যাত্রী-পর্যটকদের অবকাশকে মধুর করতে শিফল বিমানবন্দর লাইব্রেরি
২১ নভেম্বর ২০১০আমস্টারডামের শিফল বিমানবন্দরে দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থাকা যাত্রী, আর ভ্রমণেচ্ছু পর্যটকদের জন্য গৃহীত এই উদ্যোগটি এক কথায় অনবদ্য৷ আপনি চাইলেই বিমানের জন্য অপেক্ষার সময়টুকু আমস্টারডামের এই বিমানবন্দরের পাঠাগারটিতে ঢুঁ মারতে পারছেন৷ চাই কি খানিক মাল্টিমিডয়াতেও চোখ রাখতে পারবেন৷
হল্যান্ড নিবাসী ডিক ফান টোলের এ এখন নিত্যদিনের কাজ, যা তিনি গর্বের সঙ্গেই করে থাকেন৷ টেবিলের এলোমেলো বইগুলো গুছিয়ে রাখা, রঙিন সব আসন যা যাত্রীরা বসে উঠে যাওয়ার পর খানিক এলোমেলো, সেসব গোছানো৷ শিফলের ভেতরে চালু এই লাইব্রেরিতে বসে বই পড়া আর বই ঘাঁটা এ দুইয়েরই সুযোগ পাবেন আগত কিংবা ফিরতি পথের বিমান-যাত্রী এবং পর্যটকরা৷
এটি আমস্টারডামের শিফ্যল বিমানবন্দরের একটি চমৎকার উদ্যোগ৷ এমনিতেই প্রচন্ড ব্যস্ত থাকে এই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি৷ দফায় দফায় বিমানের ওঠা-নামা চললেও দুরের যাত্রীদের অনেকটা সময়ই অলসভাবে অপেক্ষা করতে হয় শিফ্যলে৷ যেমনটি অন্যান্য বড় বিমানবন্দরগুলোতে কিম্বা ট্রানজিট নেওয়া যাত্রীদের বেলায় ঘটে থাকে৷ আন্তর্জাতিক ট্রানজিটের যে জায়গাটি, লাইব্রেরিটি গড়ে উঠেছে ঠিক সেখানটিতেই৷ ডাচ সংস্কৃতিকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে একটা আস্ত বুলেভার্ডই যেন সাজিয়ে চমৎকার একটি লাইব্রেরিতে রূপ দেওয়া হয়েছে৷
শিফলে আসা সব যাত্রী আর ভ্রমণেচ্ছু পর্যটকদের আসা যাওয়ার পথে কিছু বই তারা এখান থেকে ধার নিয়ে যাবেন আবার ফিরতি পথে তা ফিরিয়ে দিয়ে যাবেন- কেমন হয় এমনটি হলে৷ এধরণের একটি সাদামাটা উদ্যোগ থেকেই এর শুরু৷ ব্যস যেই ভাবা সেই কাজ, উনত্রিশটি ভাষার বারোশো বই নিয়ে এর যাত্রা শুরু এরপর ক্রমশ সেই আয়োজন বড় আকারে আজকের এই সুবিশাল লাইব্রেরিতে রূপ নিয়েছে৷ আলোকচিত্র সংক্রান্ত বই থেকে শুরু করে কৃষি, পর্যটন, ইতিহাস অথবা ফিকশন কি নেই সেখানে৷ বিমানবন্দরে আগতরা পর্যটক আর যাত্রীরা চাইলেই এখন উজ্জ্বল কমলা আর বেগুনি রঙের আসনে বসে এই বইয়ের সমুদ্র অবগাহন করতে পারবেন৷
সেই ফান টোল, যিনি রোজ এই লাইব্রেরি আবারো সাজিয়ে গুছিয়ে রাখেন৷ এর দেখ-ভাল করছেন৷ তিনি বলেছেন, কমবেশি ১৮ মিলিয়ন মানুষ বছরে এই বিমানবন্দরটি ব্যবহার করে থাকেন আসা যাওয়া আর ট্রানজিটের জন্য৷ তাঁরা এই বিমানবন্দরে হল্যান্ড সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণাই পেতেন না৷ তাই আমরা এর মধ্যে একটি স্থায়ী আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজনও করেছি৷ এখানে আগত সবাই এখন এদেশ সম্পর্কে জানারও একটি সুযোগ পাবেন৷
এইই শেষ নয়৷ রয়েছে আরো অনেক কিছুই৷ মাল্টিমিডিয়ার একটি জমপেশ আয়োজনও কর্তৃপক্ষ এখানে হাজির করেছেন৷ সারি সারি আইপ্যাডে যে কেউ চাইলেই এখন ডাচ সংগীতের সুরসুধা আর ইচ্ছেমত ভিডিও দেখার সুযোগ পাবেন৷ আর হ্যাঁ, বাচ্চাদের জন্যও কিন্তু রয়েছে আকর্ষণীয় নানান বই-পত্র৷ আর কে না জানে, বাচ্চারা একদমই অপেক্ষা সইতে পারে না৷ তাদের মজিয়ে রাখার এ এক চমৎকার আয়োজনই বটে৷
প্রতিবেদন: হুমায়ূন রেজা
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক