যুক্তরাষ্ট্রে গৃহহীনদের দুরবস্থা
২৮ মার্চ ২০২০নিয়মিত হাত ধোয়া, বাড়িতে থাকা, মানুষের ভিড় থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা ইত্যাদি সতর্কতাগুলি সম্পর্কে আমরা সকলেই জানি৷
তবে কারো থাকার জায়গাটি যদি বাড়ি না হয়ে তাঁবু হয়, যেখানে পানির ব্যবস্থা নেই, অনেকের সাথে পাশাপাশি বিছানায় ঘুমাতে হয়, দিনে মাত্র একবার গরম খাবারের ব্যবস্থা থাকে, তাদের কী হবে?
হ্যাঁ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গৃহহীন মানুষরা এখন এমন কঠিন পরিস্থিতিরই মুখোমুখি৷
মেট্রোপলিটন ওয়াশিংটন কাউন্সিল অফ গভর্নমেন্টের এক সমীক্ষায় প্রকাশ, ২০১৯ সালে বৃহত্তর ওয়াশিংটন ডিসির গৃহহীন মানুষের সংখ্যা ছিল ৯৭৯৪ জন ৷ তাদের মধ্যে বিপুল সংখ্যক ব্যক্তি আরো বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন করোনার ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পরে৷
গৃহহীনদের মধ্যে অনেক বয়স্ক মানুষ রয়েছেন, তাদের মধ্যে আবার অনেকেই প্রতিবন্ধী, অনেক মানুষ একসাথে রাস্তায় বাস করেন, তাদের নেই কোনো স্যানিটেশন ব্যবস্থা৷ যাদের বয়স বেশি, দুর্বল স্বাস্থ্য, প্রতিবন্ধী, নিঃসন্দেহে তাদের করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি অনেক বেশি৷ ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স টু এন্ড হোমলেসনেসে তথ্যটি প্রকাশ পায়৷
ওয়াশিংটনের আইনজীবী অ্যাম্বার হার্ডিং গৃহহীনদের নানা সমস্যা সমাধানে টেলিফোনে তাদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন৷ এখন তিনি করোনা সমস্যার মোকাবিলা নিয়ে তাদের সাথে ফোনেই আলোচনা করছেন৷
বলা বাহুল্য, অন্য সময় গৃহহীনদের আশ্রয়স্থল পাওয়ার জন্য যেমন আমলাতান্ত্রিক জটিলতার মুখোমুখি হতে হতো, এখন তা হচ্ছে না৷ জায়গা পাওয়ার আগে তাদের পরিচয়পত্র ও অন্যান্য কাগজপত্র ছাড়াও নানা বিষয় প্রমাণ করতে হতো৷ কিছুটা হলেও সুখের কথা, করোনা সংকটের সময় সেসবের প্রয়োজন হচ্ছে না৷ হার্ডিং জানালেন, এখন সবকিছু টেলিফোনে কথোপকথনের মাধ্যমেই চলছে৷
তাছাড়া ওয়াশিংটন ডিসি গৃহহীনদের জন্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে৷ তার মধ্যে প্রধান পদক্ষেপ হচ্ছে তাদের উচ্ছেদ রোধ করা৷এ ব্যাপারে ওয়াশিংটনের মেয়র জনস্বাস্থ্য বিষয়ক জরুরি অবস্থা জারি করেছেন৷ এর ফলে করোনা সংকটের সময়ে কাউকে জোর করে রাস্তায় বের করে দেওয়া যাবে না৷ যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন এটি যথেষ্ট নয়৷ কারণ করোনা সংকট কেটে গেলে সকলকেই আবার বাড়ি ভাড়া দিতে হবে, এমনকি যারা সরকারের কাছ থেকে সাহায্য পায় বা জরুরি অবস্থার কারণে চাকরিও হারায়, তাদেরও কিন্তু বাড়ি ভাড়া দিতেই হবে৷ অন্যথায় বাড়ি ছাড়তে হবে৷ জানান, আইনজীবি হার্ডিং৷
নিউ ইয়র্ক সিটিতেও গৃহহীনরা করোনা ভাইরাসের শিকার হয়েছে৷ আইনজীবি হার্ডিং এ ব্যাপারেও উদ্বিগ্ন৷
কার্লা ব্লাইইকার/এনএস