‘রামপালে ক্ষতির বিষয়ে নিশ্চিত নই'
১৮ নভেম্বর ২০১৭জার্মানির বন শহরে জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নিতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশ থেকেও এসেছেন সরকার, এনজিও এবং গণমাধ্যমের বেশ কয়েকজন প্রতিনিধি৷ তাদের একজন মুকিত মজুমদার বাবু৷ বাংলাদেশের অন্যতম বেসরকারি টেলিভিশন কেন্দ্র ‘চ্যানেল আইতে' ‘প্রকৃতি ও জীবন' নামের একটি পরিবেশ বিষয়ক অনুষ্ঠানের পরিচালক তিনি৷
জলবায়ু সম্মেলন কপ২৩-তে পর্যবেক্ষক হিসেবে অংশ নিচ্ছেন তিনি৷ বিগত বছরগুলোতে একাধিকবার এই সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন তিনি৷ এই বিষয়ে অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘মারাকাস এবং বনে উৎসাহ উদ্দীপনা কম মনে হচ্ছে৷ প্যারিস এগ্রিমেন্টের পর ট্রাম্পের মন্তব্যের কারণে সম্মেলনটা হয়ত একটু নিষ্প্রভ হয়েছে৷''
মজুমদার অবশ্য আশাবাদী৷ তিনি মনে করেন, রাষ্ট্র হিসেবে অ্যামেরিকা কপে না থাকলেও আমেরিকার জনগণ যে আছে সেটা ক্রমশ পরিষ্কার হয়ে উঠছে৷ বনেও জলবায়ু সম্মেলনেও দেশটির একটি অনানুষ্ঠানিক প্যাভেলিয়ন রয়েছে৷
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের পর উচ্চশিক্ষার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইংল্যান্ডে কয়েকবছর কাটিয়েছেন মুকিত মজুমদার বাবু৷ বাংলাদেশি এবং পশ্চিমাদের মধ্যে পরিবেশ বিষয়ক সচেতনতার মধ্যে ব্যবধানটা পরিষ্কারভাবেই বোঝেন তিনি৷ এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘পশ্চিমা বিশ্বের আমাদের চেয়ে সচেতনতা বেশি৷ আমাদের দেশে আসলে দরিদ্রতার কারণে বিষয়টি ভিন্ন৷ মানুষ জীবনধারনের জন্য অনেক কিছু করছে৷ পুকুর ভরে ফেলছে, গাছ কেটে ফেলছে৷ আমরা যদি দরিদ্রতার হার কমিয়ে আনতে পারি তাহলে হয়ত সমস্যা কম হবে৷''
প্রকৃতিপ্রেমী হিসেবে পরিচিত মুকিত মজুমদারের কাছে বাংলাদেশের রামপালে ভারতের সহায়তায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে চলমান বিতর্কের বিষয়েও জানতে চাওয়া হয়৷ পরিবেশবিদরা মনে করেন, এই বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি হলে সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাবে যা পরিবেশের জন্য হবে বিপর্যয়কর৷ তবে মজুমদার এই বিষয়ে নিশ্চিত নন বলে জানিয়েছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘রামপালের বিষয়টি এখনো আমরা নিশ্চিত নই যে কী ধরনের ক্ষতি হবে কিংবা ক্ষতি হতে পারে৷ এটা নিয়ে এখনো নিশ্চিত কোন সিদ্ধান্তে আসা যায়নি এবং ইউনেস্কো আমি বলবো যে আগে যেধরনের সোচ্চার ছিল, এখন সেই ধরনের সোচ্চার নেই এ ব্যাপারে৷ সুতরাং আমাদের একটু অপেক্ষা করতে হবে এটা জানতে যে আসলে কী হবে৷''
‘‘তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি যে, যেটা নিয়ে সন্দেহ থাকে, সেটা থেকে দূরে থাকাটাই ভালো,'' যোগ করেন তিনি৷ পাশাপাশি রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করায় ভবিষ্যতে বড় বিপর্যয়ের আশঙ্কা নেই বলেও মনে করেন এই টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব৷
ডয়চে ভেলের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎকারটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে৷
আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷