মিয়ানমারের হিজাব পরা এক ব্লগার
নাম উইন লে ফাইয়ু সিন৷ বয়স ১৯৷ রূপচর্চার বিষয়াদি নিয়ে তিনি ব্লগিং করেন৷ হিজাব পরা এই ব্লগার প্রায়ই সমালোচনা ও বৈষম্যের শিকার হন৷
মুসলিম ব্লগার
পাঁচ কোটি মানুষের দেশ মিয়ানমারে মুসলমান মাত্র পাঁচ শতাংশ৷ অনেকদিন ধরে তাঁরা সেখানে নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন৷ নতুন মসজিদ নির্মাণের অনুমতি পাচ্ছেন না৷ বৌদ্ধ বাড়িওয়ালাদের কাছ থেকে বাসা ভাড়া পেতেও তাঁদের সমস্যা হয়৷ তেমনি এক দেশে ব্লগার হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছেন হিজার পরা তরুণী উইন লে ফাইয়ু সিন৷
বিষয় রূপচর্চা
এই বিষয়ে ভিডিও ব্লগিং করেন সিন৷ রূপচর্চার নানা বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকেন তিনি৷ ব্লগার হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার পর একটি প্রশিক্ষণকেন্দ্রও খুলেছেন৷ এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০০ জন সেখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছে৷
যেভাবে শুরু
সিন জানান, হাইস্কুলে পড়াশোনা শেষ করার পর তাঁর ছেলেবন্ধু তাঁকে একদিন মেক-আপের কিছু পণ্য উপহার দিয়েছিল৷ কিন্তু সেগুলো ব্যবহারের নিয়ম তখনো তিনি জানতেন না৷ ফলে গুগলের সহায়তা নিয়ে সেসব বিষয়ে ধারণা নিয়েছিলেন তিনি৷ পরে অন্যদের সাহায্য করতে মেক-আপ বিষয়ে পরামর্শমূলক একটি ভিডিও তৈরি করে ফেসবুকে আপলোড করেছিলেন৷ সেই থেকে শুরু৷
অনুসারী বাড়ছে
সিনের ফেসবুক পাতায়ও অনুসারীর সংখ্য প্রায় ছয় হাজার৷ এবং তা দিন দিন বাড়ছে৷ সম্প্রতি রূপচর্চা বিষয়ক পণ্যের এক অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন তিনি৷ রূপচর্চা নিয়ে ব্লগ করা অন্য ব্লগাররাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন৷ ঐ অনুষ্ঠানে হিজাব পরা ও সারা শরীর ঢাকা সিনের পোশাক আলোচিত হয়েছিল৷
‘হিজাব চাবির মতো’
হিজাব পরা নিয়ে সিনের কোনো সংকোচ নেই৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের আল্লাহ আমার জন্য অনেক রাস্তা খুলে দিয়েছেন৷ হিজাব আমার কাছে চাবির মতো৷ এটা ব্যবহার করে আমি যেখানে ইচ্ছা যেতে পারি, যা ইচ্ছা করতে পারি৷’’
সমালোচনা
ফেসবুকে অনেক সমালোচনামূলক মন্তব্য পান তিনি৷ কারণ, রক্ষণশীল মুসলমানদের কাছে মেক-আপ বিষয়টি ট্যাবু হিসেবে বিবেচিত৷ কিন্তু সিন এসব সমালোচনার জবাব দেন না৷ কারণ, এটা তাঁর কাছে শুধু সময়ের অপচয় মনে হয়৷ ‘‘আমার অনেক কাজ,’’ বলেন তিনি৷ ছবিতে সিনকে (ডানে) অন্য ব্লগারদের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে৷
বৈষম্যের শিকার
একবার এক বৌদ্ধ নারী যখন জানতে পারেন সিন একজন মুসলিম, তখন তিনি তাঁর (সিন) রূপচর্চার ক্লাস থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন৷ ছবিতে সিনকে পাঠদান শেষে বাড়ি ফিরতে দেখা যাচ্ছে৷