রোহিঙ্গারা চরম সংকটে
২৭ মার্চ ২০১৩মিয়ানমারে প্রায় ৮ লক্ষ রোহিঙ্গার বাস৷ কিন্তু মুশকিল হচ্ছে, সে দেশের সরকার তাঁদের নাগরিক বলেই গণ্য করে না৷ সংবিধানে পূর্ণাঙ্গ নাগরিকের স্বীকৃতি নেই, সরকারের কাছে রোহিঙ্গারা মূলত বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসী৷ নিজের দেশেও পরবাসী এই রোহিঙ্গা মুসলমানরা গত বছর বৌদ্ধদের হামলায় বাড়ি-ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়৷ দেশের ৮ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে সরকারি হিসেবেই এ পর্যন্ত ১ লাখ ২০ হাজার ঘরছাড়া৷ বাধ্য হয়ে তাঁরা আশ্রয় নিয়েছেন শরণার্থী শিবিরে৷
সেখানে জীবন যাপনের জন্য যা কিছু প্রয়োজন তার অনেক কিছুই পাচ্ছেননা৷ এ পরিস্থিতিতে অনেক মানবাধিকার সংস্থা তাঁদের সহায়তায় এগিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে৷ কিন্তু বাধা আসছে মিয়ানমার সরকারের তরফ থেকে৷ সাহায্য নিয়ে শরণার্থী শিবিরগুলোতে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না কাউকে৷ দীর্ঘ এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়ে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ৷ সংস্থার এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ফিল রবার্টসনের আশঙ্কা, বর্ষা শুরু হলে শরণার্থী শিবিরের আশ্রিতদের ওপর বড় রকমের বিপর্যয় নেমে আসতে পারে৷
মিয়ানমারে থেকে থেকেই শুরু হয় বৌদ্ধ আর রোহিঙ্গা মুসলমানদের দাঙ্গা৷ গত বছর তা ভয়াবহ রূপ নিয়েছিল৷ গত কয়েকদিনেও দাঙ্গায় মারা গেছে ৪০ জন৷ বৌদ্ধদের হামলায় নিহত হওয়ার পাশাপাশি শরণার্থী শিবিরেও মৃত্যুর সঙ্গে লড়তে হয় রোহিঙ্গাদের৷ আরাকান রাজ্যের অনেক শরণার্থী শিবির নিচু এলাকায়৷ অনেক ধান ক্ষেতও এখন রোহিঙ্গাদের আশ্রয়স্থল৷ এমনিতে মিয়ানমারে বর্ষা শুরু হয় মে মাসের দিকে৷ এবারও যদি তা হয় তাহলে অনেক শরণার্থী শিবিরই বণ্যায় প্লাবিত হতে পারে৷ এসব ভেবেই মিয়ানমার সরকারের প্রতি মানবিক আচরণের আহ্বান জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ৷ সবার আগে দরকার রোহিঙ্গাদের কাছে মানবিক সাহায্য নিয়ে যাওয়ার অনুমতি৷ মিয়ানমার সরকার এ অনুমতি না দিলে অনাহারে-অর্ধাহারে, রোগ-শোকে অনেক রোহিঙ্গা মারা যেতে পারে বলেও আশঙ্কা মানবাধিকার সংস্থাটির৷
এসিবি / জেডএইচ