যে দিনটা একান্তই মেয়েদের
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫বৃহস্পতিবার বেলা ঠিক ১১টা বেজে ১১ মিনিটে জার্মানির রাইন অঞ্চলের তিন বড় শহর কোলন, ড্যুসেলডর্ফ আর মাইনৎস বলতে গেলে রং-বেরঙের পোশাক আর মুখোশধারী মেয়েদের দখলে চলে গেল৷ কার্নিভালের জমে ওঠা মরশুমে এই দিনটির পোশাকি নাম ‘‘ভাইবারফাস্টনাখট্''৷
এদিন মেয়েদেরই দিন৷ অফিসে দোকানে বা রাস্তায় টাই বাঁধা পুরুষের টাইখানা কাঁচি দিয়ে কুচ করে কেটে দেন৷ প্রতিবাদ করার উপায় নেই৷ মেয়রের অফিসে হানা দিয়ে প্রমীলারা গ্যাঁট হয়ে বসে পড়েন খোদ মেয়েরের অফিসেই৷ রাস্তায় রাস্তায় চোখে পড়ে কার্নিভালের মজার পোশাক পরা মেয়েরা৷ তাদের সঙ্গে পুরুষরাও থাকে বৈকি৷ মাঝে মাঝে সশব্দ স্লোগান৷ কার্নেভালপ্রেমীদের স্বাগত – স্লোগান কোলন, আখেন, কোবলেন্স শহরে ‘‘আলাফ'' – ড্যুসেলডর্ফে আবার সে স্লোগান পাল্টে যায়৷ সেখানকার মানুষ বলে ওঠে ‘‘হেলাউ''৷
জার্মানিতে কার্নিভালের আয়োজনের প্রস্তুতির শুরুটা হয়েছে কিন্তু গত নভেম্বর মাসে৷ সেই মাসের ১১ তারিখে সকাল ১১ টা ১১ মিনিট ১১ সেকেন্ড থেকে শুরু হয় এর প্রস্তুতি নেয়া৷ আর এই উৎসব চূড়ান্ত পর্বে পৌঁছবে আগামী সোমবার৷ যাকে বলা হয় ‘‘রোজেনমোনটাগ''৷
কোলনে কার্নিভালের চূড়ান্ত পর্বে উপস্থিত হয় দেশ-বিদেশের প্রায় দশ লাখ মানুষ৷ তাঁদের উপস্থিতিতে বিভিন্ন প্রধান প্রধান রাস্তায় চলে দীর্ঘ শোভাযাত্রা৷ ছুঁড়ে দেয়া হয় অপেক্ষমান দর্শকদের দিকে চকলেট লজেন্স, ফুল, সুগন্ধী ও আরো নানা রকমের উপহার৷ কুড়িয়ে নেয় সে সব উপহার ছেলে বুড়ো মেয়ে পুরুষ সবাই৷ এ এক অন্যরকম উৎসব৷
জার্মানিতে ‘রোজেনমোনটাগ’ বা গোলাপি সোমবারের শোভাযাত্রার আয়োজন করেছিল কোলনের বাসিন্দারাই, সেই ১৮২৩ সালে৷ এর দু’বছর পর ড্যুসেলডর্ফ শহর করে এই আয়োজন৷ আর ১৮৩৬ সালে মাইনৎসে৷
যাই হোক, এত বছরে এই উৎসব হয়ে উঠেছে জার্মানির, বিশেষ করে রাইন অঞ্চলের সবচেয়ে বড় উৎসব৷ স্কুলগুলোতে আগেই বলে দেয়া হয়েছে কোন স্কুলে কোন থিমের উপর পোশাক পরা হবে৷ কেবল বাচ্চারা নয়, মা বাবাকেও যোগ দিতে হয় শিশুদের সঙ্গে আনন্দ উৎসবে৷ আর এক এক দিন একেক এলাকায় আয়োজন করা হয়েছে অনুষ্ঠানের৷ সব মিলিয়ে জার্মানির বাতাসে এখন কার্নিভাল উৎসবের আমেজ৷