মালয়েশিয়ায় পর্যটকদের ভয়
২৪ জুলাই ২০১৪কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিংয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরুর কিছুক্ষণ পরই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয় মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের এমএইচ৩৭০ ফ্লাইট৷ ২৩৯ জন যাত্রী নিয়ে বিমানটি নিখোঁজ হয়েছিল গত ৮ই মার্চ৷ এখনো তার হদিশ পাওয়া যায় নি৷ চার মাস না যেতেই আবার দুঃসংবাদ৷ এবার পূর্ব ইউক্রেনে ২৯৮ জন যাত্রী নিয়ে আরেকটি বিমান ভূপাতিত৷ মাস চারেকের ব্যবধানে দু-দুটি বিমানের এমন পরিণতিতে মালয়েশিয়ার পর্যটন শিল্পে বিরূপ প্রভাব পড়বে বলেই বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা৷
বিরূপ প্রভাব ইতিম্যধেই পড়তে শুরু করেছে৷ নিখোঁজ বিমানটির অধিকাংশ যাত্রীই ছিলেন চীনের নাগরিক৷ এমনিতে চীন থেকেই সবচেয়ে বেশি পর্যটক মালয়েশিয়ায় যান৷ কিন্তু এমএইচ৩৭০ নিখোঁজ হবার পর থেকে চীনাদের মনে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক৷ যে দেশে গেলে এত মানুষ নিখোঁজ বা লাশ হয়, সে দেশে না যাওয়াই নিরাপদ মনে করছেন অনেকে৷
এমন ভাবনার সঙ্গে কুসংস্কারের নিশ্চয়ই একটা সম্পর্ক আছে৷ তবে চীনের অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কুসংস্কারের ঊর্ধ্বে উঠতে রাজি নন৷ বেইজিংয়ের অধিবাসী কুয়ান ই বললেন, ‘‘মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা আমি একেবারেই ভাবছিনা৷ আগে আমার কয়েকজন বন্ধু মধুচন্দ্রিমা উদযাপন করতে সেখানে গিয়েছিল৷ কিন্তু মালয়েশিয়া এখন বিপজ্জনক জায়গা৷ সেখানে যাবার আগে সবাই এখন দুবার ভাবছে৷'' শেষ পর্যন্ত তাঁদের অনেকে যে মালয়েশিয়া না যাওয়ার সিদ্ধান্তই নিচ্ছেন তা বলা বাহুল্য৷
ন্যাশনাল তাইওয়ান ইউনিভার্সিটির গবেষক ব্রিজিট ওয়েলস মনে করেন, দু-দুটি বিমান বিপর্যয়ের ফলে মালয়েশিয়ার পর্যটন শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ক্ষতিটা হবে সাময়িক৷ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে মালয়েশিয়া এ অবস্থা কাটিয়ে উঠতে পারবে বলেই তাঁর ধারণা৷
২০১৩ সালে ২৫ মিলিয়ন পর্যটক যাওয়ায় পর্যটন শিল্প থেকে ২০ বিলিয়ন ডলার আয় করেছিল মালয়েশিয়া৷ এ বছর ২৮ মিলিয়ন পর্যটক পেতে বিশেষ কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল সরকার৷ ‘মালয়েশিয়া সফরের বছর' স্লোগানের আওতায় নেয়া সব পদক্ষেপকেই হুমকির মুখে ঠেলেছে দুটি বিমান বিপর্যয়৷
এসিবি/এসবি (এএফপি)