মিয়ানমারে আবারো গণহত্যার আশঙ্কা
২৩ অক্টোবর ২০২১২০১৬ ও ২০১৭ সালে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের উপর নৃশংস হামলার আগে সেখানে যেভাবে সৈন্য জড়ো করা হয়েছিল একইভাবে এবার মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে সৈন্য জড়ো করা হচ্ছে৷ জাতিসংঘে জমা দেয়া এক প্রতিবেদনে মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত টম এন্ড্রুস এমন তথ্য জানিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন৷ শুক্রবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে জমা দেয়া প্রতিবেদনে তিনি দেশটিতে আরো রক্তপাত, নিপীড়ন ও নির্যাতনের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন৷
প্রতিবেদনে টম অ্যান্ড্রুস বলেন, ‘‘আরো নৃশংস অপরাধ সংগঠিত হওয়ার ব্যাপারে প্রস্তুত থাকা উচিত, যেমনটা মিয়ানমারের ওই অঞ্চলের মানুষও প্রস্তুত রয়েছেন৷ আমি খুব করে চাই যেন আমার আশঙ্কা ভুল হয়,’’ বলেন টম অ্যান্ড্রুস৷
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক বাহিনী জোরপূর্বক দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির ক্ষমতা দখল করে৷ স্থানীয় একটি গোষ্ঠীর প্রতিবেদন অনুযায়ী, তারপর থেকে এখন পর্যন্ত এগারশোর বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে৷ গ্রেপ্তার হয়েছেন আট হাজারের উপরে৷ অ্যান্ড্রুস জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের উপর ভয়াবহ নির্যাতন চালানো হয়েছে, একারণে অনেকে মৃত্যুবরণ করেছেন৷ এমনকি শিশুরাও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে৷
মিয়ানমারের মানবাধিকার বিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনে অ্যান্ড্রুস বলেন, উত্তর ও উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে লাখো সেনা ও ভারি অস্ত্র জড়ো করার তথ্য তিনি পেয়েছেন৷ যার প্রেক্ষিতে সেখানে জান্তা সরকারের সম্ভাব্য মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে৷ ‘‘এই তথ্যগুলো ২০১৬ ও ২০১৭ সালে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের উপর চালানো গণহত্যার আক্রমণের পূর্বের সামরিক সমাবেশের ভীতিকর কৌশলের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়,’’ বলেন টম অ্যান্ড্রুস৷
উল্লেখ্য নিরাপত্তা বাহিনীর দমনের শিকার হয়ে ২০১৭ সালে রাখাইন থেকে অন্তত সাত লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন৷
প্রতিবেদনে তিনি সামরিক জান্তাকে অর্থ, অস্ত্র ও বৈধতা না দিতে সব দেশের প্রতি আহ্বান জানান৷ এই চাপ অব্যাহত রাখা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি৷
সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী পাঁচ হাজারের বেশি রাজনৈতিক বন্দিকে সম্প্রতি মুক্তি দিয়েছে জান্তা সরকার৷ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ান এর সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হবে না এমন সিদ্ধান্তের কয়েকদিনের মধ্যেই এই পদক্ষেপ নেয়া হয়৷ তবে অ্যান্ড্রুস জানিয়েছেন, মুক্তিপ্রাপ্তদের কাউকে কাউকে ‘আবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে’৷
এফএস/এডিকে (এএফপি)