রহস্যময় তেলে ব্রাজিলের সৈকত দূষণ
ব্রাজিলের উত্তরপূর্বাঞ্চলের সৈকতগুলোতে গত একমাস ধরে অশোধিত তেল ভেসে আসছে৷ যদিও সেখানে কোন জাহাজ দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেনি, তা সত্ত্বেও এই তেল কোথা থেকে আসছে তা নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে৷ আর তাতে ক্ষতিগ্রস্ত পর্যটন শিল্প৷
তেল নিয়ে রহস্য
গতমাসের শুরুর দিকে ব্রাজিলের পরিবেশ সংস্থাগুলো দেশটির শতাধিক সমুদ্রতটে অশোধিত তেল ভেসে আসার বিষয়টি লক্ষ্য করে৷ লাতিন আমেরিকার এই দেশটির পরিবেশমন্ত্রী রিকার্ডো সেলেস চলতি সপ্তাহে জানিয়েছেন যে তিন হাজার কিলোমিটার সমুদ্রতট থেকে একশো টনের মতো ভেসে আসা তেল সংগ্রহ করা হয়েছে৷
অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড?
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর ব্যোলসেনারু সৈকতে তেল ভেসে আসার ঘটনাকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন৷ এর আগে অবশ্য সাগরে কোন জাহাজ ডুবে যাওয়ায় বা কোন অফশোর তেল উত্তোলন প্লাটফর্মে দুর্ঘটনার কারণে এমনটা ঘটছে বলে মনে করা হয়েছিল৷ ব্যোলসেনারু এই ঘটনার পেছনে একটি দেশ জড়িত বলে সন্দেহ প্রকাশ করলেও সেটির নাম বলেননি৷
‘আমাদের নয়’
প্রসঙ্গত, ব্রাজিলের অফশোর তেল উত্তোলনের অনেক প্রকল্প রয়েছে৷ তবে, দেশটির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তেল কোম্পানি পেট্রোব্রাস জানিয়েছে, পরীক্ষানিরীক্ষা করে দেখা গেছে সমুদ্রতটে ভেসে আসা তেল প্রতিষ্ঠানটির নয়৷ সংশ্লিষ্ট দেশের গণমাধ্যম ধারণা করছে, এই তেলের উৎস সম্ভব ভেনেজুয়েলা৷ তবে সেদেশ এই বিষয়ে কোন মন্তব্য করেনি৷
ঝুঁকিতে পাখি, কচ্ছপ
সমুদ্রে ভেসে আসা তেল তুলে ফেলতে কাজ করছে পেট্রোবাস৷ দেশটির পরিবেশবাদী সংস্থা আবামা জানিয়েছে যে বেশকিছু পাখি এবং কচ্ছপ পাওয়া গেছে যেগুলোর শরীরে তেল জড়িয়ে গেছে৷ তাদের চিকিৎসাও দেয়া হচ্ছে৷
জাহাজ দুর্ঘটনা ঘটেনি
সমুদ্রতটে ভেসে আসা তেলের উৎস খুঁজতে তদন্ত করছে ব্রাজিল কর্তৃপক্ষ৷ তবে, এর মধ্যেই জাহাজ ডুবি বা অন্য কোন দুর্ঘটনার কারণে এমনটা ঘটার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন তদন্তকারীরা৷ তবে কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছেন যে কোন তেলের ট্যাঙ্কার সম্ভবত যাত্রাপথে ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করেছেন৷ এই বিষয়ে অবশ্য নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না৷
ঝুঁকিতে সমুদ্রতট
ব্রাজিলের বিশ্বখ্যাত কয়েকটি সমুদ্রতট এবং পর্যটনকেন্দ্র তেলের কারণে ঝুঁকিতে পড়েছে৷ এই ঘটনার কারণে জেলেরা এবং সমুদ্রপ্রেমী পর্যটকরা তাদের কাঙ্খিত গন্তব্যে যেতে পারছেন না৷ স্থানীয়রা বলছেন, গত কয়েকদশকের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড় সমুদ্রের পানিতে তেল দূষণের ঘটনা৷