ম্যার্কেল নয় স্টাইনব্রুক
২ সেপ্টেম্বর ২০১৩আগামী ২২শে সেপ্টেম্বর নির্বাচন হবে জার্মানিতে৷ তিন সপ্তাহও বাকি নেই৷ এ অবস্থায় উপ-মহাদেশে রাজনীতির মাঠের উত্তেজনা জনজীবনেও যেমন প্রভাব ফেলে, তার লেশমাত্রও জার্মানিতে নেই৷ জনজীবনে কোনো রকমের বিঘ্ন না ঘটিয়েই চলছে প্রচার৷ ২০০২ সাল থেকে নির্বাচনি প্রচারের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ টেলিভিশনের পর্দায় দুই প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর সরাসরি বিতর্ক৷ রোববার সেই বিতর্কে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল মুখোমুখি হয়েছিলেন সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট (এসপিডি) পেয়ার স্টাইনব্রুকের৷ তিনি এসপিডির শীর্ষ নেতা না হলেও, আসন্ন নির্বাচনে তিনিই এসপিডির মনোনীত চ্যান্সেলর পদের প্রার্থী৷ তাই সামাজিক গণতন্ত্রীদের হয়ে তিনিই নির্বাচনি প্রচারণার নেতৃত্ব দিচ্ছেন৷ মজার তথ্য হলো, এখন প্রতিপক্ষ হলেও এক সময় ম্যার্কেলের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়েই কাজ করেছেন স্টাইনব্রুক৷ ২০০৫ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত যে জোট সরকার ছিল, সেখানে চ্যান্সেলর ম্যার্কেলের অধীনেই অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন তিনি৷
সেকারণে এবারের বিতর্ক পেয়েছে বাড়তি মাত্রা৷ জার্মানির চারটি টেলিভিশন চ্যানেলে সরাসরি প্রচারিত তর্কযু্দ্ধেও উঠে এসেছিল সেই প্রসঙ্গ৷ স্টাইনব্রুক আগেই জানিয়ে রেখেছেন আর কখনো তিনি ম্যার্কেলের অধীনে কাজ করবেন না৷ আর ম্যার্কেলও জানিয়েছেন যে, তিনিও আদতে জোটসরকার চান না, যদি না সেটা অবশ্যম্ভাবী হয়ে ওঠে৷ তাই এসপিডির পক্ষ থেকে নির্বাচনের আগেই জোটসরকারের ভাবনাকে নিরুৎসাহিত করার সমালোচনাই করেছেন তিনি, বলেছেন, ‘‘এসপিডির (জোটসরকার) না চাওয়ার কারণটা হাস্যকর৷ তারা মনে করে সেটা তাদের দলের জন্য খারাপ হবে৷ অথচ সবার আগে দেশের কথা ভাবা উচিত৷''
স্টাইনব্রুক এবারই প্রথম বড় আঙ্গিকে নির্বাচনি প্রচারে আসার সুযোগ পেলেন৷ আট বছর ধরে চ্যান্সেলর থাকার সুবাদে ম্যার্কেল সেই সুবিধা বরাবরই উপভোগ করে আসছেন৷ তবে এরপরও প্রথম সুযোগটাকে কাজে লাগাতে চেষ্টার ত্রুটি করেননি স্টাইনব্রুক৷ দেশের অভ্যন্তরীণ নানা বিষয়ের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারনেটে আড়িপাতার বিষয়টি তুলে সেবিষয়ে ম্যার্কেল সরকারের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেন তিনি৷ জবাবে ম্যার্কেল মুখে হাসি ছড়িয়ে শুধু বলেন, ‘‘আমি কাজ করার পর ভাবিনা৷ আমি ভেবে কাজ করি৷''
গ্রিসের প্রসঙ্গ নিয়েও বিরোধ দেখা গেছে দু'জনের মধ্যে৷ ভিন্নতা দেখা গেছে স্বাস্থ্যখাত, বীমা, কর্মবাজার, বেকারত্ব প্রভৃতি বিষয়গুলিতেও৷ তবে সিরিয়া প্রসঙ্গে দু'জনেরই এক কথা৷ ম্যার্কেল এবং স্টাইনব্রুক কেউই যুদ্ধক্ষেত্রে জার্মান সৈন্য পাঠানোর পক্ষে নন৷
বিতর্ক কতটা জমজমাট হয়েছিল তা বোঝা যাবে জরিপের ফলাফলে৷ আগের জরিপে স্টাইনব্রুকের দল এসপিডি ম্যার্কেলের খ্রিষ্টীয় গণতান্ত্রিক ইউনিয়ন (সিডিইউ)-এর চেয়ে অনেক পিছিয়ে থাকলেও বিতর্কের ফলাফলে দু'জন ছিলেন সমানে সমান৷ জেডডিএফ চ্যানেলের জরিপ বলছে, ম্যার্কেল জিতেছেন৷ অন্যদিকে এআরডি-র জরিপে অংশ নেয়া বেশির ভাগ দর্শক মনে করেন এ বিতর্কে স্টাইনব্রুকেরই বেশি লাভ হয়েছে৷
এসিবি/ডিজি (ডিপিএ/রয়টার্স)