‘এমন কাপড় চাইনা’
৬ মে ২০১৪ভারতে ধর্ষণ বেড়ে যাওয়ায় কেউ কেউ কারণ হিসেবে মেয়েদের সংক্ষিপ্ত এবং উদ্দীপক পোশাকের কথা বলেছিলেন৷ এমন বক্তব্য তো মানবাধিকারে শ্রদ্ধা আছে এমন কোনো মানুষ সমর্থন করতে পারেননা৷ কেউ তা করেছেন বলে জানাও যায়নি৷ তবে হংকংয়ের ক্যাথে প্যাসিফিক এয়ারওয়েজের ফ্লাইট অ্যাটেন্ডেন্টরা অবাক করেছেন৷ লিখিতভাবেই তাঁরা জানিয়েছেন, ২০১১ সাল থেকে তাঁদের যে পোশাক পরতে দেয়া হচ্ছে তা খুবই সংক্ষিপ্ত এবং আঁটসাঁট, যৌন নিপীড়ন এড়াতে চান বলে এমন পোশাক তাঁরা পরতে নারাজ!
খোদ ক্যাথে প্যাসিফিক এয়ারওয়েজ ফ্লাইট অ্যাটেন্ডেন্ট ইউনিয়ন (এফএইউ)-ই জানিয়েছে এ খবর৷ সংগঠনটি জানায়, এয়ারওয়েজের মেয়ে ফ্লাইট অ্যাটেন্ডেন্টদের বিমানে যে পোশাক পরতে দেয়া হয়, তার ওপরের অংশ, অর্থাৎ ব্লাউজটা খুবই ছোট৷ ফলে নিচু হয়ে কাজ করতে গেলেই বক্ষদেশ উন্মোচিত হয়ে যায়৷ আবার পোশাকের নীচের অংশ, অর্থাৎ স্কার্টটা এত আঁটোসাঁটো যে শরীরের ঢেকে রাখা অনেক অংশের উপস্থিতিই বাইরে থেকে অনুমান করা যায়৷ এ অবস্থায় ফ্লাইট অ্যাটেন্ডেন্টদের দাবি, এমন পোশাক থেকে তাঁদের ‘রেহাই' দেয়া হোক৷ তাঁদের আশঙ্কা, এমন পোশাক পরলে যৌন নিপীড়ন বেড়ে যাবে৷
তাঁদের এ আশঙ্কা যে অমূলক নয়, তা পরিষ্কার হয়ে গেছে চীনের সমান অধিকার কমিশনের একটি জরিপ৷ জরিপ বলছে, গত এক বছরে ক্যাথে প্যাসিফিকের অন্তত ২৭ ভাগ ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন৷ এ জরিপে ৩৯২জন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট অংশ নিয়েছেন৷ তাঁদের শতকরা ৮৬ ভাগই নারী৷
এদিকে নারী ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টদের কাছ থেকে পোশাক নিয়ে অসংখ্য আপত্তিপত্র পাবার পর এফএইউ-ও ক্যাথে প্যাসিফিক কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছে৷ বেশি কিছু তো চাওয়া হচ্ছে না৷ কেউ পোশাকের ডিজাইন বদলানোর কথা বলেননি৷ সবাই চান, ব্লাউজটা একটু বড় করা হোক, যাতে বক্ষযুগল ঢেকে রাখা যায়, আর স্কার্টটা একটু ঢিলেঢালা হোক, যাতে কোমরের নীচের সবকিছু কাঙ্খিত মাত্রায় অদৃশ্য থাকে৷
এফএইউ-এর অনুরোধের পর বিমান কর্তৃপক্ষেরও টনক নড়েছে৷ চীনের ইংরেজি দৈনিক মর্নিং পোস্ট-কে ক্যাথে প্যাসিফিক বলেছে, ‘‘আমরা কোনো ধরনের নিপীড়নই বরদাশত করিনা৷ যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে আমরা খুব কঠোর৷ এই পোশাকে অস্বস্তি বোধ করলে ক্রু-রা যে কোনো সময় এসে বদলে নিতে পারেন৷''
এসিবি/এসবি (এএফপি)