রাখাইনে গণকবর, ১০টি মৃতদেহ উদ্ধার
২০ ডিসেম্বর ২০১৭সেনাপ্রধানের ফেসবুক পাতায় প্রকাশিত এক বিবৃতির সঙ্গে কবর থেকে তোলা কংকালের ছবি ঝাপসা করে সংযুক্ত করা হয়েছে৷ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর কোনো সদস্যের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে৷''
এদিকে, মৃতদেহ উদ্ধারের সঙ্গে জড়িত এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, মৃতদেহের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ে তাদের হত্যা করার ঘটনা ঘটেনি৷ ‘‘এগুলো কাদের মৃতদেহ তা বোঝা সম্ভব নয় কারণ আমরা শুধু তাদের কংকাল আর হাড় পেয়েছি৷''
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের হয়ে রোহিঙ্গা সংকট কাভার করা মিয়ানমারের দুই সাংবাদিক নিখোঁজ হওয়ার এক সপ্তাহ পর এই গণকবর খুঁজে পাওয়া গেল৷ তবে ঐ দুই সাংবাদিক এই গণকবর নিয়ে তদন্ত করছিল কিনা তা নিশ্চিত করেনি রয়টার্স৷ এদিকে নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন বলছে, যে গ্রামে গণকবর পাওয়া গেছে সেখানকার কয়েকজন বাসিন্দার কাছ থেকে কিছু ছবি সংগ্রহ করেছিলেন ঐ দুই সাংবাদিক৷ তাঁদের গ্রেপ্তারের পর ঐ গ্রামের পাঁচজনকেও আটক করে পুলিশ৷
দুই সাংবাদিক – ৩১ বছর বয়সি ওয়া লোন ও ২৭ বছর বয়সি চ সু ও – ১২ ডিসেম্বর থেকে নিখোঁজ৷ তাঁদের পরিবার, সহকর্মী ও আইনজীবীদেরও তাঁদের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য দেয়া হচ্ছে না৷ অবশ্য মিয়ানমারের নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চির মুখপাত্র বুধবার রয়টার্সকে টেলিফোনে জানিয়েছেন, দু'জনের বিরুদ্ধে পুলিশের তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে৷ এরপর তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে৷ এরপর তাঁরা আইনজীবী ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পাবেন৷
রয়টার্সের দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে রাখাইনের নিরাপত্তা বাহিনী সংশ্লিষ্ট নথিপত্র রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে৷ অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে৷
ওদিকে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র সহ মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে তাঁদের মুক্তি দাবি করেছে৷
জাতিসংঘের কর্মকর্তার অনুমতি বাতিল
মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত জাতিসংঘের কর্মকর্তা ইয়াংঘি লি-কে তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত আর মিয়ানমারে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না বলে জানানো হয়েছে৷ বুধবার এক বিবৃতিতে লি এই তথ্য জানিয়েছেন৷ আগামী জানুয়ারিতে তাঁর মিয়ানমার যাওয়ার কথা ছিল৷ সেইসময় রাখাইন রাজ্য সহ মিয়ানমারের অন্যান্য এলাকার মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কাজ করার কথা ছিল তাঁর৷ বিবৃতিতে লি জানান, ‘‘আমার কাজে সহযোগিতা না করার বিষয়টি শক্তিশালী এক ইঙ্গিত বহন করে – রাখাইন সহ মিয়ানমারের অন্যান্য এলাকায় নিশ্চয় মারাত্মক কিছু ঘটছে৷''
কক্সবাজারে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী
তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইয়েলডিরিম বাংলাদেশ সফর করছেন৷ আজ তিনি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে যান৷ সেখানে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি৷ এই সময় রোহিঙ্গাদের উপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনকে ‘জাতিগত নিধন' বলে উল্লেখ করেন৷
এর আগে গত সেপ্টেম্বরে তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমাইন এর্দোয়ান এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসল বাংলাদেশ সফরে গিয়ে রোহিঙ্গা শিবিরে গিয়েছিলেন৷
জেডএইচ/ডিজি (এএফপি, রয়টার্স, বিডিনিউজ)
প্রতিবেদনটি সম্পর্কে কোনো মন্তব্য থাকলে লিখুন নীচের ঘরে৷