মিশরে এ যুগেও উটের জকি শিশু
শিশুদের দিয়ে জোর করে বা দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে কাজ করানো অন্যায়৷ সেই অন্যায় আজও হচ্ছে মিশরে৷ সে দেশে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখনো উটের জকি হয় শত শত শিশু৷
নিষিদ্ধ করার চেষ্টা
বিভিন্ন দেশের দরিদ্র ঘরের শিশুদের নিয়ে দেয়া হয় প্রশিক্ষণ৷ তারপর তাদের তুলে দেয়া হয় উটের পিঠে৷ মরুর বুকে উট চালাতে বড়রাই যেখানে হিমশিম খায়, সেখানে শিশুদের কী অবস্থা হতে পারে তা তো বোধগম্য৷ তাই মানবাধিকার সংস্থাগুলো অনেক বছর ধরেই তুলে আসছে শিশু জকি নিষিদ্ধ করার দাবি৷ কিন্তু এখনো তা চলছে৷
যেখানে নিষিদ্ধ
ইউনিসেফ শিশুদের জকি বানানোর প্রবণতা রোখার চেষ্টা করে যাচ্ছে অনেক দিন ধরে৷ কিছু ক্ষেত্রে সফলও হয়েছে তারা৷সংযুক্ত আরব আমীরাতে শিশু জকি নিষিদ্ধের চেষ্টা শুরু করেছিল ১৯৯৩ সালে৷ অনেক আপত্তি, বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে সেখানে সাফল্যও এসেছে৷ সংযুক্ত আরব আমীরাতে ২০০২ সাল থেকে শিশুদের জকি বানানো নিষিদ্ধ৷২০০৯ সালে ৮৭৯ জন সাবেক জকিকে ক্ষতিপূরণও দিয়েছে সে দেশের সরকার৷ ২০০৫ সাল থেকে কাতারে শিশু জকি নিষিদ্ধ৷৷
মানুষের বদলে রোবট
কিন্তু শিশু জকি নিষিদ্ধ করলে দেখা দেয় জকি সংকট৷ তাছাড়া দারিদ্র্যের কারণে অনেকে স্বেচ্ছায় নিজের সন্তানকেও তুলে দেয় উটের পিঠে৷ এ অবস্থায় ২০০৭ সালে জকির সংকট এড়াতে রোবট জকি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয় কাতার সরকার৷
তবু থামছে না
তারপরও কিছু দেশে এখনো শিশুদের দেখা যায় উটের পিঠে৷ এমন দেশের তালিকায় মিশরের নামও রয়েছে৷ সে দেশে শিশু জকি নিয়ে রীতিমতো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা হয়৷ কয়েক দিন আগেই সারাবিয়াম মরুভূমিতে হয়ে গেল ১৮তম আন্তর্জাতিক উট-দৌড় উৎসব৷
অভাবে অসহায় অবুঝ শিশু
শিশু জকি দাসত্বেরই নামান্তর৷ অভাবের কারণে এ দাসত্ব স্বেচ্ছায়ও বরণ করে অনেকে৷ উট থেকে পরে আহত হওয়ার নজির ভুরি ভুরি, শিশু জকিরা অপহরণেরও শিকার হয় অহরহ – এ সব জেনেও নিজেদের শিশু সন্তানকে প্রশিক্ষকের হাতে তুলে দেয় অনেক পরিবার৷ ছবিতে এক জকি হতে আসা এক শিশু ও তার বাবা৷