যে কোনো দিন রায়
৫ জুন ২০১৩জামায়াত নেতা এবং সাবেক মন্ত্রী আলি আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে গ্রেপ্তার করা হয় ২০১০ সালের ২৯শে জুন৷ ঐ বছরের ২রা আগস্ট তাকে যুদ্ধাপরাধ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়৷ তার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ঢাকা এবং ফরিদপুরে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটতরাজ এবং অগ্নি সংযোগসহ মোট সাতটি অভিযোগ আনে৷
এর মধ্যে রয়েছে ঢাকায় ইত্তেফাকের তৎকালীন নির্বাহী সম্পাদক সিরাজউদ্দিন হোসেনকে হত্যা, মে মাসে ফরিদপুরের সংখ্যালঘু এলাকা বৈদ্যডাঙি, মাঝি ডাঙি ও বালা ডাঙি গ্রামে হামলা এবং অগ্নি সংযোগ৷ উল্লেখ্য, সেই হামলায় ৬০ জন নিহত হয়েছিলেন৷
এরপর জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে ফরিদপুরের রথখোলা এলকায় রণজিত নামে একজনকে অপহরণের পর হত্যা৷ জুলাই মাসে মুক্তিযোদ্ধা আবু ইউসুফ পাখিকে নির্যাতন৷ আগস্টের পর ঢাকায় সুরকার আলতাফ মাহমুদ, জহির উদ্দিন জালাল, বদি, রুমি, জুয়েল এবং আজাদকে হত্যা এবং ১০ই ডিসেম্বর থেকে মুজাহিদের পরিকল্পনায় ঢাকায় বুদ্ধিজীবী হত্যা৷ এছাড়া, ফরিদপুরের খলিলপুরে ১২ জন সংখ্যালঘুকে হত্যার অভিযোগও আছে মুজাহিদের বিরুদ্ধে৷
মুজাহিদের পরিকল্পনায় রাজাকার আলবদর এবং শন্তি কমিটিরসদস্যরা এইসব হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে৷ মুজাহিদ নিজেও সরাসরি কোনো কোনো হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়৷ এই মামলায় সাংবাদিক বুদ্ধিজীবী এবং আহত মুক্তিযোদ্ধা ও প্রত্যক্ষদর্শীসহ মোট ১৭ জন প্রসিকিউশনের পক্ষে সাক্ষী দিয়েছেন৷
প্রসিকিউটর ড. তুরিন আফরোজ ডয়চে ভেলেকে জানান যে, মুজাহিদের বিরুদ্ধে তারা সাতটি অভিযোগই প্রমাণে সক্ষম হয়েছেন৷ তবে শুধু সাক্ষী নয়, তথ্য প্রমাণও হাজির করেছেন তারা৷ তাই তারা আশা করেন, ট্রাইব্যুনালে মুজাহিদকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেবে৷ তবে মুজাহিদের আইনজীবী তাজুল ইসলাম ডয়চে ভেলের কাছে দাবি করেন যে, মুজাহিদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগই প্রমাণ করা করতে পারেনি প্রসিকিউশন৷ তাঁর মতে, এটি একটি মিথ্যা এবং সাজানো মামলা হওয়ায় তা প্রমাণের প্রশ্নই ওঠে না৷ তিনি আশা করেন, এই মামলায় মুজাহিদ বেকসুর খালাস পাবেন৷ তাজুল ইসলামের দাবি মিথ্যা মামলার দায়ে প্রসিকিউশনের বিরুদ্ধে মামলার আদেশ দেয়া উচিত ট্রাইব্যুনালের৷
২০১০ সালের ২৫শে মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন হওয়ার পর এ পর্যন্ত মোট ছয়টি মামলার বিচার কাজ শেষ হয়েছে৷ এর মধ্যে চারটি মামলার রায়ে তিনজনের ফাঁসি এবং একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে৷ তবে গোলাম আযম ও আলি আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মামলা এখনও রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে৷