‘যাদের আছে এবং যাদের নেই - তাদের মধ্যে সমন্বয় করছে বি-স্ক্যান’
২৫ অক্টোবর ২০১১ছোটবেলায় পোলিওতে আক্রান্ত হন সালমা মাহবুব৷ এরপর বাংলাদেশের আরো দশটি প্রতিবন্ধী মেয়ের মতো সালমাও চার দেয়ালে আটকা পড়ে যান৷ ঘর থেকে তেমন একটা বের হতেন না তিনি৷ মেধাবী মেয়ে সালমা৷ কিন্তু সেই মেধা কাজে লাগানোর খুব একটা সুযোগ তিনি অনেক দিন পাননি৷
২০০৭ সালে সালমা'র জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয় ইন্টারনেট৷ কম্পিউটারের ছোট্ট মনিটর তাঁকে বাইরের জগতের সঙ্গে পরিচয় করে দেয়৷ সেই জগতেই পরিচয় সাবরিনা সুলতানা'র সাথে৷ প্রতিবন্ধী মানুষদের জন্য কাজ করতে আগ্রহী ছিলেন দু'জনই৷ অবশেষে ২০০৯ সালের ১৭ জুলাই ফেসবুকে একটি ছোট্ট গ্রুপ তৈরি৷ ব্যস, শুরু হলো দুই প্রতিবন্ধী নারীর সংগ্রাম৷ অধিকার আদায়ের সংগ্রাম, সমাজে সচেতনতা তৈরির সংগ্রাম৷
সালমা মাহবুব এই প্রসঙ্গে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ফেসবুকে সাবরিনার সঙ্গে আমার পরিচয় হয়৷ তখন সে প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য কাজ করতে আমাকে অনুরোধ জানায়৷ আমিও এরকম একটা কিছু ভাবছিলাম৷ মানুষের জন্য কিছু একটা করার ইচ্ছা আমার সবসময়ই ছিল''৷
সালমা মাহবুব এবং সাবরিনা সুলতানা'র প্রতিষ্ঠিত সংগঠনের নাম ‘বাংলাদেশি সিস্টেমস চেঞ্জ এ্যাডভোকেসি নেটওয়ার্ক' বা বি-স্ক্যান৷ এই সংগঠনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে প্রতিবন্ধী মানুষের মৌলিক মানবিক অধিকার সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা এবং একই সঙ্গে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকেও এই অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে তোলা৷ সালমা মাহবুব বলেন, ‘‘বি-স্ক্যানের কাজ হচ্ছে যাদের আছে এবং যাদের নেই - তাদের মধ্যে একটি সমন্বয় তৈরি করা৷ অনেকেরই টাকা আছে, অনেকের শিক্ষা দেওয়ার ক্ষমতা আছে, চাকুরি দেওয়ার ক্ষমতা আছে৷ আমরা যদি এই তিনটি দলকে একত্রিত করতে পারি, তবে কাজটি খুব একটা জটিল নয়''৷
তিনি বলেন, ‘‘আমরা যখন কাউকে হুইল চেয়ার দিচ্ছি, তখন আমাদেরকে সহায়তা করছে রোটারি ক্লাব৷ আবার আমরা কাউকে চিকিৎসা করাতে চাইলে বা কাউকে আর্থিক সহায়তা দিতে চাইলে ব্লগে লেখি৷ এবং ব্লগাররা এগিয়ে আসছেন''৷
ইতিমধ্যে দুই বছর অতিক্রম করেছে বি-স্ক্যান৷ দুই নারীর শুরু করা সংগ্রামে এখন সৈনিক অনেক৷ ক্রমশই প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার আদায়ের এক শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠছে বি-স্ক্যান৷
সংগঠনটি সম্পর্কে আরো জানতে ভিজিট করুন: http://b-scan.org/
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন