রানা প্লাজার ১১২ লাশের কি হবে?
২১ মার্চ ২০১৪
জাতীয় ফরেনসিক ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরির প্রধান অধ্যাপক ড. শরীফ আখতারুজ্জামান জানান, রানা প্লাজা ধসে নিহত অজ্ঞাত ৩২২টি মৃতদেহ ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়৷ লাশের ডিএনএ প্রোফাইল তৈরির পর লাশ শনাক্ত করতে ৫৪১টি পরিবার থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়৷ তাদের সঙ্গে মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ২০০টি লাশ শনাক্ত করা গেছে৷ কিন্তু ১০ জনের ডিএনএ একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে মিলে যাওয়ায়, তাঁদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না৷
তিনি জানান, ‘‘রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় নিহত ১,১৩৪ জনের মধ্যে ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়াই ৮০০টির বেশি লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়৷ এ সব পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অশনাক্ত লাশগুলোর ডিএনএ মিলে যেতে পারে৷ সরকার যদি আগ্রহী হয়, তবে তাদেরও ডিএনএ পরীক্ষা করাতে পারে৷''
এই পরিস্থতিতে ড. শরীফ পরবর্তী যে কোনো দুর্ঘটনার পর সঙ্গে সঙ্গে সেখানে অস্থায়ী মর্গ তৈরি করে নিহত ব্যক্তিদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করার পর লাশ হস্তান্তরের পরামর্শ দেন৷
এ নিয়ে ঢাকার জেলা প্রশাসক হারুন অর রশীদ ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘যাঁদের লাশ ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া আত্মীয়স্বজনকে দেয়া হয়েছে, তাঁদের ডিএনএ পরীক্ষা এখন করা প্রায় অসম্ভব ব্যাপার৷ শুধু তাঁদের আত্মীস্বজনই নয়, নিহতদেরও ডিএনএ পরীক্ষা করতে হবে৷ কারণ যাঁদের লাশ দেয়া হয়েছে, লাশটি যে তাঁদের স্বজনদের নয় – তা দুই দিক থেকেই ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হতে হবে৷ যা একটি জটিল এবং সময়সাপেক্ষ ব্যাপার৷ এছাড়া যাঁরা লাশ নিয়ে গেছেন, তাঁদের পরিবারের সদস্যরা এখন ডিএনএ পরীক্ষা করাতে রাজী হবেন বলে মনে হয় না৷'' ঢাকার জেলা প্রশাসক বলেন, ‘‘যে ৮০০টি লাশ ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া হস্তান্তর করা হয়েছে, তা যে সব ঠিক আছে তা নিশ্চিত করে বলা যায় না৷ কিছু ভুল হতেই পারে৷ তবে এ নিয়ে এখন আর কিছু করার নেই৷''
হারুন অর রশীদ জানান, ‘‘ডিএনএ পরীক্ষায় যাঁদের লাশ শনাক্ত হয়েছে, তাঁদের পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে৷ শুধু তাই নয়, জুড়াইনের কবরস্থানে গিয়ে কবর চিহ্নিত করেও দেয়া হয়েছে৷''
তাঁর কথায়, ‘‘ডিএনএ পরীক্ষায় তারা ৩০ লাখ টাকা দিয়েছেন ডিএনএ ল্যাবকে৷ এরপর অবশ্য নতুন করে ডিএনএ পরীক্ষার ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ নেই৷ তবে সরকার সিদ্ধান্ত নিলে আলাদা কথা৷''