পরিবেশ রক্ষায় একাই লড়ছে জার্মানির গ্রাম
২৬ এপ্রিল ২০১৯উদ্যোগের অংশ হিসাবে নিজেদের ব্যবস্থাপনায় একটি দোকান চালু করেছেন জার্মানির বাভারিয়া রাজ্যের গ্রাফেনাশাউ এলাকার বাসিন্দা৷ ওই দোকানে কেবল স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যই বিক্রি হয়ে থাকে৷ এর পাশাপাশি জ্বালানিতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পাশাপাশি কীটপ্রতঙ্গ বাঁচাতেও উদ্যোগ রয়েছে গ্রামটির৷
সেখানকার মেয়র হুব্যার্ট মানগল্ড জানান, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ‘হে মিল্ক', শ্নাপ, পানীয়, ফলমূল, সবজি এবং মিলের ঐতিহ্যবাহী আটা পাওয়া যায় এখানে৷ ‘‘আমাদেরকে প্রতি সপ্তাহে আটার ব্যবস্থা করতে হয়৷ কারণ দ্রুতই শেষ হয়ে যায়,'' ডয়চে ভেলেকে বলেন তিনি৷
কয়েক মাস আগে পূর্ণ উদ্যমে চালু হয়েছে ছোট এই সুপারমার্কেটটি৷ কয়েক বছর আগে গ্রামটির সর্বশেষ দোকান বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে এটি চালুর উদ্যোগ অল্প অল্প এগোতে থাকে৷ এখন গ্রামের মানুষকে নিত্যপণ্যের জন্য ১০ কিলোমিটার দূরের পার্শ্ববর্তী মুরনাউ শহরে যেতে হয় না৷
দোকানটি কীভাবে পরিবেশ রক্ষায় কাজ করছে, তার বর্ণনা দিয়ে মেয়র মানগোল্ড বলেন, ‘‘এটা সম্পূর্ণরূপে পরিবেশের সঙ্গে সম্পৃক্ত৷ আগে বাজার করতে সপ্তাহে কমপক্ষে একবার মুরনাউ যেতে হত৷ এখন মানুষ তাদের গাড়ি বাড়িতেই রেখে আসছেন৷''
জলবায়ু ও পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি এই গ্রামের সব প্রকল্পের মূলকেন্দ্রে থাকে৷ স্থানীয় পরিষদ গ্রামটিকে সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে জ্বালানিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে চাইছে৷ বিলুপ্তপ্রায় কীটপ্রতঙ্গ ধরে রাখতে সেখানে ফুলের ক্ষেত করা হয়েছে৷ আর মৌচাক বসিয়ে উৎপাদন করা হয় মধু, যা ওই দোকানেই বিক্রি করা হয়৷
অন্য জায়গা থেকে পণ্য আনলেও কার্বন নিঃসরণের দিকে মনযোগ দেয়ার কথা জানান মেয়র মানগল্ড৷ উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমরা মিউনিখ থেকে ফল নিয়ে আসি৷ অন্য কাজে কেউ সেখানে গেলে, তার মাধ্যমে ফল আনাই আমরা৷ তার মানে, পণ্য আনার জন্য আমরা অতিরিক্ত কার্বন ডাই-ডক্সাইড নিঃসরণ করি না৷''
স্থানীয় পণ্যের নিজস্ব দোকানটি মিলনকেন্দ্রেও পরিণত হয়েছে গ্রাফেনাশাউবাসীর জন্য৷ সেখানে একবন্ধুর সঙ্গে আলাপের ফাঁকে কথা হয় স্থানীয় এক নারীর সঙ্গে৷ তিনি বলছিলেন, ‘‘সবকিছুই স্থানীয় পণ্য, এটাই চমৎকার দৃশ্য৷ পাশাপাশি স্বাভাবিকভাবেই আপনি কারো না কারো দেখা পেয়ে যাবেন৷''
গ্রাফেনাশাউ গ্রামের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে গারমিশ-পার্টেনকিরশেনের ক্লাইমেট প্রটেকশন ম্যানেজার ফ্লোরিয়ান ডিপল্ড বলেন, ‘‘অগ্রগণ্য উদ্যোগ নিয়েছে ছোট্ট এই স্থানীয় পরিষদ৷ এই রকম ছোট ছোট অনেক প্রকল্প চলছে অন্য অনেক জায়গায়৷''
তবে এ ধরনের স্থানীয় দোকান চালাতে নানা ধরনের ঝক্কির সম্মুখীন হতে হয় বলে জানান তিনি৷ কারণ, স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত পণ্যের মান বুঝে তাদের দাম নির্ধারণ করতে হয় এবং পরবর্তীতে সে অনুযায়ী ডিজিটালাইজড সিস্টেমে অন্তর্ভুক্ত করতে হয়৷ এর বিপরীতে অন্য চেইন সুপারস্টোরগুলোর পণ্য ডিজিটালাইজড করা অনেক সহজ৷
জেনিফার কলিন্স/এমবি