মালদ্বীপের চীনপন্থি দল বিপুল ভোট নিয়ে ক্ষমতায় ফিরছে
২২ এপ্রিল ২০২৪জাতীয় নির্বাচনের পর রোববার মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জু ঘোষণা করেছেন, তিনিই নতুন সরকার গঠন করতে চলেছেন। ৯৩ আসনের পার্লামেন্টের ৮৬টি আসনের ফলাফল রোববার ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে ৬৬টি আসন জিতেছে মুইজ্জুর দল। এর ফলে পরিষ্কার, মোহামেদ মুইজ্জুর দলই সরকার গঠন করবে।
মুইজ্জু এবছর নিজে ভোটে লড়েননি। তবে তার দল প্রচারে চীনের বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছিল। মোহামেদ মুইজ্জু চীনপন্থি রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত। মালদ্বীপের ভারতমুখি অভিমুখ বদলের কথা বেশ কিছুদিন ধরেই বলছিলেন তিনি। মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা সরিয়ে দেয়ার কাজও তিনিই করেছেন। ফলে তার দলের বিপুল ভোটে জয় মালদ্বীপকে আরো বেশি চীনমুখি করবে বলেই বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন।
ভারত এবং চীনের অবস্থান
মালদ্বীপের ভোটের দিকে নজর ছিল ভারত এবং চীন দুই পক্ষেরই। দীর্ঘদিন ধরে মালদ্বীপে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে ভারত। দ্বীপরাষ্ট্রটিকে বিভিন্ন সময়ে অর্থনৈতিক এবং সামরিক সাহায্য করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, বাণিজ্যক্ষেত্রেও মালদ্বীপের পাশে থেকেছে ভারত। কোভিডের সময় মালদ্বীপকে টিকা দিয়ে সাহায্য করা হয়েছিল। মালদ্বীপের পার্লামেন্ট বরাবরই ভারতের বন্ধু হিসেবে কাজ করেছে। কিন্তু মুইজ দেশের এই ভারতপন্থি অবস্থানের বিরোধিতা করেন। চীনপন্থি এই রাজনীতিক চীনের সঙ্গে আরো দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তোলার পথে হাটেন। কিন্তু তার সমস্ত পদক্ষেপ পার্লামেন্টে গৃহীত হয়নি।
এবার যে পরিমাণ আসন নিয়ে মুইজ্জুর দল পার্লামেন্টে যাচ্ছে, তাতে চীনমুখি প্রকল্প গ্রহণে মুইজের আর কোনো সমস্য়া হবে না। বস্তুত, মুইজ্জু মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনাঘাঁটি তুলে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। মালদ্বীপে আর একজনও ভারতীয় সেনাকে থাকতে দেয়া হবে না বলে জানিয়েছিলেন তিনি। অন্য়দিকে, চীনের সঙ্গে একাধিক চুক্তি করেছেন তিনি। চীন যাতে মালদ্বীপে আরো বেশি বিনিয়োগ করে, তার জন্য় একাধিক প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছেন মুইজ। এবার সেই প্রকল্পগুলি শুরু হবে বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
ভারত মহাসাগরের উপর একটি ছোট দ্বীপ হলেও ভারত এবং চীনের কাছে মালদ্বীপের গুরুত্ব আছে। তার কারণ, ভারত মহাসাগর অঞ্চলে একটি কৌশলী এলাকায় মালদ্বীপের অবস্থান। সেখানে সেনা ঘাঁটি তৈরি করে ভারত মহাসাগরে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করেছিল ভারত। এবার সেখান থেকে সেনা সরিয়ে নিতে হলে ভারত একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হারাবে। অন্যদিকে এই একই কারণে চীনও মালদ্বীপের সঙ্গে বন্ধুত্ব বাড়াতে চায়। মালদ্বীপের ভোট চীনকেই আরো কাছে টেনে নেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি)