রাতের আকাশে অবশেষে উড়লো সোলার প্লেন
৭ জুলাই ২০১০ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল ৬টা বেজে ৫১ মিনিট৷ সুইজারল্যান্ডের সময়৷ ঠিক এই সময়ে পেয়ার্নে বিমান ঘাঁটি থেকে উড়লো সৌরশক্তিচালিত উড়োজাহাজ বা সোলার প্লেন৷ এই প্লেনের পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন এর আগেও হয়েছে৷ তবে এই বারেরটি বিশেষ৷ কারণ সূর্যের শক্তিতে চলা এই প্লেন এবার উড়বে রাতভর৷ চালাচ্ছেন আন্দ্রে বোর্শব্যার্গ৷ আকাশ পরিষ্কার, তাই বিমান উঠতে কোনো সমস্যাই হয়নি৷ ঘণ্টায় ৩৫ কিলোমিটার গতিতে সুইজারল্যান্ড এবং ফ্রান্সের আকাশে উড়বে এই প্লেন৷ বোর্শব্যার্গের লক্ষ্য, টানা ২৭ ঘণ্টা চালানো৷
সোলার প্লেনের স্বপ্নদ্রষ্টা বার্টার্ন্ড পিকার্ড এই বিমানের দিবারাত্রির প্রথম যাত্রা নিয়ে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত৷ তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘সব কিছু ঠিকভাবে চলছে৷ এটা একটি স্মরণীয় দিন৷'' সোলার প্লেন তৈরির উদ্দেশ্যও জানালেন তিনি৷ পিকার্ড বললেন, ‘‘আমি চাই আকাশেও জ্বালানি ছাড়া উড়তে৷ জীবাশ্ম জ্বালানি ছাড়া যারা কিছু ভাবতে পারে না, তাদের বোঝাতে, চাইলেই অনেক কিছু সম্ভব৷'' মানুষ চাইলে যে অনেক কিছু সম্ভব তার জলন্ত উদাহরণ তো পিকার্ড নিজেই৷ এক যুগেরও বেশি সময় আগে বেলুনে করে পৃথিবী পরিভ্রমণের রেকর্ড গড়েন তিনি৷
এক সময়ের জেট বিমানের পাইলট বোর্শব্যার্গ আকাশে থাকলেও ভূমি থেকে তাকে সহায়তা করার জন্য একটি দল ঠিক রেখেছেন পিকার্ড৷ আর সে দলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক নভোচারী ক্লদ নিকোলিয়ার৷ এই প্লেনটির বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এর ব্যাটারি দিনে সূর্য থেকে শক্তি সঞ্চয় করে রাখবে, রাতে তা ব্যবহার করবে৷ পুরো প্লেনটি ওজনে খুব বেশি নয়৷ একটি গাড়ির সমান৷ তবে এর ডানাগুলো এয়ারবাসের ডানার মতো৷ গত বৃহস্পতিবারই এর ওড়ার কথা ছিলো, তবে বৈদ্যুতিক ত্রুটির কারণে উড্ডয়ন পেছানো হয়৷ তবে এখন সব ঠিকঠাক আছে এবং রাতের আকাশে বিমানটির উড়তে কোনো সমস্যা হবে না বলে মনে করছেন নিকোলিয়ার৷
পিকার্ডের লক্ষ্য, আগামী দিনে সোলার প্লেনই পথ দেখাবে৷ দিনে ওড়া নিয়ে কারো আর সন্দেহ নেই৷ তবে রাতে কী হয়, তা দেখার অপেক্ষায় সবাই৷ এজন্য অপেক্ষা করতে হবে বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত৷ কারণ তখনই পেয়ার্নে ঘাঁটিতে পুনরায় ফিরবে প্লেনটি৷
প্রতিবেদন: মনিরুল ইসলাম
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক