যুক্তরাজ্য বাংলাদেশকে ৯৩ মিলিয়ন ইউরো সহায়তা দেবে
১০ সেপ্টেম্বর ২০০৮লন্ডনে দু দেশের মধ্যে চলমান জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সম্মেলন-এ এই সহায়তা দেয়ার কথা জানালেন যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন মন্ত্রী ডগলাস আলেক্সান্ডার৷
যৌথ সম্মেলনে দু দেশের পক্ষ থেকেই এই মত জানানো হয় যে জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতে হলে আগামী বছরের কোপেনহাগেন সম্মেলনে সকলকে একটি ঐকমত্যে পৌছতে হবে৷ বিশেষ করে ডগলাস আলেক্সান্ডার সকলকে মনে করিয়ে দিয়েছেন যে কার্বন নির্গমন ও জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতে না পারলে বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষ বিপন্ন হয়ে পড়বে৷
ডগলাস বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন এখন একটি সংকটে পরিণত হয়েছে৷ এটি আর ভবিষ্যতের কোন ঝুঁকির বিষয় নয়৷ এবং এটি ইতিমধ্যেই বাংলাদেশকে আক্রান্ত করতে শুরু করেছে৷ যদিও পরিস্থিতি ঠেকাতে বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে তবুও ডগলাস আলেক্সান্ডার এজন্য আন্তর্জাতিক উদ্যোগের ওপর বেশী জোর দিয়েছেন৷
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষয়ক্ষতি ঠেকাতে ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উন্নত দেশগুলোর কাছে সহায়তা চাওয়া হয়েছে৷ কারণ বাংলাদেশ মনে করে ব্যাপক হারে কার্বন নির্গমনের কারণে যেভাবে জলবায়ু বদলে যাচ্ছে তার জন্য উন্নত দেশগুলোই দায়ী যার ফলভোগ করতে হচ্ছে বাংলাদেশের মত নিম্নভুমির দেশগুলোকে৷
পরিবেশবিদদের আশংকা, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আগামী বছরগুলোতে বাংলাদেশে বন্যা ও ঘুর্ণিঝড়ের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ আরও বাড়বে৷ গত বছর বন্যা ও ঘুর্ণিঝড়ে সেখানে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছিলো ২৮০ কোটি ডলার যা দেশটির জিডিপির চার শতাংশ৷
বাংলাদেশের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব এএইচএম রেজাউল কবির বলেছেন, যেভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়ে চলেছে তা সামলাতে আমাদেরকে আরও বেশী করে বাঁধ ও আশ্রয় কেন্দ্র সহ নানা অবকাঠামো তৈরী করতে হবে৷ এজন্য ২০২০ সালের মধ্যে কমপক্ষে ৪০০ কোটি ডলারের প্রয়োজন৷ আমরা মনে করি কার্বন নির্গমনের জন্য দায়ী দেশগুলো আমাদেরকে ক্ষতিপুরণ হিসেবে এ অর্থ দেবে৷ কারণ আমাদের প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য তারাই দায়ী, বলেছেন তিনি৷
এদিকে কেবল বিদেশী সহায়তা নয় নিজ উদ্যোগেও জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষয়ক্ষতি ঠেকানোর চেষ্টা করছে বাংলাদেশ৷ বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যে চার কোটি ৪০ লাখ ডলারের একটি তহবিল গঠন করেছে এ বিষয়ে৷
প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের ইন্টার গভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ বা আইপিসিসির তথ্যমতে আগামী ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের ১৭ ভাগ ভুমি সমুদ্রে তলিয়ে যাবে৷ এর ফলে দুই কোটি লোক পরিবেশ উদ্বাস্তুতে পরিণত হওয়ার আশংকা রয়েছে৷