‘পথশিশুদের বিশ্বকাপ’
১৫ এপ্রিল ২০১৮এবার তৃতীয়বারের মতো এই বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে৷ এর আগে ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় এবং ২০১৪ সালে ব্রাজিলে এই বিশ্বকাপের আয়োজন করা হয়েছিল৷
প্রথম বিশ্বকাপের দলগুলো ছেলে আর মেয়েদের একসঙ্গে করে তৈরি করা হয়েছিল৷ পরের বিশ্বকাপে ছেলে আর মেয়েদের আলাদা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়৷ সেবার ছেলেদের বিভাগে বুরুন্ডিকে ৩-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তাঞ্জানিয়া৷ আর মেয়েদের গ্রুপে সেরা হয়েছিল ব্রাজিল৷ তারা ১-০ গোলে ফিলিপাইন্সকে হারিয়েছিল৷
পথশিশুদের অধিকার সম্পর্কে বিশ্বকে সচেতন করতে এমন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আসছে ব্রিটিশ দাতব্য সংস্থা ‘স্ট্রিট চাইল্ড ইউনাইটেড’৷ খেলার পাশাপাশি ঐ সময়ে শিশুদের অধিকার নিয়ে সম্মেলনও অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে৷
মেক্সিকো দলের আফগান প্রশিক্ষক
এবারের পথশিশু বিশ্বকাপে ভারত, ব্রাজিল, মেক্সিকোসহ ২৪টি দেশ অংশ নিচ্ছে৷ মেক্সিকোর নারী দলের প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন খালিদা পপাল৷ একসময় তিনি আফগানিস্তানের নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক ছিলেন৷ সেসময় নারী ও মেয়েদের মধ্যে ফুটবল প্রসারে কাজও করেছেন৷ কিন্তু তা করতে গিয়ে পুরুষদের বাধার মুখে পড়েছিলেন৷ পুরুষরা বলতেন, ফুটবল মেয়েদের খেলা নয়, মেয়েদের উচিত রান্নাঘরে থাকা আর বাসনকোসন ধোয়া৷ এরপর একসময় তালেবানের হুমকি পেয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন পপাল৷ এখন বাস করছেন ডেনমার্কের কোপেনহাগেনে৷ সেখানে ‘গার্ল পাওয়ার অর্গানাইজেশন’ নামে একটি সংগঠন চালু করেছেন৷ এই সংস্থা ফুটবল ও খেলাধুলার মাধ্যমে অভিবাসী, এলজিবিটি সম্প্রদায়ের মানুষসহ সংখ্যালঘুদের সমাজে ভালোভাবে ‘ইন্টিগ্রেটেড’ হতে সহায়তা করে৷ এছাড়া পথশিশুদের বিশ্বকাপের আয়োজক স্ট্রিট চাইল্ড ইউনাইটেড-এর দূত হিসেবেও কাজ করছেন পপাল৷
তাঁর এখনকার জীবনযাপনের সঙ্গে পথশিশুদের জীবনের মিল খুঁজে পান পপাল৷ ‘‘পরিবার, পরিচয়, নেটওয়ার্ক ছাড়া বাস করার মানে আমি জানি,’’ বলেন তিনি৷ প্রশিক্ষণ নেয়া মেয়েদের জন্যও পপালের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা অনুপ্রেরণা হয়ে উঠছে৷ ১৫ বছরের জাজমিন বলছে, ‘‘তাঁর (পপাল) ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা অনেকটা আমাদের মতো৷ খুবই কঠিন৷ কিন্তু তারপরও তিনি এগিয়ে গেছেন, এবং আমার মতো, ফুটবলার হতে চেয়েছেন৷’’
জাজমিনসহ প্রায় একশোর বেশি শিশুকে সহায়তা দিয়ে থাকে মেক্সিকোর বেসরকারি সংস্থা ‘কাসা আলিয়াঞ্জা’৷ এদের অনেকেই সহিংসতা, যৌন হয়রানি ও পাচারের শিকার হয়েছে৷ বিশ্বকাপে অংশ নিতে যাওয়া নারী দলের সদস্যরা এই সংস্থা থেকে সহায়তা পেয়ে থাকে৷
জাতিসংঘের হিসেবে, বর্তমানে সারা বিশ্বে প্রায় দেড়শ মিলিয়ন শিশু রাস্তায় বাস করছে৷
জেডএইচ/ডিজি (থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন)