যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকবিরোধী মিছিলে হাজারো মানুষ
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ফ্লোরিডায় বন্দুকধারীর গুলিবর্ষণের ঘটনায় নিহতদের স্বজন, ঐ স্কুলের শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকসহ সাধারণ মানুষ শনিবার ফোর্ট লডেরডেলে এ বিক্ষোভ মিছিল করে৷ অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন পরিবর্তনের দাবি জানান তারা৷ গত বুধবার ফ্লোরিডার পার্কল্যান্ড শহরের কাছে একটি স্কুলে বন্দুক নিয়ে ঢুকে পড়ে এক প্রাক্তন ছাত্র৷ তার ছোড়া এলোপাথাড়ি গুলিতে প্রাণ হারায় ১৭ জন৷
ঐ স্কুলের শিক্ষার্থী এমা গনজালেস বলেন, ‘‘তারা (রাজনীতিবিদরা) বলে একজন ভালো ছেলে একটা খারাপ ছেলের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে বন্দুকের মাধ্যমে, কারণ, খারাপ ছেলেদের হাতে বন্দুক থাকে৷ এটা কোনো নীতি হতে পারে না৷'' পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও ধিক্কার দেন তিনি৷ এমা যখন বলতে থাকেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শেম অন ইউ' বিক্ষোভকারীদের সবাই তার সাথে গলা মেলান৷ এইসময় এমা প্রশ্ন তোলেন, ‘‘১৯ বছরের যে প্রাক্তন ছাত্রটি (নিকোলাস ক্রুজ) এই ঘটনা ঘটিয়েছে, সে মানসিকভাবে অসুস্থ বলেই সবাই জানতো, তাহলে সে কীভাবে এআর-১৫ সেমি অটোমেটিক রাইফেল কেনার বৈধতা পায়?''
এফবিআই'র ভুল স্বীকার
এফবিআই জানিয়েছে, নিকোলাস ক্রুজের কর্মকাণ্ডের আভাস তারা পেয়েছিলেন, কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন৷ জানুয়ারি মাসে ক্রুজের ঘনিষ্ট একজন এফবিআইকে ফোন করে জানিয়েছিল ক্রুজের কাছে অস্ত্র আছে এবং তার আচরণ ভীষণ অস্বাভাবিক৷ কিন্তু সংস্থাটি ঐ ব্যক্তির কথায় গুরুত্ব দেয়নি৷ এফবিআই স্বীকার করেছে যে, তারা এই তথ্যগুলো স্থানীয় মিয়ামি পুলিশ কর্মকর্তাদের জানায়নি, জানালে হয়ত ক্রুজকে আগেই আটকানো যেতো৷
এদিকে, ব্রোওয়ার্ড কাউন্টির শেরিফ জানিয়েছেন, গত কয়েক বছরে তার অফিস ক্রুজের বিরুদ্ধে ২০টি ফোন কল পেয়েছিল৷ এর মধ্যে অন্তত ২ টি ছিল তার মায়ের৷ ক্রুজের মা গত বছরের নভেম্বরে মারা যান৷ ক্রুজ অটিস্টিক এবং তাকে দীর্ঘদিন মানসিক চিকিৎসা নিতে হয়েছিল৷ এরুপরও সে এআর-১৫ রাইফেল কিনতে সমর্থ হয়৷
শনিবার রাতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এফবিআইর সমালোচনা করে বলেছেন, ‘‘এটা খুবই দুঃখজনক যে, এতগুলো সংকেত পেয়েও এফবিআই শ্যুটারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি৷ এটা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়৷''
বিক্ষোভ সমাবেশে এমা গনজালেস বলেন, ‘‘এই ঘটনার পর রাজনীতিবিদদের অনেকেই বলছেন, মানসিক বিকারগ্রস্ততাই স্কুলে শ্যুটিংয়ের ঘটনার কারণ৷ কিন্তু তারা কেউই অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের কথা বলছেন না৷''
আর একজন শিক্ষার্থী স্টোনম্যান ডগলাস বলেন, ‘‘ক্রুজতো একটা ছুরি নিয়েও হামলা চালাতে পারতো৷ কিন্তু ‘বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইন' না থাকায় আমি আমার স্বজন, বন্ধু, প্রিয়জনকে হারিয়েছি৷ আমি আর তাদের দেখতে পাবো না৷''
এদিকে, ১৭ জনকে হত্যার দায়ে ক্রুজের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে৷ সে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে৷
এপিবি/এসিবি (এপি, এএফপি, ডিপিএ)