রহস্যময় উত্তর কোরিয়া
বিশ্বের অন্যতম বিচ্ছিন্ন দেশ উত্তর কোরিয়া৷ জার্মান আলোকচিত্রী ইয়ুলিয়া লিব সে দেশে ঘুরতে গিয়েছিলেন৷ ‘অ্যানোনিমাস কান্ট্রি নর্থ কোরিয়া’ নামে সম্প্রতি তাঁর একটি বই প্রকাশিত হয়েছে৷ ছবিঘরে থাকছে তাঁরই তোলা কয়েকটি ছবি৷
ট্রাফিক লাইট ছাড়া রাজধানী!
উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ং-এ নাকি কোনো ট্রাফিক লাইট নেই৷ ডয়চে ভেলেকে এমনটাই জানিয়েছেন জার্মান আলোকচিত্রী ইয়ুলিয়া লিব৷ সম্প্রতি সে দেশে ঘুরতে গিয়ে তিনি এমন সব স্থানে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন, যেখানে সাধারণত খুব বেশি পর্যটকদের যাওয়ার অনুমতি নেই৷ ছবিতে পিয়ংইয়ং-এর একজন নারী ট্রাফিক পুলিশকে দেখা যাচ্ছে৷
‘মাস গেমস’
ছবিটি ভালো করে খেয়াল করলে দেখতে পাবেন ছোট ছোট অনেকগুলো মুখ দেখা যাচ্ছে৷ এগুলো সব স্কুলের শিক্ষার্থীদের মুখ৷ তারা নিজেদের হাতে আঁকা প্ল্যাকার্ডগুলো উপরে তুলে ধরেছে৷ ফলে অঙ্কিত হয়েছে বিশাল এই ছবিটি৷ অনেকে মিলে একসঙ্গে এই খেলায় অংশ নেয় বলে এটা ‘মাস গেমস’ নামে পরিচিত৷ বাৎসরিক ‘আরিরাং উৎসব’ -এর অংশ এটি৷
কোরীয় রোমিও-জুলিয়েট
আরিরাং উৎসবের নামটি এসেছে একই নামে থাকা কোরীয় এক লোক সংগীত থেকে৷ দুষ্টু জমিদারের কারণে তরুণ এক জুটির আলাদা হয়ে যাওয়ার করুণ কাহিনি এই গানের মূল কথা৷ দুই কোরিয়ার মধ্যে যে বিভাজন এই উৎসবে সেটা ফুটে ওঠে৷ প্রায় এক লক্ষ মানুষ আরিরাং উৎসবে বিভিন্ন ধরনের মনোরম কসরত দেখিয়ে থাকে৷
শহর নয় যেন মরুভূমি
ছবিতে পিয়ংইয়ং-এর কিম ইল সুং চত্বর দেখা যাচ্ছে৷ অন্য কোনো শহরে এ ধরনের চত্বরগুলো সবসময় লোকে লোকারণ্য থাকলেও উত্তর কোরিয়া বলেই সেটা জনমানবশূন্য৷ আলোকচিত্রী লিব জানিয়েছেন, রাজধানী হলেও পিয়ংইয়ং-এ গাড়ি খুব কমই দেখা যায়, নেই বিজ্ঞাপন সম্বলিত বিলবোর্ড, নেই কোনো আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের রেস্তোরাঁ৷
‘জুচ্ছেয়ে’ তত্ত্ব
১৭০ মিটার উঁচু এই টাওয়ারটি উত্তর কোরিয়ার ‘জুচ্ছেয়ে’ ভাবাদর্শের প্রতীক৷ সাবেক নেতা কিম ইল সুং-এর দেয়া এই তত্ত্বের মূল কথা হচ্ছে ‘স্বনির্ভরতা’৷ দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে উত্তর কোরিয়া এই চিন্তারীতিই মেনে চলে৷
অন্যরকম অভিজ্ঞতা
নবদম্পতির ছবি তোলা হচ্ছে৷ যিনি ছবিটি তুলছেন তিনি ছবি তোলা শেষে লিবের সঙ্গে কথা বলতে এগিয়ে আসেন৷ উত্তর কোরিয়ায় কোনো বিদেশির কাছে এটা একটা দুর্লভ অভিজ্ঞতা বলে জানান লিব৷
দুই দেশে এক টেবিল!
ছবিটি সেই সীমান্ত এলাকার, যেখানে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর সদস্যরা চাইলে একে অন্যের সঙ্গে আলোচনায় মিলিত হতে পারেন৷ আলোচনার টেবিলটি এমনভাবে বসানো হয়েছে যে, তার দুই পাশে যাঁরা বসবেন তাঁরা শারীরিকভাবে তাঁদের দেশের ভেতরেই থাকবেন৷
একাত্মতার প্রতীক
এটি ‘দ্য মনুমেন্ট টু দ্য ফাউন্ডেশন অফ দ্য কোরিয়ান ওয়ার্কার্স পার্টি’৷ হাতুড়ি আর কাস্তে হলো কৃষক সমাজের প্রতিচ্ছবি৷ আর মাঝখানের তুলিটি বুদ্ধিজীবী শ্রেণিকে প্রতিনিধিত্ব করছে৷ দেশের নেতা, জনসাধারণ আর দলের মধ্যে একাত্মতা বোঝাতে হাতুড়ি, কাস্তে আর তুলিকে একটি পাথর দিয়ে একসঙ্গে ঘিরে দেয়া হয়েছে৷ আর দুই পাশে যে দুটি ভবন দেখা যাচ্ছে, সেগুলি বিপ্লবী পতাকার প্রতীক৷