1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জাতীয় নিরাপত্তায় ট্রাম্পের বক্তব্য

১৯ ডিসেম্বর ২০১৭

দেশ ও জনগণের নিরাপত্তা, সমৃদ্ধি প্রচার, সাথে পরাক্রম দিয়ে শান্তি বজায় রাখার উদ্দেশ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলপত্র উন্মুক্ত করে বলা হয়েছে বিশ্ব মঞ্চে প্রতিযোগিতার নতুন অধ্যায়ে অংশ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র৷

https://p.dw.com/p/2pdJ7
ছবি: Reuters/C.Barria

৬৮ পৃষ্ঠার এ কৌশলপত্রে মিত্র ও সহযোগীদের যুক্তরাষ্ট্রের শক্তি হিসেবে উল্লেখ করা হয়, বিশেষ করে ন্যাটো জোট যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধী শক্তির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ৷ ন্যাটো চার্টার অনুযায়ী তাই এক দেশের উপর হামলাকে সদস্য দেশের উপর হামলা বিবেচনা করে একসাথে কাজ করার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গিকার পুনর্ব্যক্ত করা হয় এ কৌশলপত্রে৷ ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘অ্যামেরিকা ফার্স্ট' নীতি অনুযায়ী, এতে দেশ ও সীমান্ত রক্ষায় অগ্রাধিকার, সামরিক পুনর্গঠন, বহির্বিশ্বে শক্তি প্রদর্শন এবং বাণিজ্য নীতির পক্ষে কাজ করার অঙ্গিকার ব্যক্ত করা হয়৷ তবে আনুষ্ঠানিক বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, ‘‘আমরা আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছি, যেসব দেশ সম্পদশালী, তাদের উচিত যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতিরক্ষা ব্যয় ফেরত দেয়া৷''

দায়িত্ব গ্রহণের এক বছরের মধ্যেই জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল ঘোষণা করলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ বিভিন্ন সময়ে ট্রাম্প ও তাঁর প্রশাসনের অবস্থানের বৈপরীত্য দেখা গেলেও জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলের ক্ষেত্রে সহযোগী দেশগুলোর প্রত্যাশা ছিল, স্পষ্ট ঐক্যমত থাকবে প্রশাসনিক অবস্থানে৷ কিন্তু অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তির উদ্দেশ্য সম্পর্কে স্পষ্টতা খুঁজতে চাওয়া বন্ধুত্বপ্রতীম দেশের জন্য কৌশলপত্র ও ট্রাম্পের আনুষ্ঠানিক বক্তব্যের মিশ্র বার্তা বিভ্রান্তকর হয়ে দাঁড়িয়েছে৷

কৌশলপত্রে রাশিয়া ও চীনকে ‘রিভিশনিস্ট পাওয়ার' উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধ অবস্থানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে৷ কৌশলপত্রে উল্লেখ করা হয়, ‘‘মার্কিন নিরাপত্তা ও উন্নয়নে ধস নামাতে চীন ও রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা, প্রভাব ও স্বার্থের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ছে৷'' যদিও সন্ত্রাস দমনে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের পারষ্পরিক বোঝাপড়ার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে ট্রাম্পের বক্তব্যে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে সিআইএ-র তথ্যের ভিত্তিতে পিটাসবুর্গে সম্ভাব্য এক সন্ত্রাসী হামলা আটকানো গেছে৷ যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া পারষ্পরিক সম্পর্কোন্নয়ন উল্লেখযোগ্য বলেও মন্তব্য করেন ট্রাম্প৷

রাশিয়ার পক্ষ থেকে ট্রাম্পের বন্ধুত্বপূর্ণ মন্তব্যকে স্বাগত জানানো হলেও কৌশলপত্রের সমালোচনা করে বলা হয়, ওয়াশিংটন একমুখী বিশ্বের ধারণা নিয়ে এগুচ্ছে৷ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ বলেন, ‘‘একমুখী বিশ্বের ধারণা থেকে সরে আসতে অস্বীকৃতির কারণে এ ডকুমেন্টের সাম্রাজ্যবাদী চরিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠেছে৷'' অন্যদিকে, চীনের প্রতি কঠোর মনোভাবের বিপরীতে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷ এক প্রতিক্রিয়া চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়, বেইজিংকে মার্কিন শক্তির প্রতিযোগী হিসেবে উল্লেখ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের ‘স্নায়ু যুদ্ধের মানসিকতা'-র বহিঃপ্রকাশ যা ওয়াশিংটনের জন্য ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়াতে পারে৷ চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আমাদের আহ্বান চীনের কৌশলগত অভিপ্রায়ের ইচ্ছাকৃত এ বিকৃত উপস্থাপন বন্ধ করা হোক, সেই সাথে স্নায়ুযুদ্ধ ও জিরো সাম গেমের মতো প্রাচীন ধারণা বাদ দিক৷ নয়ত এ সব নিজেদের বা অন্যদের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে৷''

দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বারাক ওবামার  জলবায়ু নীতি থেকে শুরু করে মুক্ত বাণিজ্যের ধারণার বিপরীতে অবস্থান নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ প্রকাশিত এ কৌশলপত্রেও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে সরাসরি কোনো উল্লেখ না করে একে ‘বৈশ্বিক শক্তি ব্যবস্থাপনা' হিসেবে উল্লেখ করা হয়৷ এতে বলা হয়, ‘‘বৈশ্বিক শক্তি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের মূল অবস্থান প্রধান উৎপাদক, ভোক্তা ও আবিষ্কারকের যাতে বাজার উন্মুক্ত থাকে এবং মার্কিন পরিকাঠামো থাকে স্থিতিশীল ও নিরাপদ৷'' প্যারিস  জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার অংশ হিসেবেই ট্রাম্প প্রশাসনের ‘বৈশ্বিক শক্তি ব্যবস্থাপনা'-র নীতি কৌশলপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে৷ ২০১৫ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার জাতীয় কৌশলপত্রে জলবায়ু পরিবর্তনকে জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে ‘জরুরি এবং ক্রমবর্ধমান হুমকি' হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল৷ 

এবারের নিরাপত্তা কৌশলপত্রে দক্ষিণ কোরিয়ার অস্ত্র নীতির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান স্পষ্ট করে এ হুমকি মোকাবেলায় কাজ করার অঙ্গিকার ব্যক্ত করা হয়েছে৷ এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে মধ্যপ্রাচ্যের সম্ভাব্য সুযোগ বিবেচনায় আনার সিদ্ধান্তের প্রসঙ্গও এসেছে এতে৷ এ সংক্রান্ত এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, নতুন এই নিরাপত্তা কৌশল বাস্তবায়ন করতে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মার্কিন মিত্র ও অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে৷

আরএন/ডিজি (এপি, এএফপি, ডিপি, রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান