মোকা আসার খবরে বাঁধ মেরামত শুরু
১২ মে ২০২৩ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে বরিশাল বিভাগে প্রায় ১০০ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল৷ পুরোপুরি মেরামত করা নাহলেও জরুরি মেরামতের অংশ হিসেবে তখন বালুর বস্তা ফেলা হয়৷ এতে এবারের শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা' নিয়ে আতঙ্কে উপকূলের মানুষ৷ পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভোলা ও পটুয়াখালীর বিভিন্ন স্থানে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ মেরামত শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)৷
ঘূর্ণিঝড়ের আগ মুহূর্তে মেরামত কতটুকু কাজে লাগবে তা নিয়ে উপকূলবাসী উদ্বিগ্ন৷ তাদের দাবি স্থায়ী, শক্ত ও বেশি উঁচু বাঁধ৷
ভোলার সদর উপজেলার তুলাতলিতে মেঘনা নদীর তীরের বাসিন্দা নূরজাহান বেগম জীবনে বেশ কয়েকবার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছেন৷ তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘‘জীবনে সাতবার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছি৷ এখন বাঁধের পাড়েই বাসা৷ ঝড় নিয়ে ভয় করে আর কী হবে৷ সময় হলে আশ্রয় কেন্দ্রে যাব৷''
বাঁধের পাড়ের আরেক বাসিন্দা ইব্রাহিম বলেন জানান, ‘‘ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধে প্রাণ হাতে নিয়ে বসবাস করছি৷ যে কোনো সময় বাঁধ ভেঙে তলিয়ে যেতে পারে৷''
শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাউবোর বাঁধের বিভিন্ন স্থানে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে৷ স্থানীয়রা জানান, ভোলার অন্তত শতাধিক চর আছে, যেগুলো অল্প জোয়ারেই ছয়-সাত ফুট প্লাবিত হয়৷
পাউবো ভোলা বিভাগ-১ এর দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘‘এই বিভাগে ১৬৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ আছে৷ সিত্রাংয়ের সময় কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল৷ এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ৫৩৪ মিটার বাঁধ মেরামত করা হচ্ছে৷''
ভোলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসাইন জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকায় জরুরি সাড়াদানের জন্য জেলার ৭৪৬টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে৷
ভোলার ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির উপপরিচালক আবদুর রশিদ জানান, জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় জেলায় ১৩ হাজার ৬০০ স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত আছে৷
এদিকে, পটুয়াখালী জেলায় বাঁধ আছে এক হাজার ৩৩৫ কিলোমিটার৷ এর মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ১৮ কিলোমিটার৷৷
এ তথ্য নিশ্চিত করে পাউবো পটুয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘‘কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নে প্রতি বছরই বাঁধ ভাঙে৷ এ কারণে ওই এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে৷''
বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ডেইলি স্টারকে জানান, জেলায় ৫৪১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত আছে৷ এ ছাড়া নগদ নয় লাখ টাকা ও ৮৯০ টন জিআর চাল বরাদ্দ হয়েছে৷
সংশ্লিষ্টরা জানান, মোকা মোকাবিলায় বরিশাল বিভাগে প্রস্তুত আছে ৩২ হাজার ৫০০ জন স্বেচ্ছাসেবক৷
পাউবো বরিশাল বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তর সূত্র জানায়, বিভাগে বাঁধের ১৭৪টি পয়েন্টে উচ্চ ঝুঁকিতে আছে৷ এসব ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে৷
জেকে/জেডএইচ (দ্য ডেইলি স্টার)