1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যুদ্ধাপরাধের বিচার স্বচ্ছ হবে, গ্রহণযোগ্য হবে: বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী

১৪ মে ২০১০

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, বিদেশে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনা এবং আরও নানা বিষয়ে বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ খোলাখুলি কথা বলে গেলেন বার্লিনে ডয়চে ভেলের সঙ্গে এক একান্ত সাক্ষাৎকারে৷

https://p.dw.com/p/NN7z
ছবি: DW

আইনমন্ত্রী বললেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিরপেক্ষ আর স্বচ্ছ রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর৷

যুদ্ধাপরাধের বিচার

বাংলাদেশের মাটিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সংক্রান্ত ট্রাইবুনাল গঠিত হতে না হতেই প্রধান তদন্তকারীর পদত্যাগের ঘটনা বিচারকাজের ওপর কোন রকম নেতিবাচক প্রভাব রাখবেনা বলে মনে করেন আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ৷ তিনি বলেন, ‘‘বিচারকাজে বা তদন্তকাজে এর ফলে কোন অসুবিধা হবেনা৷ কারণ আইনে একাধিক তদন্তকারী কর্মকর্তা দিয়েই একটি তদন্তকারী এজেন্সি করার কথা আছে৷ তদন্তকাজ সঠিকভাবে চলছে এবং তদন্তকাজ শেষ হওয়ার পরেই বিচারকাজ শুরু হবে৷ বিচারটি যাতে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হয়, তার জন্য আমরা করণীয় সবকিছু করছি৷ ইতিমেধ্য আইনটিকে যুগোপযোগী করার জন্য আমরা কিছু সংশোধন করেছি৷ বিচার যাতে সর্বক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য হয়, সবার সুবিচার যাতে নিশ্চিত করা যায়, সেটা লক্ষ্য রেখেই আইন সংশোধিত হয়েছে৷''

স্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়া

আইনমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দেখতে বিদেশ থেকেও পর্যবেক্ষকরা বাংলাদেশে আসতে পারেন৷ বিচারের স্বচ্ছতা রাখতে সরকার সব রকমের ব্যবস্থাই গ্রহণ করেছে এবং করছে৷ কাদের বিরুদ্ধে এই বিচার সেকথা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন আইনমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, ‘‘এই বিচার হচ্ছে সেই সমস্ত ব্যক্তিবর্গের বা সেই সমস্ত সহায়ক শক্তির বিরুদ্ধে যারা তখন দখলদার বাহিনীর সঙ্গে একত্রিত হয়ে নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় কারণে মানুষকে দেশ এবং বাড়িছাড়া করেছে, গণহত্যা করেছে, যুদ্ধাপরাধ করেছে এবং আন্তর্জাতিক আইনে যা অপরাধ বলে ধরা হয়ে থাকে সেই সব অপরাধ করেছে, সেই সব ব্যক্তির বিচার হবে আন্তর্জাতিক অপরআধ আইন ১৯৭৩ অনুযায়ী৷ শুধুমাত্র যুদ্ধাপরাধ নয়, মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা, বুদ্ধিজীবী হত্যা করেছে এমন সব ব্যক্তি যারা এখন আমাদের দেশে আছে বা তারা অন্য কোন দেশের নাগরিকও হোক তাদেরকে এই আইনে বিচার করা হবে বলে পরিষ্কার বিধান আছে৷''

Justizminister von Bangladesch in Berlin
বার্লিনে আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ এর সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন আব্দুল্লাহ আল-ফারূকছবি: DW

মৌলবাদের হুমকি

১৯৭৫ সালের সামরিক শাসনের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অর্জনকে নষ্ট করে দেয়া৷ আর সেই লক্ষ্যেরই আশ্রয়ে বাংলাদেশে উগ্র মৌলবাদী প্রবণতার স্ফূরণ দেখা দেয় বলে জানান আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ৷ তিনি বলেন, ‘‘উগ্র মৌলবাদী শক্তি এই কারণে কিছুদিন সুযোগ পেয়েছিল৷ তবে আমরা আশাবাদী যে বাংলাদেশের যে হাজার বছরের কৃষ্টি, মানুষের ধ্যানধারণা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, এখানে উগ্রবাদী ধর্মীয় শক্তির সম্ভাবনা আমি দেখছিনা৷ এটা জনগণ প্রতিহত করবে৷ এ বিশ্বাস আমার আছে৷''

জার্মানির সাথে সংলাপ

বিদেশে পাচার করা অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে সক্রিয় উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন আইনমন্ত্রী৷ দেশের জেল ব্যবস্থার সংস্কার, ব্রিটিশ আমলের জেল কোডের নবায়ন, দ্রুত বিচার শেষ করার ব্যবস্থা নেয়া, জেলে উপচে পড়া মানুষের সংখ্যা কমানোর উদ্যোগ নেয়া এবং অপরাধীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সমাজের কাজে লাগানোর বিষয়গুলো নিয়ে মন্ত্রী কথা বলেছেন জার্মানিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে৷ এ ব্যাপারে জার্মান প্রযুক্তি সহযোগিতা সংস্থা জিটিজেড সক্রিয় সাহায্য যোগাতে প্রস্তুত বলে জানান আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ৷

প্রতিবেদন: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন