1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাইফ হয়ত খুব শিগগিরই মুক্তি পাবে

আশীষ চক্রবর্ত্তী১১ সেপ্টেম্বর ২০১৫

ডয়চে ভেলের প্রথম বাকস্বাধীনতা পুরষ্কারজয়ী রাইফ বাদাউয়ির পক্ষে পুরস্কার নিলেন তাঁর স্ত্রী এনসাফ হায়দার৷ মহাপরিচালক পেটার লিমবুর্গ বার্লিনে এনসাফ-এর হাতে এ পুরস্কার তুলে দেন৷

https://p.dw.com/p/1GV4T
Deutschland Ensaf Haidar Frau von Raif Badawi PK in Berlin
এনসাফ হায়দারছবি: DW/N. Conrad

এ বছরই প্রথম ‘দ্য বব্স’ প্রতিযোগিতার অংশ হিসেবে বাকস্বাধীনতা বা মত প্রকাশের স্বাধীনতা অ্যাওয়ার্ড দিয়েছে ডয়চে ভেলে৷ আর সেই পুরস্কার পেয়েছেন সৌদি আরবের কারাবন্দি ব্লগার রাইফ বাদাউয়ি৷

সৌদি আরবের মানবাধিকারকর্মী ও ব্লগার রাইফ বাদাউয়ি ২০১২ সাল থেকে কারাবন্দি৷ ব্লগ লিখে দেশের প্রযুক্তি আইন লঙ্ঘন এবং ইসলাম ধর্মের শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিদের অবমাননার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে৷ গত জুনে ‘দ্য ববস’ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়৷ বাদাউয়ি কারাবন্দি থাকায় তখন তাঁর পুরস্কারটি দেয়া যায়নি৷ তাই শুক্রবার বার্লিনে এসে স্ত্রী এনসাফ (বানানভেদে ইনসাফ) হায়দার ডয়চে ভেলের মহাপরিচালক পেটার লিমবুর্গের কাছ থেকে পুরস্কারটি গ্রহণ করে আনুষ্ঠানিকতা শেষ করলেন৷

পুরস্কার নিতে এসে ডয়চে ভেলেকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন এনসাফ হায়দার৷ দু’বছর ধরে তিনি তাঁর স্বামীকে মুক্ত করার জন্য লড়ছেন – এ প্রসঙ্গ তুলে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ‘‘কেমন আছেন?’’ এনসাফ বললেন, ‘‘খুব কষ্টে আছি আমি৷ আমাকে এবং আমার স্বামীকে চার বছর ধরে পরস্পরের কাছ থেকে দূরে থাকতে বাধ্য করা হয়েছে৷ অথচ আমরা কোনো অন্যায় করিনি৷ আমার সন্তানেরা তাদের বাবাকে ছাড়া বড় হচ্ছে৷ এমন শাস্তি পাওয়ার মতো কিছু করেনি রাইফ৷ আমাদের অবস্থা খুবই শোচনীয়৷’’

GMF 2015 The Bobs Awards Ceremony
‘দ্য বব্স’ প্রতিযোগিতার অংশ হিসেবে ডয়চে ভেলের ‘ফ্রিডম ও স্পিচ অ্যাওয়ার্ড' পেয়েছেন রাইফ বাদাউয়িছবি: DW/M. Magunia

দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে সন্তানরা তাদের বাবার সাহচর্য পাচ্ছে না৷ কেমন আছে তারা? ভারাক্রান্ত মন নিয়ে এনসাফ জানালেন, ‘‘ওরা ভালো নেই৷ ওরা চায় ওদের বাবা তাড়াতাড়ি ওদের মাঝে ফিরে আসুক৷ বাবাকে তারা খুব ‘মিস’ করছে৷ ওরা তাদের আনন্দ-দুঃখ সবই বাবার সঙ্গে ভাগ করতে চায়৷ ওরা বাবার সঙ্গে খেলতে চায়৷ আমার ছেলে দু’টো সবসময় দেখে ওর সহপাঠীদের বাবা-মা ফুটবল প্র্যাকটিসে নিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু ওর বেলায় তা হয় না৷’’

২০১৪ সালের নভেম্বরে আদালত ৩১ বছর বয়সি ব্লগার রাইফ বাদাউয়ির বিরুদ্ধে ১০ বছরের কারাভোগ এবং ১ হাজার দোররার শাস্তি ঘোষণা করে৷ সারা বিশ্বে প্রতিবাদের ঝড় উঠলেও শাস্তি প্রত্যাহার করা হয়নি৷

বাদাউয়ির বর্তমান অবস্থা জানাতে দিয়ে এনসাফ হায়দার বললেন, ‘‘শারীরিক বা মানসিক কোনোদিক থেকেই ভালো নেই রাইফ৷ ওর বিরুদ্ধে তো দশ বছরের জেল এবং এক হাজার দোররা বা বেত্রাঘাতের শাস্তি ঘোষণা করা হয়েছে৷ ৫০টি বেত মারা হয়ে গেছে৷ তাছাড়া ও তো জানে যে, ওর সন্তানরা ওকে ছাড়া বড় হচ্ছে৷ এটা মেনে নেয়া খুব কঠিন৷’’

বার্লিনে শুধু বাদাউয়ির হয়ে পুরস্কার নিতে আসেননি এনসাফ হায়দার৷ বাদাউয়ির নামে একটি ফাউন্ডেশনের উদ্বোধন ঘোষণাও করেছেন তিনি৷ সাক্ষাৎকারে এনসাফ জানান, ‘‘ফাউন্ডেশনের লক্ষ্য হলো মুক্ত চিন্তা এবং স্বাধীন গণমাধ্যমের সংস্কৃতিকে সমর্থন দেয়া৷ আমাদের দেশের মানুষ নিজেদের মতামত প্রকাশের জন্য উদগ্রীব৷ সে কারণেই স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলার সময় এসেছে বলে আমরা মনে করি৷ আমার স্বামীর বিরুদ্ধে শুধু মন খুলে কথা বলার জন্যই দশ বছরের কারাদণ্ড এবং এক হাজার বেত্রাঘাতের শাস্তি ঘোষণা করা হয়েছে৷’’

সারা বিশ্ব থেকে বাদাউয়ির মুক্তি দাবি করা হলেও সৌদি সরকার এখনো তাঁকে মুক্তি দেয়নি৷ এখনো মনের দিক থেকে শক্ত আছেন জানিয়ে এনসাফ বললেন, ‘‘আমি এখনো আশা ছাড়িনি৷ আমার কেন যেন মনে হয়, রাইফ হয়ত খুব তাড়াতাড়িই মুক্তি পাবে৷ ও শান্তিপ্রিয় মানুষ৷ অহিংস উপায়েই সে মত প্রকাশ করেছে৷ আমি আশা করি, সৌদি সরকার এবং বাদশাহ সালমান পুরো বিষয়টি আবার ভেবে দেখবেন এবং ক্ষমা করবেন৷’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান