ধ হয়েই মূর্তিটির রূপ দিয়েছেন তিনি৷ তাঁর ভাষায়: ‘‘পর্বতপ্রমাণ হতাশা থেকে বেরিয়ে এসেছে অপার আশার এক প্রস্তর৷''
প্রতিবেদন: দেবারতি গুহ
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক