1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মূলধারার সংবাদ মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলির স্থান

৫ নভেম্বর ২০১১

গণমাধ্যমের ধরণ এবং ভূমিকা নিয়ে আলাপ আলোচনার শেষ নেই৷ প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে গণমাধ্যমের ধরণধারণও দিন দিন পাল্টে যাচ্ছে৷ তাই প্রশ্ন উঠছে, অদূর ভবিষ্যতে কেমন হবে সংবাদ মাধ্যমের সংবাদ পরিবেশন?

https://p.dw.com/p/135Z6
ইন্টারনেটে সংবাদ আদানপ্রদানে নতুনত্ব এনেছে ফেসবুকছবি: dapd

বিগত শতাব্দীর শুরুতেও সংবাদ মাধ্যম বলতে বোঝাতো কেবল সংবাদপত্রকে৷ তার সঙ্গে যোগ হয়েছিল রেডিও৷ এরপর তাতে যোগ হয় টেলিভিশন৷ বিগত শতকের শেষ দিকে ইন্টারনেটের প্রসার ঘটলে গণমাধ্যমের ধারণাতেও আস্তে আস্তে পরিবর্তন আসতে শুরু করে৷ আর গত এক দশকে তথ্য যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিপ্লব এনে দিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ব্লগ৷ মূলত অনেক সংবাদ মাধ্যমকেই এখন তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে ঠেলে দিয়েছে ফেসবুকের মত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং টুইটারের মত মাইক্রোব্লগ৷

এইসব নিয়েই কথা বলেছিলাম ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞ জোনাথন মার্কসের সঙ্গে, যিনি দীর্ঘদিন ধরে একাধিক দেশের সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন৷ বর্তমানে তিনি ক্রস মিডিয়া জার্নালিস্ট হিসেবে কাজ করছেন৷ গবেষণা করছেন অদূর ভবিষ্যতে সংবাদ মাধ্যমের রূপ কী হতে যাচ্ছে তা নিয়ে৷ তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলাম গণমাধ্যমগুলোতে কী ধরণের পরিবর্তন তিনি দেখতে পাচ্ছেন সেটা নিয়ে৷ জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমি মনে করি মানুষ এখন ক্রস মিডিয়ার মত করে চিন্তা ভাবনা করছে৷ ধরুণ আমার একটি আইডিয়া আছে, আমি এটা বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে শেয়ার করতে চাই৷ সুতরাং আমার কী ধরণের মাধ্যম দরকার সেখানে পৌঁছার জন্য৷ আমরা টিভি, রেডিও এবং ওয়েবসাইটের একীভূতকরণ দেখতে পাচ্ছি৷ এবং একই সঙ্গে আমরা ফেসবুক, টুইটারের মত প্ল্যাটফর্মগুলোর গুরুত্বও দেখতে পাচ্ছি৷ সুতরাং টিভি কিংবা রেডিওতে যা প্রচারিত হচ্ছে সেটি ইতিমধ্যে অনলাইনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও শেয়ার করা হচ্ছে৷''

Symbolbild Wikipedia FLASH-GALERIE
তথ্যের নির্ভরযোগ্য সূত্র হয়ে উঠছে উইকিপিডিয়াছবি: picture-alliance/dpa

সম্প্রতি আরব বিশ্বে চলমান বিপ্লবের পর একটি প্রশ্ন আরও জোরদার হচ্ছে, সামাজিক যোগাযোগ সাইট কি প্রচলিত গণমাধ্যমের চেয়েও বেশি শক্তিশালী৷ অন্তত তিউনিসিয়া এবং মিশরের বিপ্লবের ক্ষেত্রে যেমনটি দেখা গেছে, প্রচলিত সংবাদ মাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞার পরও তথ্যকে আটকে রাখা যায়নি৷ জোনাথন মার্কসের মতে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইতিমধ্যেই মূলধারার সংবাদ মাধ্যমে পরিণত হয়েছে৷ তাঁর কথায়, ‘‘আমার মতে, ইতিমধ্যেই এটি মূলধারার সংবাদ মাধ্যম৷ আমি মনে করি, যেসব রেডিও কিংবা টিভি স্টেশন তার শ্রোতা এবং দর্শকদের বুঝতে পারে না তাদের চলে যেতে হবে৷ কারণ আমরা যা করছি তা হচ্ছে তাদের সামনে গিয়ে কেবল চিৎকার করা যেটা কেউই চায় না৷ কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যা করছে তা হলো তথ্য শেয়ার করা, এর মাধ্যমে আলোচনার শুরু হয়৷''

গত এক দশকেই ইন্টারনেটের কল্যাণে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে তথ্য আদান প্রদানের ক্ষেত্রে৷ বর্তমানে প্রতি মিনিটে ৪৪ ঘণ্টা ভিডিও আপলোড হচ্ছে ইউটিউবে৷ এবং দিন দিন এর পরিমাণ আরও বাড়ছে৷ এক দশক আগেও এটা কেউ কল্পনাও করতে পারতো না৷ এই কারণেই জোনাথন মার্কস জানান, আর কয়েক বছরের মধ্যে অনেক বড় পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে সংবাদ মাধ্যমগুলোতে৷ তবে এটি একেক দেশে একেক রকম হবে এবং সেটি হবে কারিগরি এবং বিষয়বস্তু উভয় ক্ষেত্রেই৷ তবে সামাজিক গণমাধ্যমের কারণেই সংবাদ মাধ্যমগুলোকে দর্শক এবং শ্রোতাদের দিকেই ঝুঁকে পড়তে হবে বলে উল্লেখ করেন মার্কস৷ বলেন, ‘‘আমার মতে, আর পাঁচ বছরের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম বলে আলাদা কিছু থাকবে না, যা থাকবে তা হলো যোগাযোগ মাধ্যম৷ আমি মনে করি রেডিও এবং টিভি স্টেশনগুলোকে যদি টিকে থাকতে হয় এবং আরও সম্প্রসারিত হতে হয় তাহলে তাদেরকে দর্শকদের জন্য বরং দর্শকদের নিয়ে অনুষ্ঠান করতে হবে৷ অর্থাৎ সেগুলো হবে দর্শকমুখী৷''

বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমগুলোও চলমান পরিবর্তনের ধারার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে৷ কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে সেটি কতটুকু যথেষ্ট বলে বিবেচ্য হবে সেটা একটি বড় প্রশ্ন৷

প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম

সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য