‘রামলালার নিষেধ’, অযোধ্যা থেকে লড়বেন না যোগী
২ ফেব্রুয়ারি ২০২২১০ ফেব্রুয়ারি সাত পর্বে শুরু হবে উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচন। এবারের উত্তরপ্রদেশে ভোটের হাওয়া অনেকটাই ঘুরপাক খাচ্ছে ধর্মের রাজনীতিকে কেন্দ্র করে। অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের জায়গায় রামমন্দির নির্মাণ শুরু হওয়ার পর এই প্রথম বিধানসভা নির্বাচন ভারতের অন্যতম বৃহত্তম রাজ্যের। শুধু অযোধ্যাই নয়, বারাণসী, মথুরার মন্দির-মসজিদ বিতর্কও এবারের ভোটে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। স্বভাবতই মনে করা হয়েছিল, এই পরিস্থিতিতে উত্তরপ্রদেশ বিজেপির কাণ্ডারি তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ অযোধ্যা থেকে লড়বেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত তিনি সেখান থেকে লড়ছেন না। দাঁড়াবেন তার পুরনো জায়গা গোরক্ষপুর থেকেই। গোরক্ষপুর আর্বান আসনে বিজেপির প্রার্থী তিনি।
কেন অযোধ্যা নয়
বিজেপির অন্দরের বার্তা, শেষপর্যন্ত অযোধ্যা থেকে লড়তে চেয়েছিলেন যোগী। বিজেপির এক কেন্দ্রীয় নেতা ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘‘ঠিক যে কারণে নিজের রাজ্য গুজরাত ছেড়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কাশী থেকে লোকসভা নির্বাচনে লড়েন, ঠিক সে কারণেই নিজের গোরক্ষপুর ছেড়ে অযোধ্যা থেকে লড়তে চেয়েছিলেন যোগী। মেরুকরণের ভোটে যোগীর অযোধ্যা থেকে দাঁড়ানো অবশ্যই একটি স্টেটমেন্ট হতো।’’
বিজেপির আরেক কেন্দ্রীয় নেতা ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, যোগী চাইলেও বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যোগীকে অযোধ্যা থেকে লড়তে দিতে চাননি। তার সবচেয়ে বড় কারণ, অযোধ্যা আসনটি যোগীর জন্য কতটা নিরাপদ, তা নিয়ে বিজেপি থিংকট্যাঙ্কের যথেষ্ট সংশয় আছে। সে কারণেই তাকে গোরক্ষপুর থেকে লড়ার পরামর্শই দেওয়া হয়েছে। বস্তুত, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের একাংশের দাবি, পরামর্শ নয়, যোগীকে কার্যত এই নির্দেশই দেওয়া হয়েছে।
প্রকাশ্যে অবশ্য এবিষয়ে কেউ কোনো কথা বলছেন না। বরং আসরে নামানো হয়েছে অযোধ্যা মন্দিরের প্রধান পুরোহিত ৮৪ বছরের আচার্য সত্যেন্দ্র দাসকে। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, যোগী আদিত্যনাথের অযোধ্যা থেকে দাঁড়ানো উচিত হবে কি না, এ বিষয়ে ‘রামলালা’র কাছে জানতে চেয়েছিলেন তিনি। রামলালা নির্দেশ দিয়েছেন, যোগীর সেখান থেকে দাঁড়ানো উচিত হবে না। উল্লেখ্য, রামলালা অযোধ্যা মন্দিরের মূল বিগ্রহ।
আচার্যের দাবি, মন্দির তৈরির জন্য বেশ কিছু অযোধ্যাবাসীর জমি নেওয়া হয়েছে। ফলে সকলে যোগীকে ভোট দিতে না-ও পারেন। সে কারণেই তিনিও যোগীকে অযোধ্যায় না দাঁড়ানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, অযোধ্যার মুসলিম সম্প্রদায়ও যে বিজেপিকে ভোট দেবে না, তা মোটামুটি স্পষ্ট। ফলে সেখান থেকে মুখ্যমন্ত্রীর ভোটে দাঁড়ানো মোটেই ঠিক হতো না। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, যে ভাষায় অযোধ্যার প্রধান পুরোহিত বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করেছেন তা অভূতপূর্ব। এবং এই ব্যাখ্যা থেকেই স্পষ্ট, শুধু অযোধ্যা নয়, গোটা উত্তরপ্রদেশেই বিজেপির লড়াই এবার খুব সহজ নয়।