ম্যান্ডেলার জন্মদিনে চাই ৬৭ মিনিট
১৮ জুলাই ২০১০জীবনের ৬৭ বছর তিনি উৎসর্গ করেছিলেন রাজনীতির কাজে৷ তাঁর এই অবদান এনে দিয়েছে এমন যুগান্তকারী এক পরিবর্তন, যার প্রভাব গোটা বিশ্বেই ছড়িয়ে পড়েছে৷ দৈনন্দিন জীবনের ব্যস্ততা সরিয়ে রেখে বিশ্বনেতা থেকে শুরু থেকে সাধারণ মানুষ রবিবার ৬৭ মিনিট জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করার অঙ্গীকার করেছেন৷ ২০০৮ সালে ম্যান্ডেলা গোটা বিশ্বের বয়স্ক ও বিচক্ষণ নেতাদের নিয়ে ‘দি এলডার্স' নামের এক গোষ্ঠী তৈরি করেছিলেন৷ সেই গোষ্ঠীর প্রধান ফিনল্যান্ডের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মার্তি আখতিসারি বলেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট ম্যান্ডেলা জীবনের ৬৭ বছর উৎসর্গ করেছেন৷ এখন আমরা মাত্র ৬৭ মিনিট ব্যয় করে বিশ্বে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার চেষ্টা করতে পারি৷'' প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার বলেন, ‘‘নেলসন ম্যান্ডেলা আমাদের এক অসাধারণ সুযোগ ও দায়িত্ব দিয়েছেন, যাতে আমরা ম্যান্ডেলা দিবসে সক্রিয়ভাবে কোনো ইতিবাচক কাজ করতে পারি৷''
২০০৯ সালে জাতিসংঘ এই দিনটিকে ‘নেলসন ম্যান্ডেলা আন্তর্জাতিক দিবস' হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে৷ আজই প্রথম গোটা বিশ্বে এই দিবসটি পালিত হচ্ছে৷ যাঁকে ঘিরে এই উচ্ছ্বাস, তিনি নিজে দিনটি কীভাবে কাটাচ্ছেন? অশীতিপর এই মানুষটি জোহানেসবার্গে নিজের বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গেই সময় কাটাচ্ছেন৷ তাঁর জন্মভিটের গ্রামের এলাকা থেকে ১০০ শিশু তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছে৷ ম্যান্ডেলার স্ত্রী গ্রাসা মাচেল বলেন, ‘‘ম্যান্ডেলা বেশ ভাল আছেন৷ তাঁর স্বাস্থ্যের অবস্থা ভালো৷ বয়স হচ্ছে, কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছেন বটে, কিন্তু শারীরিকভাবে খুব ভালো আছেন তিনি৷''
দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে কারাবাস করে ১৯৯০ সালে মুক্তি পেয়েই ম্যান্ডেলা বর্ণবাদী সরকারের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন, যার ফলে জন্ম নেয় এক মুক্ত গণতান্ত্রিক দক্ষিণ আফ্রিকা৷ ঘৃণা, বিদ্বেষ, প্রতিশোধ স্পৃহা নয় – গণতান্ত্রিক আদর্শের প্রতি অটুট বিশ্বাস ও প্রখর দূরদৃষ্টির মাধ্যমে তিনি অতি অল্প সময়ের মধ্যেই সমাজে বিভাজন অনেকটাই দূর করতে সমর্থ হন৷
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিন্টন ম্যান্ডেলাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘‘তাঁর কাহিনীর মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে অসাধারণ শক্তি ও চারিত্রিক দৃঢ়তার দৃষ্টান্ত৷'' গোটা বিশ্বের সব স্তরের মানুষের কাছে তিনি নায়ক হয়ে উঠেছেন বলে মন্তব্য করেন ক্লিন্টন৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: জাহিদুল হক