উত্তপ্ত মিশর
২০ জুন ২০১২গত বছর গণবিক্ষোভের মুখে ক্ষমতা থেকে অপসারণের পর ২রা জুন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসনি মুবারক৷ ফলে কারাদণ্ডের রায় ঘোষণার পর থেকে তোরা জেলখানায় ছিলেন মুবারক৷ কিন্তু মঙ্গলবার তিনি স্ট্রোক করেন৷ এরপর থেকেই তাঁকে কৃত্রিমভাবে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে রাখা হয়েছে৷ ইতিমধ্যে জেলখানা থেকে তাঁকে কায়রোর সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে৷
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা মেনা জানিয়েছে, তাঁর স্বাস্থ্যের দ্রুত অবনতি ঘটছে৷ এমনকি তাঁর হৃদযন্ত্রের স্পন্দন সাময়িকভাবে থেমে যায়৷ কৃত্রিম উপায়ে তাঁকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে৷ দেশটির ক্ষমতায় থাকা সামরিক পরিষদের সদস্য মেজর জেনারেল মোহসেন আল-ফানগারি স্বীকার করেছেন যে, মুবারক সংকটজনক অবস্থায়৷ তবে তিনি এখনও মারা যাননি বলে উল্লেখ করেন আল-ফানগারি৷ এছাড়া এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মুবারককে দেখতে হাসপাতালের ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে গিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী সুজানে৷
এদিকে, মুবারকের পতনের প্রায় ১৬ মাস পর নতুন প্রেসিডেন্ট কে হবেন তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত৷ সপ্তাহান্তে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর এখন উভয় পক্ষই দাবি করেছে তাদের বিজয়ের কথা৷ ব্রাদারহুডের দাবি, মুবারকপন্থী প্রার্থী আহমেদ শফিক পেয়েছেন ৪৮ শতাংশ ভোট এবং তাদের প্রার্থী পেয়েছেন ৫২ শতাংশ ভোট৷ নিজেদের প্রার্থীর বিজয়ের কথা ঘোষণা করে ইতিমধ্যে কায়রোর তাহরির চত্বরে নেতা-কর্মীদের সমাবেশ ঘটিয়েছে মুসলিম ব্রাদারহুড৷ সেখানে প্রায় ৫০ হাজার রাজনৈতিক নেতা-কর্মীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে৷ তারা ব্রাদারহুড মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মেদ মুরসির পক্ষে স্লোগান দিতে থাকে৷
অন্যদিকে, মুবারক শাসনামলের প্রধানমন্ত্রী আহমেদ শফিক নির্বাচনে নিজের জয় দাবি করেছেন৷ তিনি ব্রাদারহুডের বিজয়ের দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন৷ তাঁর নির্বাচনি মুখপাত্র আহমেদ সারহান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘‘জেনারেল আহমেদ শফিক ৫১.৫ শতাংশ ভোট পেয়েছেন৷ তিনিই মিশরের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট৷'' এমনকি মুরসি'র চেয়ে পাঁচ লাখ ভোট বেশি পেয়েছেন বলে দাবি শফিক শিবিরের৷ শফিকের সমর্থকরাও বিজয় উল্লাস করতে কায়রোর রাজপথে জড়ো হয়েছেন৷ তবে নির্বাচনে প্রকৃতপক্ষে কোন প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন তা বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের আনুষ্ঠানিক ফলাফলেই জানা যাবে৷ আর পহেলা জুলাই নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়ার কথা রয়েছে বর্তমান সামরিক পরিষদের৷
এএইচ / ডিজি (এপি, রয়টার্স, এএফপি)