মেয়েদের প্রাপ্য সম্মানের দাবিতে সাইকেল ভ্রমণ
৬ মার্চ ২০২০‘মায়েরা চায় শান্তি, মেয়েরা চায় সম্মান' - বোর্ডে সাঁটা সাদা কাগজে এই সহজ সরল বার্তাটি লিখে তাঁর সাইকেলের সামনে টাঙিয়েছেন সোহিনী দেব রায়৷ তারপর সেই সাইকেল নিয়ে পাড়ি দিয়েছেন ব্যারাকপুর থেকে সুন্দরবনের উপকূল অঞ্চলের কাকদ্বীপ৷ পথে যেখানেই মানুষজনের ভিড় দেখেছেন, বিশেষ করে মেয়েদের জমায়েত, সাইকেল থামিয়ে কথা বলেছেন৷ নারী-পুরুষ নির্বিশেষে বুঝিয়েছেন, সমাজে মেয়েদের সম্মান রাখা কেন, কত দূর জরুরি৷
এই সচেতনতা প্রসারের কাজটা করছেন একজন একা মেয়ে, একার চেষ্টায় এবং আত্মপ্রচারের সামান্যতম উদ্দেশ্য ছাড়াই - এই ব্যাপারটাই সোহিনীর এই উদ্যোগকে সবার নজরে এনেছে৷ স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ওঁর নামকরণ করেছে ‘সাইকেল ওম্যান'৷ প্রশংসিত হচ্ছে ওঁর এই সাহসী উদ্যোগ৷
ব্যারাকপুরের মেয়ে সোহিনী পুষ্টি বিজ্ঞানে এমএসসি করেছেন, এখন বিএড পড়ছেন৷ এর মধ্যে তাঁর বিয়েও হয়েছে বর্ধমানে৷ কিন্তু নিজের বাড়ি, বা শ্বশুরবাড়ি, কোথাও সোহিনীর এই প্রচার অভিযানে বাধা দেওয়া হয়নি, বরং উৎসাহিত করা হয়েছে৷ এবং ব্যারাকপুর থেকে কাকদ্বীপ, রাস্তার দুপাশের মানুষজনের থেকে যেরকম সাড়া পেয়েছেন সোহিনী, তাতে ভবিষ্যতে এরকম আরও যাত্রার পরিকল্পনা তিনি এখনই করছেন৷
মেয়েদের প্রাপ্য সম্মান দেওয়ার যে প্রচার নিয়ে সাইকেলে বেরিয়েছিলেন, যাত্রাপথেই তার সাফল্যের স্বাদ মিলেছে৷ কোনও প্রবীণ মানুষ তাঁকে পুষ্টিবর্ধক গ্লুকোজ পাউডার কিনে দিয়েছেন, তো কোনও কমবয়সি ছেলেকে রাস্তার হদিশ জিজ্ঞেস করলে সে বলেছে, বসে একটু চা খেয়ে, একটু জিরিয়ে যাও৷
আরও একটা ভাল ব্যাপার ঘটেছে৷ গ্রাম বাংলার কমবয়সি মেয়েরা সোহিনীকে সাইকেলে সওয়ার হতে দেখে খুব উৎসাহিত৷ তারা নিজেদের বাড়িতে বলেছে, এবার থেকে তারাও সাইকেলেই স্কুল বা অন্যত্র যাতায়াত করবে৷ মেয়েদের স্বাধীনচেতা এবং স্বাবলম্বী হওয়ার পাঠ তাদেরকে দিয়েছে সোহিনীর সাইকেল এবং সোহিনীর সাহস৷