আফগানিস্তান
২২ অক্টোবর ২০১২মালালা ইউসুফজাইয়ের ওপর তালেবান গোষ্ঠী হামলা চালানোর পর গোটা বিশ্বের গণমাধ্যম যেন সেখানে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে৷ নিন্দা আর ধিক্কারে স্রোত বয়ে গেছে হামলাকারী তালেবানের প্রতি৷ প্রতিবেশী দেশ আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই আর বাকিদের মতো মালালার প্রতি সহানুভূতি জানিয়েছেন৷ অথচ তাঁর নিজের দেশ আফগানিস্তানে নারীদের অবস্থা কি মালালার চেয়ে ভালো? সেখানকার নারী জনপ্রতিনিধিদের বক্তব্য সবাই মালালাকে নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও আড়ালেই থেকে যাচ্ছে আফগান নারীরা৷
আফগান সংসদের নারী সদস্য এলাই এরশাদ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘‘প্রতিদিন কোনো না কোনো আফগান নারী নির্যাতিত হচ্ছে, ধর্ষিত হচ্ছে৷ কারো মুখে অ্যাসিড ছুড়ে চেহারা ঝলসে দেওয়া হচ্ছে৷ প্রেসিডেন্ট যে তাঁর নিজের দেশের নারীদের নিয়েই ভাবেন না৷ তাহলে তিনি মালালার জন্য কেন এত দরদ দেখাচ্ছেন?''
গত জুলাই মাসে আফগানিস্তানে নাজিবা নামে এক নারীর শিরচ্ছেদ করে বন্দুকধারীরা৷ তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল ব্যভিচারের৷ এই ঘটনার পর প্রতিবাদের ঝড় ওঠে৷ সে সময় প্রেসিডেন্ট কারজাই এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছিলেন৷ এবার পাকিস্তানে মালালার ঘটনাতেও ঠিক একইভাবে নিন্দা জানিয়েছেন তিনি৷ তাঁর এইসব মৌখিক নিন্দাই শোনা যায় শুধু, অথচ আফগানিস্তানে নারীদের দুর্দশা কাটার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না৷ দেশটির মানবাধিকার কমিশনের তথ্য মতে গোটা আফগানিস্তানে নারী নির্যাতন বেড়ে চলেছে৷
আফগান সংসদের অন্যতম নারী সদস্য সুরায়া পারলিকা বলেন, ‘‘মালালার অবস্থা পৃথিবীর আর যে কারোর চেয়ে আমরা ভালো বুঝি৷ আমাদের সরকার কেবল ফাঁকা বুলি দিয়ে নারীদের অধিকার রক্ষা করে চলেছে, কাজের কাজ কিছুই করছে না৷'' আফগানিস্তানের নারী সংসদ সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, কারজাই সরকারের কোনো আগ্রহ নেই নারীদের অধিকার নিয়ে৷ তারা কেবল পশ্চিমাদের কাছ থেকে রাজনৈতিক সমর্থন পাওয়ার জন্যই এইসব কথা বলে থাকে৷
আরআই/ডিজি (রয়টার্স)